সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নামের গায়ে মুসলিম-মুসলিম গন্ধ। হিন্দুত্ব যাঁদের হাতিয়ার, তাঁদের নাকে এমন গন্ধ যে বড়ই অস্বস্তিদায়ক তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই নামের গায়ে হিন্দুত্বের প্রলেপ দিয়ে একযোগে রাজ্যের ৪ জেলার ১১টি জায়গার নামে কাঁচি চালাল বিজেপি শাসিত উত্তরাখণ্ড সরকার। পুষ্কর সিং ধামীর উদ্যোগে ঔরঙ্গজেবপুর হতে চলেছে শিবাজীনগর, গাজিওয়ালি বদলে হচ্ছে আর্যনগর। মুখ্যমন্ত্রী ধামীর এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়েছে বিরোধী শিবির।
বিরোধী এই ইস্যুতে সরব হলেও তাঁদের গুরুত্ব দিতে নারাজ উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ধামী। তিনি জানান, ''রাজ্যের জনগণের ভাবাবেগ, ভারতীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই এই নামবদলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভারতের সংস্কৃতি ও তা সংরক্ষণে যে সব মহাপুরুষরা অসামান্য অবদান রেখেছিলেন তাদের নামেই হতে চলেছে এইসব জায়গার নাম।" যে সব জায়গার নাম পরিবর্তন করা হচ্ছে সেগুলি হল, হরিদ্বারের ঔরঙ্গজেবপুর বদলে হবে শিবাজীনগর, গাজিওয়ালি বদলে আর্যনগর, চাঁদপুর হবে জ্যোতিবা ফুলে নগর, মহম্মদপুর জাট থেকে মোহনপুর জাট, খানপুর থেকে শ্রী কৃষ্ণপুর, খানপুর কুরসালি থেকে আম্বেদকর নগর, ইদ্রিশপুর থেকে নন্দপুর এবং আকবরপুর বদলে হবে নন্দপুর। এর পাশাপাশি দেরাদুন জেলার মিয়াঁওয়ালা বদলে হচ্ছে রামজিওয়ালা, পিরওয়ালা থেকে কেশরি নগর, চাঁদপুর খুর্দ বদলে হবে পৃথ্বীরাজ নগর। এর পাশাপাশি নৈনিতাল ও উধম সিং নগর জেলার একাধিক জায়গার নাম বদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছে বিরোধী শিবির। নামবদলকে কটাক্ষ করে সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব বলেন, 'এবার তাহলে উত্তরাখণ্ডের নাম বদলে উত্তরপ্রদেশ-২ করে দিন।' এই ঘটনায় কংগ্রেস সাংসদ ইমরান মাসুদ ধামি সরকারকে তোপ দেগে বলেন, "উত্তরাখণ্ডের হাল অত্যন্ত খারাপ। এই বিজেপি নেতারা নাম পরিবর্তনের রাজনীতির বাইরে আর কিছুই করে না। রাজ্যে দুর্নীতি চরম আকার নিয়েছে, যুবসমাজ কাজের জন্য রাজ্য ছেড়ে ভিন রাজ্যে চলে যাচ্ছে। আর এরা নাম বদলের রাজনীতি করে যাচ্ছে।''
উল্লেখ্য, দেশের বিভিন্ন জায়গার নাম বদলের এই ধারা শুরু হয়েছিল উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের হাত ধরে। রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর মুসলিম নাম থাকা একের পর এক জায়গার নাম বদলে বেদ, পুরানের মতো ধর্মগ্রন্থ থেকে নাম বেছে নেন যোগী। এলাহাবাদ হয়ে ওঠে প্রয়াগরাজ। মুঘলসরাই ও ফৈজাবাদের নাম পালটে হয় যথাক্রমে দীনদয়াল উপাধ্যায় নগর ও অযোধ্যা। যোগীর পথে হেঁটে কেন্দ্র সরকারও রাষ্ট্রপতি ভবনের মুঘল গার্ডেনের নাম বদলে করে অমৃত গার্ডেন।