অর্ণব আইচ: দোল বা হোলির দিনে ‘সফট টার্গেট’ অবলা পশুরা। কখনও কুকুর আবার কখনও গরু। কুকুরের গায়ে রং দিতে পারলেই যেন শাস্তি! কিন্তু এবছর এমনটা করলে যেতে হতে পারে শ্রীঘরে, এমনটাই জানিয়েছে লালবাজার। সূত্রের খবর, পুলিশের কাছে কোনও পশুপ্রেমী সংস্থা বা পশুপ্রেমী আলাদা করে অভিযোগ জানালে সঙ্গে সঙ্গেই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কড়া আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লালবাজার সূ্ত্রে খবর, সাম্প্রতিককালে কুকুরদের উপর অত্যাচারের বহু অভিযোগ পুলিশের কাছে জমা পড়েছে। এনআরএস হাসপাতালে পিটিয়ে ‘খুন’ করা হয়েছে ১৬টি কুকুরছানাকে। রিজেন্ট পার্ক এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৬টি কুকুরের। এ ছাড়াও কুকুরের উপর বিভিন্ন ধরনের অত্যাচারের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। পুলিশের তরফে আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। কিন্তু দোল বা হোলির সময়ও কুকুরের শরীরে রং দেওয়াও রীতিমতো অত্যাচার বলেই দাবি শহরের পশুপ্রেমীদের। একটি পশুপ্রেমী সংগঠনের কর্ণধার প্রণয় দত্ত জানান, দোল ও হোলির সময় অনেকের মজাই রাস্তার কুকুরকে মৃত্যুর পথে ঠেলে দেয়। কারণ, রং শরীরে বসে গিয়ে কুকুরের ক্যানসার পর্যন্ত হয়। মফস্বল বা গ্রামাঞ্চলে রং মাখানো হয় গরুকেও। ক্ষতি হয় গরুরও। শহরে অনেক সময়ই যাঁরা হোলি খেলেন তাঁদের টার্গেট হয়ে যায় কুকুর শাবকরা। অনেক সময় চোখ না ফোটার আগেই কুকুর শাবককে রং-এর অত্যাচারের শিকার হতে হয়।
একসঙ্গে একাধিক কুকুর শাবকের উপর টেলে দেওয়া হয় বালতি ভরতি রং। সেই রং মাথা থেকে চুঁইয়ে এসে পড়ে তাদের চোখে। এতে তাদের চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বড় কুকুরের ক্ষেত্রেও একই সমস্যা হয়। শরীরের যেখানে রং লাগে, সেখানে অস্বস্তি শুরু হলে কুকুর সেই জায়গাটি চাটতে শুরু করে। কুকুরের মুখে সেই বিষাক্ত রং চলে যায়। কুকুরের গায়ে রং জল ভরতি বেলুন মারলেও তারা বিরক্ত হয়। দেখা গিয়েছে, দোলের সময় কুকুর কামড়ানোর ঘটনা বেড়ে যায়। তার জন্য মানুষকেই দায়ি করেছেন পশুপ্রেমীরা। জোর করে গায়ে রং দিতে গেলে বা রং দিলে অনেক সময়ই ক্ষিপ্ত হয়ে যায় কুকুর। তাই কামড় দেয়। অনেক সময় গলায় দড়ি দিয়ে কুকুর ল্যাম্পপোস্ট বা কোনও গাছে বেঁধে রং দেওয়ার ঘটনাও ঘটে শহরে। তবে এদিক থেকে বিড়াল অনেকটাই চতুর।
[আরও পড়ুন: ‘বাংলার গর্ব মমতা’ কর্মসূচির পালটা, ১০ দফা চার্জশিট নিয়ে মাঠে নামছে বঙ্গ বিজেপি]
পশুপ্রেমীরা জানিয়েছেন, এবার দোল বা হোলিতে যাতে কুকুরের উপর রং না লাগানো হয়, সেদিকে তাঁদের নজর থাকছে। তাঁরা শহরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা, আবাসন ও বহুতলের বাসিন্দাদেরও বিষয়টি নিয়ে সচেতন করেছেন। লালবাজারের এক কর্তা জানান, ইতিমধ্যেই পুলিশকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে চোখের সামনে কেউ এই ধরনের কাজ করলেই গ্রেপ্তারির। এ ছাড়াও এই বিষয়ে পশুপ্রেমীরাও পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। কেউ কুকুর বা অন্য প্রাণীর গায়ে রং দেওয়ার অভিযোগ জানালে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে তদন্ত করে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
The post সাবধান! দোলে কুকুরের গায়ে রং দিলেই ঠাঁই হতে পারে শ্রীঘরে appeared first on Sangbad Pratidin.