সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘বাড়িতে রেখেই শোভন চট্টোপাধ্যায়ের চিকিৎসা হতে পারে।’ শনিবারই কলকাতার প্রাক্তন মেয়রকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পক্ষে সওয়াল করলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় (Baishakhi Banerjee)। একইসঙ্গে এসএসকেএম-এ শোভনকে জোর করে আটকে রাখা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। তাঁর সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন শোভনবাবুও। যদিও তাঁদের এ কথা মানতে নারাজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, শোভনবাবু একা নন, বাকি দুই নেতাও ভরতি এখানে। তিন হেভিওয়েটের স্বাস্থ্য নিয়ে কোনও ঝুঁকি নিতে চায় না হাসপাতাল। নিয়ম মেনেই শোভনবাবুকে হাসপাতালে রাখা হয়েছে।
নারদ মামলা ধৃত চারজনকে গৃহবন্দি থাকার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। তবে তাঁদের মধ্যে একমাত্র বাড়ি ফিরেছেন ফিরহাদ হাকিম। বাকি সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায় এখনও এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের শারীরিক অবস্থার দিকে নজর রাখতে তৈরি হয়েছে মেডিক্যাল বোর্ড। সূত্রের খবর, সেই বোর্ড এখনই তিন নেতাকে বাড়ি যেতে দিতে রাজি নয়। এর মধ্যেই নিজের দায়িত্বে বাড়ি যেতে চেয়েছেন শোভনবাবু। শনিবার বিকেলে তাঁকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চেয়ে সওয়াল করেছেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়েছেন, নিজস্ব রিস্ক বন্ডে বাড়ি ফিরতে চান কলকাতার প্রাক্তন মেয়র। উল্লেখ্য, এসএসকেএমের সুপার পীযূশ রায় জানিয়েছেন, “তিন নেতাকে ছাড়ার বিষয় আমি কোনও সিদ্ধান্ত নেব না। যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার চার সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড নেবে।”
[আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ মোকাবিলায় প্রস্তুত প্রশাসন, রাতভর কন্ট্রোলরুমে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে]
বৈশাখীদেবীর কথায়, “বাড়িতেই সুস্থ হবেন শোভন। জোর করে এসএসকেএম-এ আটকে রাখা হচ্ছে তাঁকে।” পাশাপাশি শোভনবাবুকে বিভিন্নভাবে বিরক্ত করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। এই সমস্যা মেটাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদনও জানিয়েছেন বৈশাখী। বৈশাখীদেবীর কথায়, “শোভন আগে থেকেই অসুস্থ ছিল। ওঁর পুরনো ওষুধই ডোজ বদল করে হাসপাতালে খাওয়ানো হচ্ছে। এখানে ওকে অক্সিজেন, নেবুলাইজার দেওয়া হচ্ছে। বাড়িতেও এই চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারপরেও ওকে বাড়ি যেতে দেওয়া হচ্ছে না। এটা অগণতান্ত্রিক।” তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, শোভনবাবুকে পর্ণশ্রীর বাড়িতে ফিরতে হবে বলে চাপ তৈরি করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি ফিরহাদ হাকিমের বাড়ি ফিরে যাওয়ার প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন।একই কথা বলেছেন শোভনবাবুও। বৈশাখী দেবীর দাবি, “খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন শোভন। ফিরহাদ হাকিম মন্ত্রী বলে বাড়ি যেতে পারেন। সাধারণ মানুষ বলে পারবেন না। এটা অগণতান্ত্রিক।”
[আরও পড়ুন: চিকিৎসার ব্যবস্থা থেকে মৃতদের সৎকার! অতিমারীতে মানুষের পাশে হাওড়ার একদল যুবক]
যদিও শোভন-বৈশাখীর এই দাবি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের প্রশ্ন, নারদা মামলার গ্রেপ্তারির পর অসুস্থ হয়ে পড়তেই এসএসকেএম-এ আনা হয়েছিল শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। তখন কেন হাসপাতালেই চিকিৎসার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন বৈশাখী দেবী। রাজনৈতিক মহলের কথায়, ফিরহাদ হাকিম তো প্রথম থেকেই জেলের হাসপাতালেই ছিলেন। শেষের দিকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে এসএসকেএম-এ আনা হয়। তাই তাঁর সঙ্গে শোভনবাবুর তুলনা হওয়া উচিৎ নয় বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।