সুকুমার সরকার, ঢাকা: নববর্ষে সুখবর আসছে বাংলাদেশের (Bngladesh) নাগরিকদের জন্য। অর্থাৎ আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির মধ্যেই বাংলাদেশকে করোনার টিকা সরবরাহের আশ্বাস দিয়েছে গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনস (গ্যাভি)।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ক্রমশ বাড়ছে করোনার সংক্রমণ, আক্রান্ত বিদেশমন্ত্রী ও সচিব]
এদিকে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা করোনা ভাইরাসের যে টিকা তৈরি করছে, তার উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া। ওই টিকার তিন কোটি ডোজ কিনতে চলতি মাসের শুরুতে সেরাম ইনস্টিটিউট ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করেছে সরকার। গ্যাভি-কোভ্যাক্সের অ্যালায়েন্সের মাধ্যমে আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে সদস্যভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন বিতরণও শুরু হবে। বাংলাদেশ তখন এই ভ্যাকসিন পাবে। প্রথমে দেশে আসবে মোট জনসংখ্যার ৩ শতাংশ ভ্যাকসিন। পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে আরও ১৭ শতাংশ পাওয়া যাবে। সব মিলিয়ে ২০২১ সালের মধ্যে মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ অর্থাৎ ৬ কোটি ৮০ লক্ষ ডোজ বা ৩ কোটি ৪০ লক্ষ মানুষের জন্য ভ্যাকসিন পাবে বাংলাদেশ। তবে পরবর্তী সময়ে নতুন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে আরও ভ্যাকসিন পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে মোট ১৩ কোটি মানুষের ভ্যাকসিন কোভ্যাক্স থেকে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বুধবার স্বাস্থ্যদপ্তরে এক সভায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ এতে উপস্থিত ছিলেন। সভায় অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. সামসুল হক জানান, এরই মধ্যে কারিগরি টিম দেশে কিভাবে ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনা হবে তার একটি পরিকল্পনা তৈরি করেছে। এই পরিকল্পনা আগামীকাল গ্যাভির প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে। এ ছাড়া ভ্যাকসিন দেশে আনার চূড়ান্ত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আগামী ৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মূল চাহিদাপত্র পাঠানো হবে। প্রাণঘাতী ও সংক্রামক ব্যধি থেকে দরিদ্র দেশগুলোর শিশুদের জীবনরক্ষায় টিকা প্রদানে ভূমিকা রেখে আসা আন্তর্জাতিক এই জোট বিশ্বের নিম্ন ও মধ্য আয়ের ৯২টি দেশকে করোনা ভাইরাসের টিকা সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে। তার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশের জন্য টিকা সরবরাহ করবে তারা। একজন মানুষ দুই ডোজ করে টিকা পাবেন। সেই হিসাবে বাংলাদেশের জনসংখ্যার ২০ শতাংশের জন্য গ্যাভির কাছ থেকে ৬ কোটি ৮০ লাখ ডোজ টিকা পাওয়া যাবে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মা, শিশু ও কৈশোর স্বাস্থ্য কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. শামসুল হক জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “যারা আগে জাতীয় ভ্যাকসিন বিতরণ পরিকল্পনা জমা দেবে তারাই আগে ভ্যাকসিন পাবে। গ্যাভি যখন থেকে পরিকল্পনা জমা নেওয়া শুরু করবে, আশা করছি আমরা প্রথম দিনই আমাদের পরিকল্পনা জমা দিতে পারব।”
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা করোনা ভাইরাসের যে টিকা তৈরি করছে, তার উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া। ওই টিকার তিন কোটি ডোজ কিনতে চলতি মাসের শুরুতে সেরাম ইনস্টিটিউট ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করেছে সরকার। সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত টিকার ‘এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটর’ হিসেবে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসই বাংলাদেশ সরকারকে ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে। এই চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে ছয় মাসে তিন কোটি ডোজ টিকা পাওয়া যাবে।