shono
Advertisement

১০ বছর আগে নাগরিকত্ব প্রমাণের চিঠি পেয়ে আত্মহত্যা করেন ছেলে, এবার একই চিঠি পেলেন মা

আতঙ্কে দিন কাটছে অশীতিপর অকোল রানির।
Posted: 01:34 PM Mar 06, 2022Updated: 10:02 PM Mar 06, 2022

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নাগরিকত্ব (Citizenship) প্রমাণের চিঠি পেয়ে আত্মহত্যা করেছিল ছেলে, এবার মায়ের কাছেও এল একই নোটিস। ছেলের মতোই ভয় পাচ্ছেন অশীতিপর বৃদ্ধা অকোল রানি। তাঁর বাড়ি অসমের (Assam) সীমান্তবর্তী অঞ্চলে, যদি বাংলাদেশি বলে তাড়িয়ে দেওয়া হয়!

Advertisement

কাছাড় জেলার কাটগোরা বিধানসভা কেন্দ্রের হরিতিকর পার্ট ১-এর বাসিন্দা অকোল বালা রানি (Akol Bala Rani Namasudra)। মাস খানেক আগেই ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের (Foreigners Tribunal) নোটিস পেয়েছেন তিনি। যত দ্রুত সম্ভব তাঁকে ভারতের নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে বলা হয়েছে। এই বিষয়ে আদালতে হাজিরা দিতেও বলা হয়েছে তাঁকে। ওই নোটিসে স্পষ্ট করা হয়েছে, ৮০ বছরের অকোল রানিকে অভিবাসী হিসেবে সন্দেহ করা হচ্ছে। এর পর থেকেই রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে বৃদ্ধার।

[আরও পড়ুন: অমৃতসরে BSF মেসের ভিতরে এলোপাথাড়ি গুলি কনস্টেবলের, মৃত অন্তত ৪]

যদিও অকোলের স্বামীর নামে ভারত সরকারের দেওয়া ১৯৫৬ সালের নাগরিকত্বের কার্ড রয়েছে। তাতে অবশ্যি কী! কারণ এর পরেও তো অকোলের ছেলে অর্জুন নমশূদ্রকে ২০১২ সালে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের তরফে নোটিস পাঠানো হয়। যার পর ভয়ে, চিন্তায় অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন অর্জুন এবং আত্মহত্যা করেন। যদিও অর্জুনের মৃত্যুর পর পরিবার আদালতের দ্বারস্থ হলে ২০১৩ সালে তাঁকে ভারতীয় বলে ঘোষণা করে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল। 

অর্থাৎ যা দাঁড়াল, তা হল অকোল রানির পরিবারের সকলেই ভারতীয় হলেও তিনি ভারতীয় কিনা তা নিয়ে সন্দেহ দানা বেঁধেছে প্রশাসনের মনে! পরিবারটিকে নিয়ে রাজনীতিও কম হয়নি। ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে কাছাড়ে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই সময় তাঁর মুখে শোনা গিয়েছিল অর্জুনের নাম। মোদি বলেছিলেন, ‘‘অর্জুন নমশূদ্র আমার ভাই। তাঁর মৃত্যুতে আমি ব্যথিত।” মোদি আশ্বাস দিয়েছিলেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে কোনও অর্জুনকে আর ডিটেনশন ক্যাম্পে যেতে হবে না।

[আরও পড়ুন: ‘এই দুরবস্থার দায় কেন্দ্রেরই’, মোদি সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছেন ইউক্রেন ফেরত বাঙালিরা]

যদিও অর্জুনের মাকে সেই একই অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে। ৮০ বছরের বৃদ্ধাকেও নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হবে। লড়তে হবে আইনি লড়াই। আশার কথা, অকোল রানিকে সাহায্য করছেন শিলচরের অভিজ্ঞ আইনজীবী অনিল দে। গোটা বিষয়ে তিনি অবাক। অর্জুনের মৃত্যুর শংসাপত্রে তাঁকে ভারতীয় বলে ঘোষণা করার পরে কেন তাঁর মা-কে নোটিশ দেওয়া হচ্ছে বুঝতে পারছেন না অনিলবাবু। আর অশীতিপর বৃদ্ধা বলছেন, ‘‘আমরা সীমান্তের কাছে বাস করি। যে কোনও সময় ভারত থেকে তাড়িয়ে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিতে পারে। এই আতঙ্কে ছেলে আত্মহত্যা করেছিল। দশ বছর হয়ে গেল ছেলেকে হারিয়েছি। আর কিছু হারানোর নেই।’’

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement