সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লাদাখে সীমান্ত সংঘাতের আবহে চিনকে চাপে রাখতে এবার মালাবার নৌ মহড়ায় ভারতের সঙ্গে যোগ দিতে চলেছে অস্ট্রেলিয়া। একই সঙ্গে প্রতি বছরের মতো মহড়ায় থাকবে আমেরিকা এবং জাপানের নৌবাহিনী। সোমবার ভারতের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে।
সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে নভেম্বরের শেষ দিকে, ভারত, আমেরিকা এবং জাপানের সঙ্গে বঙ্গোপসাগরে ও আরব সাগরে নৌ মহড়ায় অংশ নিতে দেখা যাবে অস্ট্রেলিয়াকে। অর্থাৎ পুরো ‘কোয়াড’ বা ‘কোয়াড্রিল্যাটারাল সিকিউরিটি ডায়লগ’—এর অংশ গ্রহণ হবে এই মহড়ায়। উল্লেখ্য, ২০০৭-এ এই মহড়ায় অস্ট্রেলিয়া অংশ নিয়েছিল। সে বছর অংশ নেয় সিঙ্গাপুরও। কিন্তু তাতে ক্ষুব্ধ হয় চিন। তাদের ক্ষোভকে মর্যাদা দিয়ে ভারত এই মহড়ায় অস্ট্রেলিয়াকে অংশ নিতে দিত না। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়াও চিন অখুশি হবে এরকম কোনও কাজ করত না। কিন্তু লাদাখের ঘটনা পুরো ছবিটাই বদলে দিয়েছে। বেজিং কী মনে করবে তা আর ভাবছেই না দিল্লি।
[আরও পড়ুন : কৃষি আইন নিয়ে বিক্ষোভ, অথচ নিজের রাজ্যেই বঞ্চিত কৃষকরা! কংগ্রেসকেই আক্রমণ সিধুর]
১৯৯২ থেকে সমুদ্র সুরক্ষার লক্ষ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুসারে আমেরিকার সঙ্গে যৌথ নৌ মহড়া শুরু করেছিল ভারত। ২০১৫ সালে মালাবার মহড়ায় যুক্ত হয়েছিল জাপানের নৌবাহিনীও। গোড়া থেকেই তা নিয়ে বেজিং সন্দিহান ছিল। তাদের ধারণা, ভারতীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিজেদের ক্ষমতা জাহির করতেই এই মহড়া করা হয়। চলতি মাসের শুরুতে টোকিওতে চার দেশের বিদেশমন্ত্রী আলোচনা সভায় যোগ দেন। সেখানেই অস্ট্রেলিয়াকে মালাবার নৌ মহড়ায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রসঙ্গ ওঠে। সোমবার এক বিবৃতে নয়াদিল্লি জানিয়েছে, সামুদ্রিক নিরাপত্তার জন্য অন্যান্য দেশের সহযোগিতা প্রয়োজন ভারতের। তাই প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য নভেম্বরে মালাবার নৌ মহড়ায় যোগ দেবে অস্ট্রেলিয়া। মহড়ায় অংশ গ্রহণকারী দেশগুলি আন্তর্জাতিক বিধি-নিষেধের প্রতি সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
[আরও পড়ুন : ‘নেহরু তো ১৫ মিনিটেই বাই বাই অসম বলে দিয়েছিলেন’, চিন ইস্যুতে রাহুলকে পালটা শাহর]
এশিয়াজুড়ে চিনের আগ্রাসন রুখতে ২০১৭-য় আমেরিকা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ‘কোয়াড’ নামে একটি জোট গড়ে তুলেছে ভারত। আর সম্প্রতি মার্কিন সহকারী বিদেশ সচিব স্টিফেন বিয়েগুন চার দেশের এই জোটকে ‘ন্যাটো’র সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। তাঁর কথায়, দক্ষিণ চিন সাগরে চিনের আগ্রাসন বাড়ছে। বিভিন্ন প্রতিবেশী দেশের সীমান্তেও বেজিং আক্রমণাত্মক মনোভাব নিয়েছে। তা রুখতে এই জোট কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে। ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে অবাধ ও মুক্ত রাখতে আগেই বেজিংকে বার্তা দেওয়া হয়েছিল। এবার লাদাখে চিনের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধের আবহে অস্ট্রেলিয়াকে নৌ মহড়ায় অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানিয়ে দিল্লি আসলে চিনকে পরোক্ষে হুঁশিয়ারি দিল বলে মনে করা হচ্ছে। ২০১৮—য় ফিলিপিন্স সাগরের গুয়াম উপকূলে এবং ২০১৯—এ জাপান উপকূলে যৌথ নৌ মহড়া হয়।