সুকুমার সরকার, ঢাকা: আর চোরাপথে নয়। এবার সরকারিভাবে, সরাসরি শহর কলকাতাতেই পাওয়া যাবে বাংলাদেশের সুস্বাদু ইলিশ। দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ বছর পর হাসিনা সরকার ভারতে ইলিশ রপ্তানি করতে চলেছে। সে দেশে ইলিশের উৎপাদন বহুল হারে বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি রুপোলি শস্যের চোরাচালান রুখতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১ আগস্ট ইলিশ-সহ সব ধরনের মাছ রপ্তানি নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করে দিয়েছিল সরকার। পরে ওই বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর একমাত্র রুপোলি শস্য বাদে সব ধরনের মাছ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছিল।
নারায়ণ চন্দ্র চন্দ জানিয়েছেন, “আমরা ইলিশ রপ্তানি করতে চাইছি। কারণ দেশে ইলিশের বহুল উৎপাদন হচ্ছে। আবার আন্তর্জাতিক বাজারে এর চাহিদাও রয়েছে। তাই আমরা কিছুটা হলেও এই মাছ রপ্তানি করতে চাই। এমনিতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি না দিলেও এই মাছ চোরাপথে নানা জায়গায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ফলে ন্যায্য রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয় দেশ। তাই যদি আমরা সরাসরি ইলিশ রপ্তানির পথটা খুলে দিতে পারি, তাহলে গোপনে মাছ পাচার বন্ধ হবে।” মন্ত্রীর কথায়, ‘‘ইলিশের দাম না কমিয়ে তা রপ্তানি করা হচ্ছে কারণ চোরাপথে যে ইলিশ পাচার হয়, তার সিংহভাগই বড় আকৃতির। কাজেই দেশের বাজারে বড় ইলিশ আসে কম। সেই জন্যই দেখা যায়, বড় ইলিশ কেজি প্রতি বিকোয় ১৬০০ টাকায়। ছোট মাছের কিন্তু দাম কম। বাজারে বড় মাছের জোগান ফিরিয়ে আনতে গেলে এই চোরা পথে মাছ পাচারের পথ বন্ধ করতে হবে।”
এ প্রসঙ্গে দেশের উপকূল এলাকার ধীবরদের ‘দাদন’-এর হাত থেকে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন মৎস্য মন্ত্রী। তিনি বলেছেন, “১৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নিয়ে ভাবনা-চিন্তা চলছে। মৎস্যজীবীদের জাল এবং নৌকা দিয়ে স্বনির্ভর করে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। আবার ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য নানা উদ্যোগও গ্রহণ করা হচ্ছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল জাটকা নিধন বন্ধ করা, বিচরণ ক্ষেত্রগুলির সংরক্ষণ, নদীতে ড্রেজিংয়ের ব্যবস্থা করা প্রভৃতি।” উল্লেখ্য, হাসিনা সরকারের তরফে গৃহীত একাধিক পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশের ইলিশ জিআই (ভৌগোলিক পণ্য নিবন্ধন সনদ) তকমা অর্জন করেছে।
[ইলিশ বাংলাদেশেরই, ‘জিআই’ ট্যাগ পেল রুপোলি শস্য]
The post হাড়হিম করা শীতেও বাঙালির পাতে মিলবে খাস পদ্মার ইলিশ appeared first on Sangbad Pratidin.