সুকুমার সরকার, ঢাকা: কলকাতায় গিয়ে খুন হয়েছেন বাংলাদেশের ঝিনাইদহের সাংসদ আনোয়ারুল আজিম। তার হত্যার নৃশংসতায় শিউরে উঠছে সকলে। এই ভয়ংকর কাণ্ডের তদন্তে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। এবার জানা গেল, এর আগেও দুবার আনোয়ারুলকে খুন করার ছক কষা হয়েছিল। এমনকি চলতি বছরের জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের আগে বাংলাদেশেই তাঁকে হত্যা করতে চেয়েছিল ষড়যন্ত্রকারীরা। তদন্তে এমনই দাবি করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি)।
আনোয়ারুলের খুনের ঘটনার তদন্ত করছে ভারত-বাংলাদেশ দুদেশই। শনিবার এনিয়ে ঢাকার মিন্টো রোডের ডিবি পুলিশের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখী হন ডিবি পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মহম্মদ হারুন অর রশীদ। এদিন তিনি জানান, "গত জাতীয় নির্বাচনের আগে এবং চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশে এই খুনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। দুবারের পরিকল্পনায় ব্যর্থ হয়ে তৃতীয়বারের চেষ্টায় কলকাতায় আনোয়ারুলকে খুন করা হয়। এ ঘটনায় আমার নেতৃত্বে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল কলকাতায় যাবেন। সেখানে তাঁরা এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই ও অনুসন্ধান করবেন।"
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সাংসদ খুন: মডেল হতে চাওয়াই কাল! শাহিনের হাত ধরে অন্ধকার জগতে বান্ধবী শিলাস্তি]
আনোয়ারুলের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা ঝিনাইদহে। প্রিয় সাংসদের এমন ভয়াবহ পরিণতি মেনে নিতে পারছেন না কেউই। অপরাধীদের দ্রুত বিচার চাইছে আনোয়ারুলের পরিবার। শুক্রবার সাংবাদিকদের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন মুমতারিন। তিনি বলেন, “আমার বাবাকে শেষবারের মতো ছুঁয়ে দেখতে চাই। বাবা কতটা কষ্ট পেয়েছে, তা তাঁকে দেখে বুঝতে চাই। মানুষ মানুষকে এমনভাবে কী করে মারতে পারে? এভাবে আমার বাবাকে কেটে কেটে টুকরা করা হয়েছে? আমি জীবনেও ভুলতে পারব না।”
উল্লেখ্য, কলকাতায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিউটাউনের ফ্ল্যাটে বাংলাদেশি সুপারি কিলারদের হাতে খুন হয়েছেন আনোয়ারুল। খুনের নেপথ্যে মূল চক্রী হিসাবে অভিযোগের তির তাঁর বন্ধু তথা বাংলাদেশের ব্যবসায়ী আখতারুজ্জামান শাহিনের দিকে। সে টোপ হিসাবে ব্যবহার করে নিজেরই সুন্দরী বান্ধবী শিলাস্তি রহমানকে। বন্ধু সেজে সুপারি কিলাররাই আনোয়ারুলকে নিউ টাউনের ফ্ল্যাটে নিয়ে আসে। বাংলাদেশ পুলিশের কাছ থেকে পশ্চিমবঙ্গের গোয়েন্দারা জেনেছেন, গত ১৩ মে বিকেল চারটে নাগাদ শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় সাংসদকে। এর পর শাহিনের নির্দেশেই তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে ফ্রিজে রেখে দেওয়া হয়। তার পর ফেলা দেওয়া হয় বিভিন্ন জায়গায়। যদিও এখনও আনোয়ারুলের দেহাবশেষ উদ্ধার করা যায়নি। গোটা ঘটনার তদন্ত করছে ভারত ও বাংলাদেশ।