সুকুমার সরকার, ঢাকা: কেবলমাত্র একটি পরিবারের নিরাপত্তার জন্য রাষ্ট্রীয় বিশেষ সুবিধা কেন থাকবে? এতে বৈষম্যের কথা উল্লেখ করে ‘জাতির পিতার পরিবার-সদস্যদের নিরাপত্তা (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করল বাংলাদেশের (Bangladesh) অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। একইসঙ্গে ‘বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর খসড়ারও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মহম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই অর্ডিন্যান্সের অনুমোদন দেওয়া হয়।
মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ জানায়, বিগত সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে 'জাতির পিতার পরিবার-সদস্যদের নিরাপত্তা আইন, ২০০৯' (২০০৯ সালের ৬৩ নম্বর আইন) প্রণয়ন ও জারি করা হয়েছিল। ২০১৫ সালের ১৫ মে সেই আইন অনুসারে বিশেষ নিরাপত্তা এবং সুবিধা প্রদানের গেজেট নোটিফিকেশন জারি করা হয়। কেবল একটি পরিবারের সদস্যদের রাষ্ট্রীয় বিশেষ সুবিধা প্রদানের জন্য আইনটি করা হয়েছিল, যা একটি সুস্পষ্ট বৈষম্য। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানের পর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার (Interim Government) সব বৈষম্য দূরীকরণে কাজ শুরু করেছে। এ বিষয়ে আশু ব্যবস্থা গ্রহণ করে এই আইনটি বাতিলের অধ্যাদেশ (Ordinance) জারি করা প্রয়োজন। এই প্রেক্ষাপটে, উপদেষ্টা পরিষদ বৈঠকে ‘জাতির পিতার পরিবার-সদস্যরা নিরাপত্তা (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর খসড়া সংসদ বিষয়ক বিভাগের ভেটিং সাপেক্ষে চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করা হয়।
[আরও পড়ুন: ফের সুখবর সিভিক ভলান্টিয়ারদের জন্য, পুজোর বোনাসের পর বড় অঙ্কে বাড়ল অবসরকালীন ভাতা]
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (Special Security Force) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ জানায়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর পরিবারের সদস্যরা’ এবং কোনও রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকার প্রধান এবং অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে ঘোষিত ব্যক্তিদের নিরাপত্তা প্রদানের জন্য ‘বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী আইন, ২০২১’ প্রণয়ন করা হয়। ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা এবং অন্যান্য উপদেষ্টাদের সমন্বয়ে অন্তর্বর্তীক সরকার গঠিত হয়েছে। এমন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ‘বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী আইন, ২০২১’-এর আওতায় প্রধান উপদেষ্টার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
[আরও পড়ুন: চলন্ত ট্রেনে আগুন! তীব্র চাঞ্চল্য স্টেশন, শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখায় ব্যাহত রেল চলাচল]
ছাড়া, বর্তমান আইনের আওতায় ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর পরিবারের সদস্যদের’ নিরাপত্তা প্রদান সংক্রান্ত সুবিধাগুলি প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায় কার্যকর করা সম্ভব নয়। এসব প্রত্যাহার করে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নিরাপত্তা বিধানের বিষয়টি সংযোজন করে ‘বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৪’ উপদেষ্টা পরিষদ বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন করা হয়।