সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এবার তাঁর রাজ্যের সংখ্যালঘুদের চিহ্নিতকরণে উদ্যোগী হলেন হিমন্ত বিশ্ব শর্মা (Himanta Biswa Sarma)। সংখ্যালঘু শংসাপত্র (Minority Certificate) দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল অসম (Assam) সরকার। সে রাজ্যের মুসলিম, খ্রিস্টান, জৈন, শিখ, বৌদ্ধ ও পার্সিদের সংখ্যালঘু শংসাপত্র দেওয়া হবে। রবিবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন অসমের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেশব মহন্ত।
ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে শংসাপত্র দেওয়ার ঘটনা নজিরবিহীন। এই প্রসঙ্গে অসমের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেশব মহন্তের দাবি, “এর ফলে সহজে সংখ্যালঘুদের চিহ্নিত করা যাবে। তাদের জন্য একাধিক সরকারি কল্যাণমূলক প্রকল্প রয়েছে, আলাদা দপ্তর রয়েছে। কিন্তু কারা সংখ্যালঘু? এবার চিহ্নিত করে সরকারি সাহায্য পৌঁছে দেওয়া যাবে।” মহন্ত আরও দাবি করেন, “অসম সংখ্যালঘু উন্নয়ন পর্ষদের আবেদনের ভিত্তিতেই এই শংসাপত্র তৈরি করছে রাজ্য সরকার।” তবে কীভাবে সংখ্যালঘু বাছাই করা হবে তা চূড়ান্ত হয়নি বলে জানান মন্ত্রী।
[আরও পড়ুন: ‘বাড়িতে বসে রান্না করুন’ মন্তব্যের জের, বিতর্কের মুখে ক্ষমা চাইলেন মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতা]
রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়ন পর্ষদ সভাপতি হাবিব মহম্মদ চৌধুরী এই সরকারি সিদ্ধান্তে খুশি। তাঁর মতে এর ফলে ‘উপকৃত’ হবেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষরা। তিনি বলেন, “এটা আমাদের বহুদিনের দাবি ছিল। সরকারি ভাতা, ছাত্রদের অনুদান পেতে অসুবিধা হচ্ছিল। বহু ছাত্র সংখ্যালঘু চিহ্নিতকরণের অসুবিধার কারণে অনুদান পাননি। এবার সেই সমস্যার সমাধান হবে।”
উল্লেখ্য, অসমের হাত ধরেই দেশে ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে শংসাপত্র তৈরি হল। বর্তমানে কেবলমাত্র তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং অন্যান্য অনুন্নত শ্রেণিকে শংসাপত্র দেওয়া হয়ে থাকে। যদিও সংখ্যালঘুদের জন্য সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রের বহু কল্যাণমূলক প্রকল্প রয়েছে। তার সুবিধা পেতে আলাদা করে ধর্মীয় শংসাপত্র লাগে না। বিরোধীদের বক্তব্য, সংখ্যালঘুদের চিহ্নিত করাই বিজেপি সরকারের উদ্দেশ্য। অনেকের মতে, এর ফলে বিভাজন বাড়বে অসমিয়া মুসলিম ও বাঙালি মুসলিমদের মধ্যে। ওই রাজ্যে বিজেপি দীর্ঘদিন ধরে মুসলিমদের বাঙালি ও অসমিয়াতে ভাগ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পরিচয়পত্রের কল্যাণে সেই উদ্দেশ্য এবার সফল হতে পারে ।
[আরও পড়ুন: বড়সড় স্বস্তি, সীতার পাতাল প্রবেশ নিয়ে মন্তব্যে ত্রিপুরা আদালতে জামিন পেলেন কুণাল ঘোষ]
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী রাজ্যের মোট জনসংখ্যার ৬১.৪৭ শতাংশ হিন্দু, ৩৪.২২ শতাংশ মুসলিম, ৩.৭৪ শতাংশ খ্রিস্টান। বৌদ্ধ, শিখ ও জৈন সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা ১ শতাশের কম।