অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: জামিনে মুক্তি পেল নবান্ন অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ ধৃত বলবিন্দর সিং (Balwinder Singh)। আড়াই হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিনে তাকে মুক্তি দিল হাওড়া আদালত। বলবিন্দরের আইনজীবী জানান, “হাওড়া সিটি পুলিশ মামলায় তদন্তের প্রামাণ্য নথি টুইট করেছে। বলবিন্দরের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সের ছবি ফেসবুকে দিয়েছে। আদালত এদিন প্রশ্ন তোলে হাওড়া সিটি পুলিশ কীভাবে মামলা চলাকালীন তার প্রামান্য নথি এভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেয়?” এদিকে, বলবিন্দরের জামিন প্রসঙ্গে সরকারি আইনজীবী তারাগতি ঘটক জানান, “আদালত বলবিন্দরকে বেশ কিছু শর্তে জামিন দিয়েছে। এ ব্যাপারে এখনও তদন্ত চলছে। তাই বেশি কিছু বলা যাবে না।”
উল্লেখ্য, গত ৮ অক্টোবর সাত দফা দাবিতে নবান্ন (Nabanna) অভিযানের পরিকল্পনা ছিল বিজেপির। সেই অনুযায়ী হাওড়া এবং কলকাতা মিলিয়ে মোট চারটি মিছিল বেরোয়। অভিযোগ, সেই মিছিলে বাধা দেয় পুলিশ। এমনকী তাঁদের দলীয় কর্মীদের উপর ‘অমানবিক’ অত্যাচার করা হয় বলেও অভিযোগ। ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা, ইটবৃষ্টি পালটা লাঠিচার্জ, বিক্ষোভ সব মিলিয়ে প্রায় রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে সাঁতরাগাছি, হাওড়া ময়দান, হাওড়া ব্রিজ, হেস্টিংস। উত্তেজনার মাঝেই হাওড়া ময়দানের মিছিলে পিছু ধাওয়া করে বলবিন্দর সিংকে পাকড়াও করে পুলিশ। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয় আগ্নেয়াস্ত্র। যদিও বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে বলবিন্দর যুব মোর্চা নেতার দেহরক্ষী। তাই তার কাছে আগ্নেয়াস্ত্র থাকা খুবই স্বাভাবিক। হাওড়া সিটি পুলিশের তরফে পালটা দাবি করা হয়, ওই আগ্নেয়াস্ত্রটি জম্মু-কাশ্মীরের রাজৌরি থেকে লাইসেন্সপ্রাপ্ত। রাজৌরি থেকে বাংলায় কার্যত বেআইনিভাবে নিয়ে আসা হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্রটি। তবে সেকথা বিজেপি নেতৃত্ব কিংবা বলবিন্দর কেউই মানেনি।
[আরও পড়ুন: রাজ্যে বাড়ছে করোনা, অ্যাম্বুল্যান্স ও হাসপাতালের বেডের পর্যাপ্ত ব্যবস্থার নির্দেশ মমতার]
মুক্তির দাবিতে দফায় দফায় রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেছেন বলবিন্দরের স্ত্রী এবং শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজন। বলবিন্দরের গ্রেপ্তারি নিয়ে টুইটে একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্য পুলিশকে খোঁচাও দিয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar)। রাজ্য পুলিশের ডিজিও বলবিন্দরের স্ত্রী করমজিৎকে সুবিচারের আশ্বাস দেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) তাঁকে সালোয়ার স্যুট উপহারও দিয়েছেন। সে কারণে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদও জানান তিনি। পালটা তাঁকে পাগড়ি উপহার দেওয়ার ভাবনাচিন্তাও করেছিলেন বলবিন্দরের স্ত্রী। নানা টানাপোড়েনের পর এগারো দিনের মাথায় সোমবার জামিনে মুক্তি পেল বলবিন্দর।