অর্ণব আইচ: নিয়োগ দুর্নীতির টাকা টলিউডে লগ্নির পর হোটেল ব্যবসায় নেমেছিলেন অয়ন শীল। অয়নের কাছ থেকে পাওয়া নথি থেকে মিলেছে সেই ইঙ্গিত। সেই কারণেই সল্টলেক ও দিল্লিতে দু’টি জমিও অয়ন নিয়েছিলেন বলে খবর। বিস্তারিত তথ্য জানতে অয়নকে জেরা করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। ইডির দাবি, SSC,TET ও পুরসভার নিয়োগ দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা দিয়ে প্রচুর জমি কিনেছিলেন অয়ন। এখনও পর্যন্ত অন্তত ৩ কোটি টাকার সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। তার মধ্যে অনেকগুলিই বিভিন্ন ব্যক্তি ও মহিলার নামে। তাঁদের অস্তিত্ব নিয়েই ইডি সন্দেহপ্রকাশ করেছে। সেই সম্পত্তির নথিও মিলেছে অয়নের অফিস থেকে।
শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় বা কুন্তল ঘোষের তোলা দুর্নীতির টাকা অয়নের সংস্থা বা অয়নের টাকা শান্তনুর সংস্থায় যেত বলে ধারণা গোয়েন্দাদের। বিস্তারিত তথ্য পেতে বুধবার শান্তনু ও তাঁর ‘শিক্ষাগুরু’ অয়নকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করেন ইডি আধিকারিকরা। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, অয়নের সল্টলেকের (Salt Lake) অফিস থেকে উদ্ধার হওয়া চুক্তিপত্রের ভিত্তিতে তদন্ত করে ইডি জানতে পেরেছে, এক বছর আগে অয়ন হোটেল ব্যবসায় নেমেছিলেন। নতুন হোটেল সংস্থা না খুলে দু’টি নামী হোটেল সংস্থার থেকে ‘ফ্র্যানচাইজি’ নিয়েছিলেন। কলকাতার একটি হোটেল (Hotel) সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করেন তিনি। সল্টলেকের সিজে ব্লকে ওই সংস্থার চারতলা বিলাসবহুল হোটেল রয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘অ্যাকাডেমিক স্কোর’ বাতিল করে ফিরছে ইন্টারভিউ! শিক্ষক নিয়োগের বিধিতে বদলের সুপারিশ SSC’র]
আর একটি চুক্তিপত্রে দেখা যায়, অয়ন সল্টলেকের সিজে ব্লকেই এক ব্যক্তি ও এক মহিলার কাছ থেকে লিজ নেওয়া জমি নিজের নামে হস্তান্তর করেন। দিল্লির সংস্থার সঙ্গেও চুক্তি করেন অয়ন। সংস্থাটি হোটেল ব্যবসায় যুক্ত। দিল্লির অভিজাত এলাকায় তাদের বিলাসবহুল হোটেল রয়েছে। দিল্লিতে একটি জমির নথিও উদ্ধার হয়। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ওই দু’টি সংস্থার সঙ্গে অয়ন চুক্তিপত্র তৈরি করেন গত বছরের মার্চ মাসে। গোয়েন্দাদের সন্দেহ, দিল্লি ও সল্টলেকে হোটেল তৈরি করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন অয়ন। অয়নের স্ত্রী কাকলি ও ছেলে অভিষেক দিল্লিতে থাকেন, তাই তাঁরাও অয়নের হোটেল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, এমন সম্ভাবনা দেখছে ইডি। উদ্ধার হওয়া নথি থেকে ইডি জেনেছে, এক কোটি টাকা খরচ করে অয়ন শীলের ছেলে ও তাঁর বান্ধবী ইমন গঙ্গোপাধ্যায় যৌথভাবে হুগলিতে একটি সম্পত্তি কেনেন।
[আরও পড়ুন: পার্থর মুখে সুজন-দিলীপ-শুভেন্দুর নাম, আলিপুর আদালতে ঢোকার পথে বিস্ফোরক প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী]
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় এলাকায় চারটি সম্পত্তির নথি অয়নের অফিস থেকে উদ্ধার হয়েছে। সেগুলির পরিমাণ প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা। অয়ন তাঁর সংস্থা ‘এবিএস ইনফোজোন’-এর নামেও নামেও এক কোটি ২০ লক্ষ টাকায় একটি সম্পত্তি কিনেছেন। অয়নের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী শ্বেতা চক্রবর্তীর নামেও একটি সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। একটি নথিতে দেখা গিয়েছে যে, দুই ব্যক্তির থেকে সম্পত্তি কিনেছেন শ্বেতা। সেই সম্পত্তির নথি অয়নের অফিস থেকে উদ্ধার হল কীভাবে, তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। অয়নের স্ত্রী কাকলির নামেও যে সম্পত্তি কেনা হয়েছে, সেই প্রমাণ পেয়েছে ইডি। ওই বিপুল সম্পত্তির টাকার উৎস সম্পর্কে জানতে অয়নকে জেরা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইডি।