shono
Advertisement

৮ মাসে ধর্ষণের শিকার ৪৯৩ শিশু, উদ্বেগ জাগাচ্ছে বাংলাদেশের পরিসংখ্যান

রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়েছে ৪৭টি কন্যা শিশুর। 
Posted: 06:42 PM Sep 29, 2023Updated: 06:45 PM Sep 29, 2023

সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে বাড়ছে শিশু নির্যাতনের ঘটনা। পরিসংখ্যান রীতিমতো উদ্বেগ জাগানো। এই মর্মে পুলিশ ও প্রশাসনের কড়া পদক্ষেপের দাবি উঠছে সব মহলে। 

Advertisement

পরিসংখ্যান বলছে, গত ৮ মাসে বাংলাদেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৪৯৩টি শিশু! গণধর্ষণের সংখ্যা ৭২। বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বেসরকারি সংস্থা, জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম ‘কন্যা শিশুর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, প্রতিবেদন, উপস্থাপন এবং প্রকাশনা গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন’অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে প্রকাশিত প্রতিবেদন উঠে এসেছে এমনই নির্মম তথ্য।  

এখানেই শেষ নয়। সংস্থার পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, এই ৮ মাসে অ্যাসিড হামলার শিকার হয়েছে ২জন। অপহরণ ও পাচার করা হয়েছে ১০৪টি শিশুকন্যাকে। এর মধ্যে বাল্যবিবাহ দেওয়া হয়েছে ২৬০জনের। এছাড়া বাল্যবিবাহ হয়েছে কিন্তু অভিভাবকরা স্বীকারোক্তি দেয়নি এমন কন্যাশিশুর সংখ্যা ১ হাজার ৫২৫ জন। তবে সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২২ সালের তুলনায় ২৩ সালে নাবালিকা বিয়ের সংখ্যা কমেছে ২৬ শতাংশ।

অন্যদিকে, চলতি বছরের গত ৮ মাসে মোট ২৬ জন গৃহশ্রমিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ১৩ জন শারীরিক নির্যাতনের শিকার, ৩ জনকে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে এবং ১০ জন যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে আরও উদ্বেগজনক তথ্য। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৮ মাসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয় ৩৬টি কন্যা শিশু। গত ৮ মাসে ১৩৬টি কন্যা শিশুকে হত্যা করা হয়। যার অন্যতম কারণ ছিল পারিবারিক দ্বন্দ্ব। গত ৮ মাসে ১১টি কন্যা শিশুকে বিভিন্ন স্থানে ফেলে রেখে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এছাড়া, এবছর এখনও পর্যন্ত ৩০৭টি কন্যা শিশুর জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে। রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়েছে ৪৭ কন্যা শিশুর। 

[আরও পড়ুন: মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার তালিকায় কারা? ভাইরাল তালিকা ঘিরে বিভ্রান্তি]

দেশের ৭০টি দৈনিক পত্রিকা এবং তৃণমূল স্তর থেকে এই তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। মোট ১৭টি ক্যাটাগরির আওতায় ৭০টি সাব-ক্যাটাগরিতে এসব তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের বিভিন্ন ধারায় নির্যাতিতার ক্ষেত্রে মামলা দায়ের হয়েছে সাড়ে ৮ হাজার। ৬৫ শতাংশের বেশি মামলায় যৌতুক ও ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই আইনে ভুক্তভোগী শিশুদের জন্য মামলার সংখ্যা ১ হাজার ৮৮৮টি। ২০২২ সালে উচ্চ আদালতের তথ্য অনুযায়ী, ১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত দেশের ৯৯টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৩১টি। সবচেয়ে বেশি বিচারাধীন মামলা রয়েছে ঢাকার ৯টি নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে। যার সংখ্যা ১৮ হাজার ২৫। নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে ৯টি সুপারিশও করেছে জাতীয় কন্যা শিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম।

এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় কন্যা শিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সভাপতি ড. বদিউল আলম মজুমদার, গুড নেইবারস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মাঈনুদ্দিন মাইনুল, সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের হেলথ অ্যান্ড নিউট্রেশন সেক্টরের কর্মকর্তা ড. লিমা রহমান, চাইল্ড রাইটস স্পেশালিস্ট অ্যান্ড অ্যাক্টিভিস্ট টনি মাইকেল গোমেজ, অ্যাডুকো বাংলাদেশের প্রকল্প ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলাম, জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি প্রমুখ।

[আরও পড়ুন: জেহাদের জাল ফর্দাফাই! বাংলাদেশে গ্রেপ্তার কুখ্যাত রোহিঙ্গা জঙ্গি কমান্ডার]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement