shono
Advertisement

‘মরার আগে মরব কেন?’, করোনামুক্তির পর লড়াইয়ের প্রেরণা জোগালেন অশোক ভট্টাচার্য

চিকিৎসা, স্বাস্থ্যকর্মীদের আন্তরিকতা ও সাহসের অকুণ্ঠ প্রশংসা সিপিএম বিধায়কের। The post ‘মরার আগে মরব কেন?’, করোনামুক্তির পর লড়াইয়ের প্রেরণা জোগালেন অশোক ভট্টাচার্য appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 02:40 PM Jul 05, 2020Updated: 02:44 PM Jul 05, 2020

বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: সপ্তাহ তিনেক আগে করোনায় (Coronavirus) আক্রান্ত হয়েছিলেন শিলিগুড়ির পুরনিগমের প্রশাসক তথা বর্ষীয়ান বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য। তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করিয়ে যথাযথ চিকিৎসার পর সম্প্রতি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তাঁর শেষ করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ। পুরোপুরি সুস্থ হয়ে এবার বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় তিনি। তারই মাঝে রাজ্যবাসীর উদ্দেশে বার্তা দিয়ে শোনালেন করোনাকালে তাঁর নিজের অভিজ্ঞতার কথা। অকুণ্ঠ প্রশংসা করলেন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের। তুলে ধরলেন রাজ্যে করোনা চিকিৎসার দুর্বল দিকগুলিও।

Advertisement

এক বার্তায় অশোক ভট্টাচার্য লিখেছেন, “আমার করোনা আক্রমণের প্রায় ২০ দিন হলো। কয়েকদিন আগে আমার পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। এখন সুস্থ বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় রয়েছি। COVID নিয়ে অনেক রকম প্রচারের কথা শুনে আসছি। আমার কিছু বাস্তব অভিজ্ঞতা হল, এই ক’দিনে। প্রথম অভিজ্ঞতা হল, করোনা হলেই মৃত্যু নয়। মরার আগেই মরবো কেন? লড়াই করার মানসিকতা খুব গুরুত্বপূর্ণ।”

[আরও পড়ুন: প্রেম প্রস্তাবে ‘না’, মায়ের পাশে ঘুমন্ত অবস্থায় কলেজছাত্রীকে খুন করল যুবক]

তাঁর মতে, যদি দ্রুত রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা শুরু করা যায়, তাহলে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অনেকটা অনুপ্রেরণা পাওয়া যায়। কিন্তু রাজ্যে সেই কাজ ঠিকমতো হচ্ছে না বলে অভিযোগ করে তিনি বার্তায় বলেন, “আমার ক্ষেত্রেও বিলম্ব হয়েছিল। অনেক করোনা রোগী সেভাবে কোনও শারীরিক অসুবিধে বুঝতেই পারেন না। অনেক ডাক্তার এই সমস্ত রোগীদের এড়িয়ে যান। তখন তাঁকে একের পর এক ডাক্তারের কাছে ছুটে বেড়াতে হয়। এই সময়ে রোগীর যা ক্ষতি হওয়ার, হয়ে যায়। বিশেষ করে তাঁর রক্তে অক্সিজেন কমে যায়। অনেক ক্ষেত্রে এই অবস্থায় রোগীর মৃত্যু হচ্ছে। “

বয়স্ক এবং শিশুদের জন্য করোনা সংক্রমণ বেশি বিপজ্জনক বলে শোনা গিয়েছে চিকিৎসকদের কাছে। তবে শিলিগুড়িতে তিরিশ বছরের নিচে ব্যক্তিদের করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় বোঝা যাচ্ছে, ঝুঁকি আছে সকলের ক্ষেত্রেই। এই সতর্কবার্তা দেওয়ার পর অন্য একটি দিকে আলোকপাত করেছেন অশোক ভট্টাচার্য (Ashok Bhattacharya)। তিনি বলেন, “আমার আরেকটি বিষয় মনে হয়েছে। তা হল, একটু আন্তরিকতার সাথে চিকিৎসা ও চিকিৎসাকর্মীদের সাহসিকতার সঙ্গে সেবা করা। আমি দেখেছি এঁদের ডেডিকেশন ও সাহস। এঁদের জন্যেই আমার মতো অনেকে প্রাণ ফিরে পাচ্ছে। কিন্তু ওঁরাই বলছিল, সমাজে যে সম্মান বা মর্যাদা পাওয়া উচিত, তা কিন্তু পায় না। তাঁদের সবসময় থাকতে হয় আতঙ্কের মধ্যে। এখানেই পশ্চিমবঙ্গের মতো একটি এগিয়ে চলা রাজ্যের লজ্জা।”

[আরও পড়ুন: করোনার গোষ্ঠী সংক্রমণ রুখতে ‘সেফ হোম’ বেশ উপযোগী, বাংলার প্রশংসায় কেন্দ্র]

করোনা যুদ্ধে শুধুমাত্র ব্যক্তিগত অনুভূতির কথাই তিনি তুলে ধরেননি। আশেপাশের অভিজ্ঞতাও প্রকাশ করেছেন সিপিএমের বর্ষীয়ান বিধায়ক অশোকবাবু। বলেছেন, ”গত দু’মাসে আমি এবং আমার সহকর্মীরা বহু আক্রান্ত রোগীদের কাছে গিয়েছি। তার কারণ, এঁদের একটু সাহস দেওয়া। আর তরুণ প্রজন্ম, যারা সাহস নিয়ে এঁদের খাবারের ব্যবস্থা করেছে, তাঁদের কিছুটা উৎসাহিত করা। যেদিন আমার জ্বর হল, সেদিনও তিনটি স্থানে গেছিলাম। তবে ফলওয়ালার সঙ্গে কথা বলে দেখেছি, ওদের মধ্যে কখনও মৃত্যুভয় ছিল না। সত্যি কথা বলতে কি, এই ফলওয়ালারাই আমাকে এই বাঁচার লড়াইয়ে সাহস দিয়েছে।”

সতর্কতা ও সাবধানতার কোনও বিকল্প নেই বলে মনে করেন সদ্য করোনামুক্ত হয়ে ফেরা অশোকবাবু। এত বাধার মধ্যেও এই রোগ মানেই মৃত্যু নয়, এরও চিকিৎসা আছে, ফ্রন্টলাইন এ থেকেও সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিয়ে তা সম্ভব, তা তিনি অনুভব করেছেন।

The post ‘মরার আগে মরব কেন?’, করোনামুক্তির পর লড়াইয়ের প্রেরণা জোগালেন অশোক ভট্টাচার্য appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement