shono
Advertisement

রুজি রোজগার কেড়ে নিল আগুন, মাথায় হাত মুটে-ভ্যানচালকদের

বিধ্বংসী আগুনে দিশেহারা ১০ হাজার মানুষ। The post রুজি রোজগার কেড়ে নিল আগুন, মাথায় হাত মুটে-ভ্যানচালকদের appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 09:18 AM Sep 17, 2018Updated: 09:18 AM Sep 17, 2018

স্টাফ রিপোর্টার: অমরতলা লেনের গলিতে তখন মাথায় হাত দিয়ে বসে অখিলেশ যাদব, ইলিয়াস পাসোয়ানরা। মুটের কাজ করেন। বাগরি মার্কেটের মাল আনা-নেওয়া করেই দিন গুজরান তাঁদের। কিন্তু শনিবার মাঝরাতে হঠাৎ লাগা আগুন কেড়ে নিয়েছে মুখের গ্রাস। শুধুই হা-হুতাশ। মার্কেটের ভিতরে দোকান বা গোডাউন নেই তাঁদের। কিন্তু ছিল তাঁদের রুজি-রোজগার। যা পুড়ল বাগরির লেলিহান শিখায়।

Advertisement

কাঁধে গামছা নিয়ে সেই গলিতেই হাত-পা ছড়িয়ে বসে নাফিস, আখতার, শ্যামলরা। বাগরি মার্কেটের পিছনে দুই বহুতলের পিছনে এই রাস্তা। ভ্যানওয়ালা আর মুটেদের ভিড়। বাগরি মার্কেট থেকে ওষুধ, কসমেটিকস, প্লাস্টিকের সরঞ্জাম, ইমিটেশন গয়নার মতো হাজারো সামগ্রী তাঁদের পিঠে-ভ্যানে করেই পৌঁছয় অন্যত্র। সকাল থেকে রাত, এই মুটে-ভ্যানওয়ালাদের ভিড়েই গমগম করে ক্যানিং স্ট্রিট। কিন্তু একটা আগুনেই স্বপ্নভঙ্গ তাঁদের। আজ থেকে রুজি-রোজগার কী হবে, তা জানেন না কেউ। “১০ হাজার আদমি মাল তোলার কাজ করি বাগরি মার্কেটে। এবার আমাদের কী হবে? কী খাব? আমরা তো দিন আনি, দিন খাই। আমরা কে কোন বিল্ডিংয়ের মাল তুলব, তা ঠিক করা থাকে। অন্য বিল্ডিংয়ের মাল তো তুলতে পারব না। পুজোর আগে আমাদের কী হবে।” এক নাগাড়ে কথাগুলো বলে যাচ্ছিল অখিলেশ যাদব।

[২৮ ঘণ্টা পরও জ্বলছে বাগরি মার্কেট, বিল্ডিং ভেঙে পড়ার আশঙ্কা]

দেশের বাড়ি গয়ায়। সেখানেই থাকে বউ-বাচ্চা। অনেকদিন ধরে এই মার্কেটের কাছের ফুটপাথই বাড়ি-ঘর সফিকুলের। ফুটপাথেই চৌকি। মশারি খাটিয়ে শনিবার রাতেও ঘুমিয়েছিলেন তিনি। পেশায় ভ্যানচালক। ভোর থেকেই শুরু ডিউটি। কিন্তু রবিবারের ভোর তাঁর কাছে অভিশপ্ত। “দাদা, দোকানের তো ইনসিওরেন্স থাকে। আমাদের তো কিছু নেই। আমরা এখানকার মাল ভ্যানে করে নিয়ে দোকানে, বড় মার্কেটে দিতাম। যা পেতাম, দেশের বাড়িতে গিয়ে বাড়ির লোককে দিতাম। পুজোর আগে কাজের চাপ থাকে। রোজগারও ভালই হয়। কিন্তু এবার তো সবটাই অন্ধকার।” শনিবারের একটা রাত যেন এখানকার দিন-আনা দিন-খাওয়া মানুষগুলোর রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। হাহাকারের কথা শোনাতে গিয়ে ‘শক্ত’ চোখও ভিজে যাচ্ছিল এদিন। যে শরীর কেজি কেজি ওজন টানে রোজ। সেই শরীরই এক ঝটকায় দুমড়ে-মুচড়ে ছারখার। বিলাস খান নামে এক মজুর যেমন কথা বলতে গিয়ে কেঁদেই ফেললেন। বিহারে বাড়ি। মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে। “কোথা থেকে এবার টাকা আসবে! কিছু টাকা জমিয়েছিলাম। কিন্তু তা সামন্য। ভেবেছিলাম পুজোর আগে খেটে অনেক টাকা পাঠাতে পারব। সে আর হল কই!”

রবিবারের রাত আটটা। আর পাঁচটা দিন এই সময়ে খাওয়া দাওয়া সেরে ঘুমিয়ে পড়ত লোকগুলো। কিন্তু এদিন আর ঘুম নেই চোখে। বাগরির পুড়ে যাওয়া বিল্ডিংয়ের কালো ধোঁয়ায় চোখে অন্ধকার দেখছেন তাঁরা। বুঝতে পারছেন, সকালের আলো ক্যানিং স্ট্রিটে ফুটলেও আসলে অন্ধকারের কালো মেঘ আপাতত গ্রাস করেছে তাঁদের জীবন।

[১০০ টাকার ডিওতে জতুগৃহ কোটি টাকার বাগরি!]

The post রুজি রোজগার কেড়ে নিল আগুন, মাথায় হাত মুটে-ভ্যানচালকদের appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement