shono
Advertisement
Bangladesh Anti Quota Protest

'বহু আন্দোলন দেখেছি, কিন্তু এবার...', আতঙ্কিত কলকাতায় আটকে পড়া সংখ্যালঘু বাংলাদেশি প্রৌঢ়

'আমাদেরই তো সন্তান। কেন তারা আন্দোলন করতে পারবে না?' প্রশ্ন প্রৌঢ়ের।
Published By: Anwesha AdhikaryPosted: 08:55 PM Jul 21, 2024Updated: 01:27 PM Jul 22, 2024

অণ্বেষা অধিকারী: কোটা বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে (Anti Quota Protest) উত্তাল বাংলাদেশ (Bangladesh)। সুপ্রিম কোর্ট মুক্তিযোদ্ধা কোটার হার কমিয়ে দিলেও বিক্ষোভকারীদের দাবি, তাঁদের আন্দোলন থামবে না। নিজেদের দাবি আদায় করতে গিয়ে পড়ুয়াদের মৃত্যু, পুলিশের লাঠিচার্জ- দেশের এমন অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি ভয় ধরাচ্ছে বাংলাদেশের আমজনতার মনে। একবাক্যে তাঁদের স্বীকারোক্তি, আতঙ্কিত লাগছে।

Advertisement

দিনকয়েক আগে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসেছেন অঞ্জন বরাট (নাম পরিবর্তিত)। 'ইন্ডিয়া' থেকে চিকিৎসা করিয়ে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন ফেরা তো দূর, ঢাকায় থাকা পরিবারের সঙ্গেও পারছেন না যোগাযোগ করতে। বাংলাদেশ (Bangladesh) জুড়ে বন্ধ ইন্টারনেট, তাই ভিডিও কলে স্ত্রী-কন্যার দেখা পাওয়াটাও অসম্ভব। বছর ৬৬র প্রৌঢ় জানালেন, "দিনে দু-তিন মিনিট ফোনে কথা বলছি। তাতেও বাড়তি খরচ হয়ে যাচ্ছে।" ভেবেছিলেন চিকিৎসা শেষে দ্রুত ফিরে যাবেন ঢাকায় নিজের 'বাসা'য়। কিন্তু অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে কবে ফেরা সম্ভব হবে, তাঁর জানা নেই।

[আরও পড়ুন: সংরক্ষণ আংশিক প্রত্যাহারে সন্তুষ্ট নয়, প্রতিবাদ জারি বাংলাদেশের ছাত্রসমাজের

বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করতেই মন খারাপের সুর অঞ্জনবাবুর গলায়। আক্ষেপ করে বললেন, "ঢাকায় যানবাহন বন্ধ, কর্মক্ষেত্রে যাওয়া তো লাটে উঠেছে। খারাপ লাগে ফুটপাথের ধারে বসা দোকানিদের কথা ভেবে। এই অশান্তির জন্য তো ওদের ব্যবসা একেবারে শেষ। দুপয়সা রোজগারের আশা আর নেই।" কোটাবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে প্রতিদিন ঝরে যাচ্ছে তাজা প্রাণের কুঁড়ি। প্রাণের প্রিয় নাড়ি ছেঁড়া ধন হারিয়ে শোকে ভেঙে পড়ছেন মায়েরা। তাঁদের বুকভাঙা কান্নায় ভিজেছে অঞ্জন বাবুর মনও। বলছেন, "আমাদেরই তো সন্তান। কেন তারা আন্দোলন করতে পারবে না?"

আন্দোলন আর বাংলাদেশ যেন সমার্থক বরিশালের ভূমিপুত্র অঞ্জনবাবুর কাছে। ধুলো পড়ে যাওয়া স্মৃতির বাক্স থেকে বের করে আনলেন ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের সেই রক্তাক্ত দিনের কথা। বঙ্গবন্ধু নিধনের সেই দিন আজও তাঁর স্মৃতিতে উজ্জ্বল। মনে পড়ে, রেগে গিয়ে মুজিবের 'হত্যাকারী' সেনার ট্রাকে আধলা ইট ছুড়ে মেরেছিলেন। তার পরে ১৯৯০ সালে হুসেন মহম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার আন্দোলনও আজ মনে পড়ে। তবে বারবার সংগ্রাম দেখে অভ্যস্ত চোখও আজ ছাত্র আন্দোলন দেখে আতঙ্কিত। বলছেন, "ভয় লাগছে। আতঙ্কিত না হওয়াটাই তো অস্বাভাবিক।" ব্যক্তিগতভাবে সংরক্ষণ সমর্থন করেন না অঞ্জনবাবু। আশা রাখেন, একদিন ভুল শুধরে নেবে সব পক্ষ। অশান্তি মুছে গিয়ে আবারও স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবে তাঁর প্রিয় ঢাকা শহর। দ্রুত 'ইন্ডিয়া' ছেড়ে ফিরে যাবেন জননী বাংলাদেশের কোলে, প্রিয়জনদের আশ্রয়ে।

[আরও পড়ুন: মুক্তিযোদ্ধা ৫, মেধা ৯৩! সংরক্ষণ ব্যবস্থা বাংলাদেশে কী ছিল, এখন কী হল?

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • দিনকয়েক আগে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসেছেন অঞ্জন বরাট (নাম পরিবর্তিত)। 'ইন্ডিয়া' থেকে চিকিৎসা করিয়ে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল।
  • কান্নায় ভিজেছে অঞ্জন বাবুর মনও। বলছেন, "আমাদেরই তো সন্তান। কেন তারা আন্দোলন করতে পারবে না?"
  • ব্যক্তিগতভাবে সংরক্ষণ সমর্থন করেন না অঞ্জনবাবু। আশা রাখেন, একদিন ভুল শুধরে নেবে সব পক্ষ।
Advertisement