সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নুন আনতে পান্তা ফুরনোর সংসার। সন্তান-স্ত্রীর জন্য খাবার জোগাড়ের বন্দোবস্ত তো দূর, নিজের অন্নের সংস্থানও করতে পারে না সে। অথচ মাদক (Drug) লাগবেই প্রতিদিন। স্ত্রীর গয়নাগাটি বিক্রি করে প্রথমে টাকা জোগাড় করা শুরু হয়েছিল। সেগুলি সব শেষ। ঘটিবাটিও বিক্রি হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। তাই নজর পড়ে মাত্র আড়াই বছর বয়সি সন্তানের দিকে। তাকে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে মাদক কেনার টাকা জোগাড় করল বাবা। এমন অমানবিক কাজের দায়ে অসমের (Assam) মোরিগাঁওয়ের লহরিঘাটের বাসিন্দা ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রুকমিনা বেগমের সঙ্গে বেশ কয়েক বছর আগে বিয়ে হয়েছিল আমিনুল ইসলামের। বিয়ের পর থেকে রুকমিনা দেখে আসছেন তাঁর স্বামী মাদকের নেশায় বুঁদ। অর্থ উপার্জনের তেমন তাগিদ নেই। ভেবেছিলেন সন্তানের মুখ দেখে হয়তো বদলে যাবে। কিন্তু ভাবনাই সার। কিছুতেই বদলাননি আমিনুল। তাই কয়েকমাস আগে রেগেমেগে সন্তান কোলে নিয়ে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়িতে চলে যান রুকমিনা। যোগাযোগও রাখতেন না আমিনুল। একদিন আচমকাই শ্বশুরবাড়িতে যায় সে। ছেলের আধার কার্ড (Aadhaar Card) সংক্রান্ত কিছু কাজ আছে বলেই জানায়। আমিনুলকে অবিশ্বাস করতে পারেননি রুকমিনা। তাই ছেলেকে তার কোলে দিয়ে দেন। আমিনুল ছেলে নিয়ে চলে আসে।
[আরও পড়ুন: নরেন্দ্র মোদিকে সরিয়ে মোতেরা স্টেডিয়াম হোক নীরজ চোপড়ার নামে, দাবি TMC’র]
তারপর দিনের পর দিন কেটে যায়। আমিনুল কিংবা তার ছেলের কোনও খোঁজ পাচ্ছিলেন না রুকমিনা। সন্দেহ হয় তাঁর। বাধ্য হয়ে গত ৫ আগস্ট পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি। খুলে বলেন সব কথা। তদন্তে নামে পুলিশ। গোরইমারি এলাকায় সন্তানকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে বলেই জানতে পারেন তদন্তকারীরা। জানা যায়, ওই এলাকার বাসিন্দা সাজিদা বেগমের কাছে ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে নিজের আড়াই বছরের সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছে আমিনুল। পুলিশ শিশুসন্তানকে উদ্ধার করে। ওই মহিলা এবং শিশুর বাবাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, দেহ ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত আমিনুল। তার কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ওই মহিলা।