সুকুমার সরকার, ঢাকা: করোনা কাঁটায় এবার ব্যতিক্রমী ভাষাদিবস (Bhasa Divas) সাক্ষী বাংলাদেশ তথা গোটা বিশ্ব। এ বছরই প্রথমবার ভাষা শহিদদের বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে পারলেন না প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি। তবে প্রথা মেনে মধ্যরাতে তাঁদের তরফে সামরিক সচিবরা পুষ্পার্ঘ্য দান করেছেন। রাষ্ট্রপতি মহম্মদ আবদুল হামিদের পক্ষে ফুল দেন তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহউদ্দিন ইসলাম। আর প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমদ চৌধুরী শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
শনিবার রাত ঠিক ১২টা ১ মিনিটে দুই প্রধানের সামরিক সচিবরা ঢাকার শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে দুই সামরিক সচিব সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থেকে ভাষা শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তাঁদের পর স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর পক্ষ থেকে উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা শহিদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় নেপথ্যে বাজছিল অমর একুশের কালজয়ী গান, ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি…’।এরপর শাসকদল আওয়ামি লিগ সভাপতি শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে নিয়ে দলের পক্ষ থেকে শহিদ মিনারে পুনরায় পুষ্পস্তবক দেন। এরপর জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের দলীয় নেতাদের নিয়ে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। রবিবার দিনভর সাধারণ মানুষ শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন।
[আরও পড়ুন: বিজয় দিবসেই শুরু হচ্ছে মেট্রো পরিষেবা, আরও এক মাইল ফলক ছুঁল বাংলাদেশ]
একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাভাষীদের জীবনে চিরভাস্বর একটি দিন। সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারের মতো মৃত্যুঞ্জয়ী ভাষাসৈনিকের রক্তে রাঙানো এই দিন। বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মহম্মদ শাহিন ইকবাল এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় উচ্চপদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে উপস্থিত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে নেতৃত্বদানকারীদের সংগঠন সেক্টর কমান্ডারস ফোরামও পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে প্রথম প্রহরে।
[আরও পড়ুন: বন্দুক নয়, বই! বাংলাদেশে মাদক পাচারকারীদের শায়েস্তা করতে অভিনব পন্থা]
শহিদ মিনারে একে একে আরও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মহম্মদ আখতারুজ্জামান, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, জাতীয় পার্টি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সহযোগী সংগঠন, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ছাত্র, যুব, শ্রমিক, কৃষক সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ। ফুলে ফুলে ছেয়ে যায় শহিদ মিনারের বেদি। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা নিবেদনের পরই শহিদ মিনার সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। সর্বস্তরের মানুষ পলাশী হয়ে জগন্নাথ হলের সামনে দিয়ে শহিদ মিনারে প্রবেশ করে ভাষাশহিদদের পুষ্পার্ঘ্য দেন।