ধীমান রায়, কাটোয়া: প্রায় একই সময়ে আক্রান্ত হলেন কাটোয়া কলেজের এক অধ্যাপক-অধ্যাপিকা। শনিবার বিকেলে জোড়া ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। আক্রান্ত শিক্ষকের নাম অর্পণ দাস। তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। তবে আক্রান্ত শিক্ষিকা চন্দ্রানী দাস এখন কাটোয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কাটোয়া কলেজের অধ্যক্ষ নির্মলেন্দু সরকার বলেন," আমি ঘটনার কথা শুনেছি। দুটি ঘটনাই নিন্দাজনক। তবে কোনও ঘটনাই কলেজের মধ্যে ঘটেনি। কাটোয়া শহর জুড়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে লাগানো অনেক সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। আমি চাই পুলিশ প্রসাশন বিষয়টি অনুসন্ধান করে যথাযথ ব্যবস্থা নিক।"
চন্দ্রাণী দাস কাটোয়া কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের শিক্ষিকা। কাটোয়া শহরেই তাঁর বাড়ি। স্কুটিতে যাতায়াত করেন। হাসপাতালের বেডে শুয়ে চন্দ্রাণী বলেন, "দুটোর পর কলেজ থেকে বাড়ি আসার পথে আমার স্কুটি খারাপ হয়ে যায়। পাশের একটি গ্যারাজে তা সারাতে যাই। তখন আমাকে প্রায় ৪০-৪৫ জন ঘিরে ধরে মারধর শুরু করে। চড়থাপ্পর, কিল ঘুঁষি মারে। আমার চোখেও আঘাত লেগেছে। " ঘটনার পর চন্দ্রানীদেবী কাটোয়া হাসপাতালে আসেন। তাঁর চিকিৎসা চলছে।
কিন্তু কেন তাঁর উপর হামলা? আক্রান্ত শিক্ষিকা বলেন, "আমি বছর চারেক আগে আমাদের কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রধান নির্ভিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একটি মামলা করি। সেই মামলা এখনও বিচারাধীন। মাঝে মধ্যেই নির্ভিক মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছিলেন। আমার ধারনা উনিই লোকজন দিয়ে আমার উপর হামলা করিয়েছেন।"
যদিও নির্ভিক বলেন, "চারবছর আগে চন্দ্রানী আমার বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা অভিযোগ করেছিলেন। সেগুলির মধ্যে দুই একটি এখনও বিচারাধীন। তখন থেকেই আমার সঙ্গে ওনার কার্যত কথাবার্তা বন্ধ। তাহলে হুমকি দিলাম কখন? হুমকি দিলে প্রমাণ তো থাকবে।"
পাশাপাশি নির্ভিকবাবু বলেন," কিছুদিন আগে কলেজের কিছু ছাত্রছাত্রী ওনার এবং আরও দুই শিক্ষক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলেন। মনে হয় সেই রাগেই উনি আমার উপর ফের মিথ্যা দোষারোপ করছেন।"
এদিন শুধুমাত্র চন্দ্রাণী দাসের উপরেই হামলা নয়, কাটোয়া কলেজের বিএড বিভাগের শিক্ষক অর্পন দাসের উপরেও হামলার ঘটনা ঘটেছে। অর্পনবাবু ছুটির পর বাড়ি ফেরার সময় কাটোয়া স্টেশন রোডের কাছে টোটো থেকে নামতেই তার উপর ৬-৭ জন দুষ্কৃতী হামলা করে বলে অভিযোগ। অর্পন দাস বলেন," ওরা কারা? কেন হামলা করল? কিছুই বুঝতে পারছি না। আতঙ্কে রয়েছি।" অর্পনবাবু পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, চন্দ্রাণী দাসের উপর বেশকিছু মহিলা চড়াও হয়ে মারধর করছে এমন প্রমাণ সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে পুলিশের হাতে এসেছে। সূত্রের খবর ওই ঘটনায় হামলাকারী মহিলারা দাবি করেছেন, "চন্দ্রানী দাস নামে ওই মহিলা তাঁদের উদ্দেশ্য আপত্তিকর ভাষায় গালিগালাজ করেছিলেন। তাই ক্ষোভ বিক্ষোভ সৃষ্টি হয়।" কাটোয়া থানার আই সি তীর্থেন্দু গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আক্রান্ত শিক্ষিকা অভিযোগ দায়ের করলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।