সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হামলা পালটা হামলায় কয়েক হাজার মানুষের রক্ত ঝরার পর অবশেষে আশার আলো। ইজরায়েল ও হেজবোল্লার মধ্যে সম্পন্ন হল যুদ্ধবিরতি চুক্তি। মঙ্গলবার রাতে যুদ্ধবিরতির পক্ষে ভোট দিল ইজরায়েলের মন্ত্রিসভা। এর পর নীতিগত ভাবে এই চুক্তি অনুমোদন করেছেন বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। ২৭ নভেম্বর স্থানীয় সময় ভোর ৪টে থেকে লাগু হচ্ছে এই সংঘর্ষবিরতি। আপাতত ২ মাসের জন্য একে অপরের বিরুদ্ধে কোনও হামলা চালাবে না হেজবোল্লা ও ইজরায়েল। পরিস্থিতি অনুযায়ী বাড়ানো হবে চুক্তির মেয়াদ।
লেবাননের হেজবোল্লা গোষ্ঠী ও ইজরায়েলের মধ্যে এই যুদ্ধবিরতির মূল কারিগর আমেরিকা ও ফ্রান্স। চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার পর এক্স হ্যান্ডেলে এই বিষয়ে বার্তা দেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন। তিনি লেখেন, 'আজ আমার কাছে মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে অত্যন্ত ভালো একটি খবর রয়েছে। ইজরায়েল ও লেবাননের প্রধানমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা হয়েছে। এর পর অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, ইজরায়েল ও হেজবোল্লার মধ্যে ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ শেষ করতে আমেরিকার প্রস্তাব মেনে নিয়েছে দুই পক্ষ।' আমেরিকার পাশাপাশি এই শান্তি প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ফ্রান্সও। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুও এই চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার জন্য আমেরিকাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তবে একইসঙ্গে তিনি বার্তা দিয়েছেন, 'যুদ্ধবিরতি সম্পন্ন হলেও এর মেয়াদ কতদিন থাকবে তা নির্ভর করছে লেবাননের উপর। যদি কোনওভাবে এর শর্ত লঙ্ঘন করা হয় সেক্ষেত্রে কড়া জবাব দিতে দ্বিধা করব না আমরা।'
যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্তে বলা হয়েছে, হিজবুল্লাহ ও অন্যান্য সন্ত্রাসী সংগঠন ইজরায়েলের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি হয়ে উঠবে না। আগামী ৬০ দিনের মধ্যে, লেবানন নিজেদের এলাকা নিয়ন্ত্রণের জন্য নিরাপত্তাবাহিনী মোতায়েন করতে পারবে। লেবাননে হেজবোল্লা তাদের সন্ত্রাসবাদী সংগঠন নতুন করে তৈরি বা বাড়াতে পারবে না। যদি হেজবোল্লা বা অন্য কোনও সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ইজরায়েলের জন্য ঝুঁকির কারণ হয়ে ওঠে সেক্ষেত্রে আত্মরক্ষার অধিকার থাকবে ইজরায়েলের।
উল্লেখ্য, গত বছর থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত ইজরায়েলের হামলায় শুধুমাত্র লেবাননে মৃত্যু হয়েছে ৩৮০০ জনের। পাশাপাশি আহত হয়েছে অন্তত ১৬ হাজার মানুষ। যুদ্ধবিরতি চুক্তির আগে মঙ্গলবার দুপুরেও লেবাননে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল। এর পর রাতে যুদ্ধবিরতির পক্ষে সম্মতি দেন নেতানিয়াহু। যুদ্ধ বিশেষজ্ঞদের মতে মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির মাঝে এই যুদ্ধবিরতি কিছুটা হলেও আশার আলো। কারণ, সম্প্রতি ইরানের সঙ্গে উত্তেজনা ব্যাপক বেড়েছে ইজরায়েলের। এই দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে তার পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে। এহেন পরিস্থিতিতে এই যুদ্ধবিরতি আশার আলো দেখাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যকে।