রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: কলকাতা শহরে পার্টির ধারাবাহিকভাবে সংগঠনে যে ক্ষয় হয়েছে তা নিয়ে ক্ষোভ সামনে এল জেলা সম্মেলনের আলোচনায়। সংগঠনে ধারাবাহিক ক্ষয় কেন আগে থেকে সামলানো যায়নি এই প্রশ্ন তুলে সংগঠনের ব্যর্থতার সব দায় এখনকার নেতাদের উপর শুধু চাপিয়ে দেওয়া যাবে না বলে ক্ষোভ উগরে দিয়েছে কসবা এলাকার প্রতিনিধিরা, পার্টি সূত্রে এমনই খবর।
নিচুতলায় সংগঠন অধিকাংশ জায়গাতেই ধুঁকছে, পাশাপাশি পার্টির কর্মসূচি একটানা পালন করার ক্ষেত্রেও চরম খামতি দেখা যাচ্ছে কলকাতায়। সিপিএমের কলকাতা জেলা সম্মেলনের সাংগঠনিক প্রতিবেদনের রিপোর্টে এমনও উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে ও আলোচনায় উঠে এসেছে, এরিয়া কমিটি সেভাবে কাজ করছে না। নিচতলায় কর্মীরা আসছে না।
আর জি কর আন্দোলনের কোনও প্রভাব কলকাতা পার্টিতে নেই। এই আন্দোলনকে সামনে রেখে কলকাতায় পার্টির কোনও সুফল মেলেনি, এমনও আলোচনায় উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, নিচুস্তরে কোনও অন্দোলন বা কর্মসূচি হচ্ছে না। বামফ্রন্টগতভাবে কোনও কেন্দ্রীয় কর্মসূচি নেওয়া হলে তাতে জেলা পার্টি অংশ নিচ্ছে। শুধু তাই নয়, কলকাতার মতো জেলায় পার্টিতে হিন্দিভাষী প্রচারকের দুর্বলতা রয়েছে বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
শনিবার থেকে প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে শুরু হয়েছে কলকাতা জেলা সিপিএমের সম্মেলন। প্রসঙ্গত, কলকাতা জেলা সিপিএমের সংগঠন ও আন্দোলনের কোনও জোর বাড়ছে না। পার্টির মধ্যে এটা নিয়েই দুশ্চিন্তা রয়েছে। শহরের নানা অংশের মানুষের সমস্যা নিয়ে আন্দোলন বা তাদের কাছে পৌঁছতেই পারছে জেলার পার্টি কর্মীদের বড় অংশ। গত নির্বাচনে বেশ কিছু এলাকায় বুথে কর্মীও দিতে পারেনি পার্টি।
ভোটের সময় তো বটেই বুথস্তরে কাজ করতে কর্মীদের সেভাবে উৎসাহ চোখে পড়ছে না বলেও চিন্তায় কলকাতা জেলা সিপিএম নেতৃত্ব। সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে কলকাতা জেলা সিপিএমে মহিলাদের তুলে আনা যাচ্ছে না বলে স্বীকার করা হয়েছিল সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে। তা কীভাবে সংবাদ মাধ্যম পেল সেটা নিয়েও জেলার শীর্ষ নেতৃত্ব প্রশ্ন তুলেছে। আজ সোমবার পর্যন্ত কলকাতা জেলা সম্মেলন চলবে। আজ নয়া সম্পাদক ও নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে।
কলকাতা জেলা সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে সূত্রের খবর, উঠেছে টালিগঞ্জ এরিয়া কমিটির ঝামেলার প্রসঙ্গও। সংবাদমাধ্যমে ছবি 'লিক' নিয়ে এই বিতর্ক ওঠে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই এক নেতার স্ত্রী লাইভ করছিলেন। তা নিয়ে সেইসময় চর্চা হয়। এদিনও সম্মেলনে সেই প্রসঙ্গ উঠেছে। এছাড়াও সর্বক্ষণের কর্মীদের পরিচর্যা ও জীবনবোধের মান উন্নয়ন করতে হবে, এমন প্রসঙ্গও তুলেছেন কেউ কেউ। আর জি কর নিয়ে কলতান দাশগুপ্তর ভাইরাল হওয়া অডিও টেপ প্রশ্নে পার্টি নিশ্চুপ কেন, এই প্রসঙ্গে বহু সদস্য আলোচনার দাবি তুলেছেন।