সুকুমার সরকার, ঢাকা: রানি কোথায়? খোঁজ-খোঁজ রব। ছোটাছুটি করছে সন্ত্রস্ত পেয়াদারা। চিন্তায় নাজেহাল রাজামশাই। রানিকে ছাড়া কিছুতেই মন বসছে না যে তাঁর। অবশেষে সন্ধান মিলল রানির। মান হয়েছে, তাই তিনি সেঁধিয়েছেন গোঁসাঘরে। তারপর মান ভাঙানোর পালা। তা এখন রানিও নেই, নেই রাজপাট। ফলে লুপ্ত গোঁসাঘরও। তবে আদ্যিকালের গোঁসাঘরের পরিবর্তে এবার আসছে ‘গোঁসা পার্ক’। এবার রেগেমেগে কেউ ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেলে অবশ্যই একবার সেখানে খুঁজে দেখা যেতে পারে।
[বাংলাদেশে রেডিওতে ‘বাংরেজি’ বন্ধের নির্দেশ, আমরাও কি পারি না?]
নাগরিকদের রাগ কমানোর জন্য এবার এক অভিনব পন্থা নিয়েছে বাংলাদেশ। গোঁসাঘরের আদলে ঢাকায় তৈরি হচ্ছে ‘গোঁসা নিবারণী পার্ক’। রাজধানীতে আধুনিক জীবনের গতিধারায় ক্রমশই একঘেয়ে হয়ে যাচ্ছে বাসিন্দাদের জীবন। অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন অনেকেই। ফলে সামান্য কথাতেই ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলছেন তাঁরা। এমনটাই মনে করছে প্রশাসন। বাসিন্দাদের ছোট খাটো বিষয়ে অভিমান কমাতে এই বেনজির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে পার্কটি তৈরি করার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। সচিবালয় সংলগ্ন ওসমামি উদ্যানে পুরোদমে চলছে নির্মাণকাজ। পার্কটির শিলান্যাস করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাইদ খোকন। তিনি বলেন, “নাগরিকদের মধ্যে অনেক সময় মান-অভিমান, গোঁসা হয়ে থাকে। এই পার্কে যখন মানুষ আসবে স্বাভাবিকভাবে তাদের ভালো লাগবে। কয়েক মুহূর্তের মধ্যে তাঁদের রাগ গলে জল হয়ে যাবে।”
তা কীভাবে এই পার্ক মানুষের রাগ কমিয়ে দেবে? কৌতুহল জিইয়ে রেখে মেয়রের সংযোজন, “এখানে থাকবে সুন্দর জলাধার। থাকবে চা, কফি, স্যান্ডউইচ খাওয়ার ব্যবস্থা। সঙ্গে থাকবে পুরনো দিনের মন মাতানো গান শোনার ব্যবস্থা। থাকবে ‘জায়ান্ট স্ক্রিন’ টিভিও। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এখানে এলে মানুষের রাগ কমতে বাধ্য। এই ভাবনা থেকেই পার্কটির নাম দেওয়া হয়েছে গোঁসা নিবারণী পার্ক। চলতি বছরের মধ্যেই পার্ক তৈরির কাজ শেষ হবে। পার্কটি তৈরি করতে সময় লাগবে ৯-১০ মাস। ‘জল সবুজের ঢাকা’ প্রকল্পের আওতায় ওসমানি উদ্যানে ২৯ একর জমির ওপর এটি তৈরি হচ্ছে। এই প্রকল্পর খরচ হবে প্রায় ৫৮ কোটি টাকা।অন্ন, বস্ত্রের পাশাপাশি রাগ-অভিমানের মতো বিষয়ও প্রশাসন মন দিয়ে ভেবেছে এবং তা সমাধানের চেষ্টা করছে। নাগরিকদের বড় অংশ প্রশাসনের এই উদ্যোগকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন। তাহলে ‘ঢাকার পোলাদের’ মেজাজ বিগড়ালেও চিন্তা নেই। নাগালেই রয়েছে মন ভাল করার ব্যবস্থা।
[পান পাতায় রয়েছে আপনার ভাল থাকার চাবিকাঠি]
The post এই পার্কে এলে রাগ-অভিমান গলে জল, মুখে ফুটবে হাসি appeared first on Sangbad Pratidin.