সুকুমার সরকার, ঢাকা: ভারী বর্ষণের জেরে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে বাংলাদেশের ফেনী জেলাতে। প্লাবিত আরও অন্যান্য জেলা। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে কুমিল্লার গোমতী নদী। বন্যার জেরে পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়ার দেড় লক্ষের উপর মানুষ এখন সম্পূর্ণ গৃহবন্দি। দুর্গতদের সাহায্যের জন্য নেমেছে দমকলবাহিনী ও উদ্ধারকারী দল।
মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বাঁধ ভেঙে মোট ২৭টি স্থান দিয়ে লোকালয়ে জল প্রবেশ করে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। যত সময় যাচ্ছে বন্যার জল বেড়েই চলেছে। ফেনী-সিলোনিয়া রাস্তায় ২ থেকে ৪ ফুট পর্যন্ত জল রয়েছে। গ্রামের বিভিন্ন রাস্তায় ৭ থেকে ৮ ফুট উচ্চতায় জল রয়েছে। মঙ্গলবার ভোর রাতে মুহুরী ও কহুয়া নদীর পরশুরাম ও ফুলগাজীর বাঁধ ভেঙে জল ঢুকতে শুরু করে। এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন স্থান থেকে চারশো মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: সাত স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে টাকা আদায়, গোপন ভিডিও রেখে ব্ল্যাকমেল! কীর্তি ফাঁস তরুণীর]
উদ্ধারের পাশাপাশি প্রশাসন ত্রাণ বিতরণও করছে। পরশুরামের সলিয়া এলাকার বাসিন্দা হাবিব স্বপন জানান, "আমাদের ত্রাণের চেয়েও এখন নৌকা বা স্পিডবোট বেশি প্রয়োজন। পরিস্থিতি এমন হবে আমরা বুঝতে পারিনি। কোথাও যাওয়ার উপায় নাই। সোমবার রাত থেকে বিদ্যুৎ নেই। খাবার ও জল নেই।" মুন্সিরহাট ইউনিয়নের বাসিন্দা সাহেদ হোসেন সাহেদের কথায়, ফেনীর মুহুরী নদীতে জলের মাত্রা গত ৪০ বছরের ইতিহাসকে ছাড়িয়ে গিয়েছে।
এই দুর্যোগ নিয়ে বাংলাদেশের জল উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কাশেম বলেন, মুহুরী নদীর জল বিপদসীমার ৮৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বুধবার পর্যন্ত জেলায় ১৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফেনী আবহাওয়া অধিদফতরের উচ্চ পর্যবেক্ষক মহম্মদ মনিরুজ্জামান। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বাড়ি থেকে বেরতেও নিষেধ করেছে প্রশাসন। বন্যায় ইতিমধ্যে প্রায় চার হাজার হেক্টর এলাকার ফসলের জমি তলিয়ে গিয়েছে। গোমতীপাড়ের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, গত ১০ বছরের মধ্যে নদীটিতে এত জল দেখেননি তাঁরা।