shono
Advertisement
Bangladesh

মুক্তিযোদ্ধা ৫, মেধা ৯৩! সংরক্ষণ ব্যবস্থা বাংলাদেশে কী ছিল, এখন কী হল?

১৯৭২ সালে ৫৬ শতাংশ সংরক্ষণ চালু হয় বাংলাদেশে। পুরনো এই সংরক্ষণ পদ্ধতির বিরোধিতায় আন্দোলন শুরু হয় ২০১৮ সালে। ছাত্রলিগ এবং পুলিশের সঙ্গে পড়ুয়াদের সংঘর্ষে ১৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
Published By: Kishore GhoshPosted: 04:28 PM Jul 21, 2024Updated: 06:30 PM Jul 21, 2024

সুকুমার সরকার, ঢাকা: রক্তক্ষয়ী আন্দোলনে, শতাধিক প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশে (Bangladesh) বদলে গেল সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ! হাই কোর্টের রায় খারিজ করে কোটা সংস্কারের পক্ষেই রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের নির্দেশে এবার থেকে ৯৩ শতাংশ আসনে নিয়োগ হবে মেধার ভিত্তিতে। কেবল ৭ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে। পাশাপাশি দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফেরাতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। বিক্ষোভকারী ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষালয়গুলিতে ফিরতে বলা হয়েছে। কিন্তু ঠিক কতখানি বদল বাংলাদেশের সংরক্ষণ ব্যবস্থায়। আগেই বা কেমন ছিল?

Advertisement

উত্তর পেতে ফিরে যেতে হবে মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোয়। ১৯৭১ এ স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম। এক বছর পর ১৯৭২ থেকে সংরক্ষণ চালু হয়। শুরুতে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ আসন সংরক্ষিত হয়। বাকি ৪৪ শতাংশে নিয়োগ হত মেধার ভিত্তিতে। সংরক্ষণ বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়েছিল মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজনদের। ৫৬ শতাংশ সংরক্ষণের মধ্যে ৩০ শতাংশই ছিল তাঁদের জন্য। এছাড়া মহিলাদের জন্য ১০ শতাংশ, বিভিন্ন জেলার জন্য ১০ শতাংশ, জনজাতিদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ সংরক্ষিত পদ ছিল সরকার চাকরিতে। পুরনো এই সংরক্ষণ পদ্ধতির বিরোধিতায় আন্দোলন শুরু হয় ২০১৮ সালে।

 

[আরও পড়ুন: বিধানসভা নির্বাচন ঘোষণার আগে লাগাতার জঙ্গি হামলা, সন্ত্রাসদমনে কাশ্মীরে এবার PSF কমান্ডো

আন্দোলনের দাবির পক্ষে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা মুক্তিযোদ্ধার স্বজনদের জন্য ৩০ শতাংশ, মহিলাদের জন্য ১০ শতাংশ এবং জেলা খাতে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ বাতিল করে দেন। অর্থাৎ সংরক্ষণ রাখা হয় শুধু জনজাতিদের ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের ১ শতাংশ। কিন্তু গোল বাধান সাত জন মুক্তিযোদ্ধার পরিবার। ২০২১ সালে তাঁরা সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় হাই কোর্টে মামলা করেন। এর পর গত ৫ জুন উচ্চ আদালত জানায়, সরকারি সিদ্ধান্ত অবৈধ। ফলে ফিরে আসে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩০ শতাংশ সংরক্ষণ। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ জুড়ে নতুন করে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। গত বৃহস্পতিবার থেকে যা হিংসাত্মক হয়ে ওঠে। ছাত্রলিগ এবং পুলিশের সঙ্গে পড়ুয়াদের সংঘর্ষে ১৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

 

[আরও পড়ুন: কেদারনাথে প্রবল বৃষ্টিতে পাথর গড়িয়ে পড়ে ৩ জনের মৃত্যু! আহত ২

পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠার আগেই অবশ্য সংরক্ষণ সংস্কারের জন্য সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল হাসিনা সরকার। ৭ অগস্ট তার শুনানির কথা ছিল। দেশের ক্রমবর্ধমান অশান্তির আবহে শুনানি এগিয়ে আনা হয়। রবিবার সেই শুনানি হল বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে। শেষ পর্যন্ত আদালত বিজ্ঞপ্তি জারি করে নির্দেশ দিল, সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ নয়, এবার থেকে মুক্তিযোদ্ধা-সংরক্ষণ হবে পাঁচ শতাংশ। দুই শতাংশ সংরক্ষণ থাকবে অন্যান্য শ্রেণির জন্য। অনগ্রসর শ্রেণি পাবে এক শতাংশ কোটা। এছাড়া বাকি এক শতাংশ কোটার সুবিধা পাবেন প্রতিবন্ধী এবং তৃতীয় লিঙ্গের নাগরিকেরা। অর্থাৎ ৫৬ শতাংশ থেকে ৭ শতাংশে নেমে এল বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠার আগেই অবশ্য সংরক্ষণ সংস্কারের জন্য সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল হাসিনা সরকার।
  • পুরনো এই সংরক্ষণ পদ্ধতির বিরোধিতায় আন্দোলন শুরু হয় ২০১৮ সালে।
Advertisement