shono
Advertisement

Breaking News

মুখে প্লাস্টিক জড়িয়ে গ্যাস টেনে মৃত যুবক, সল্টলেকের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার দেহ

আত্মহত্যা নাকি খুন, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
Posted: 10:04 PM Jul 19, 2021Updated: 10:04 PM Jul 19, 2021

কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: গোটা মুখমণ্ডল পুরু নীল রঙের প্লাস্টিকের ব্যাগ দিয়ে জড়ানো। সেই ব্যাগের একটি অংশ দিয়ে প্রবেশ করানো হয়েছে রবারের গ্যাস পাইপ। পাইপের অন্যপ্রান্তের সংযোগ হিলিয়াম গ্যাসের একটি সিলিন্ডারের সঙ্গে। ওই অবস্থায় যুবকের শরীর অচৈতন্য হয়ে পড়েছিল বিছানার উপর। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। সোমবার বিকেলে এই ঘটনা ঘটেছে সল্টলেকের লাবনী আবাসনে।

Advertisement

প্রাথমিক পর্যবেক্ষণের পর পুলিশের অনুমান, হিলিয়াম গ্যাস দিয়ে শ্বাসরোধ করে মৃত্যুর পথ বেছে নিয়েছিলেন মধ্য তিরিশের এই যুবক। পেশায় তিনি একটি বেসরকারি ব্যাংকের আধিকারিক। তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলে লেখা রয়েছে, তিনি অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার পদে কর্মরত ছিলেন। ওই বেসরকারি ব্যাংকের চৌরঙ্গি শাখায় কাজ করতেন তিনি। মৃত যুবকের নাম পি সমৃদ্ধ। তিনি হায়দরাবাদের আমবিপিঠ এলাকার বাসিন্দা। কর্মসূত্রে সল্টলেকের লাবনী আবাসনের এফ-৮/৬ ফ্ল্যাটে পেইং গেস্ট হিসেবে থাকতেন।

[আরও পড়ুন: চব্বিশে লক্ষ্য দিল্লি, ২১ জুলাই একাধিক নতুন চমক দিতে চলেছেন তৃণমূল নেত্রী]

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার বিকেলের দিকে মৃত ওই যুবকের রুমমেট এবং স্থানীয় বাসিন্দারা ফোন করে ঘটনার কথা জানিয়েছেন থানায়। পুলিশ এসে দেহটি উদ্ধার করে। সেটি বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা পর দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। আপাতত অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ওই যুবকের দুই রুমমেটকে। তাঁরাও ব্যাংককর্মী বলে জানা গিয়েছে। গতবছর ছয় আগস্ট থেকে লাবনী আবাসনে পেইং গেস্ট হিসেবে থাকা শুরু করেছিলেন এই যুবক। তাঁর রুমমেটদের বক্তব্য, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চুপচাপ হয়ে গিয়েছিলেন সমৃদ্ধ। সম্ভবত তিনি মানসিক অবসাদের শিকার হয়েছিলেন। রুমমেটদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর অনুমান করছে পুলিশ।

[আরও পড়ুন: ‘বাংলায় বিনিয়োগে Tata-কে স্বাগত’, বলছেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়]

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন দুপুরে যুবকের রুমমেটদের দু’জনের একজন বাইরে মধ্যাহ্নভোজ সারতে গিয়েছিলেন। অপর জন গিয়েছিলেন অফিসে। সমৃদ্ধ একাই ছিলেন ফ্ল্যাটে। খেয়েদেয়ে বাড়িতে ফেরার পর দরজা খুলে সমৃদ্ধকে ডাকাডাকি করেন তাঁর রুমমেট। সাড়া না মেলায় মোবাইলে ফোন করেন। তাসত্ত্বেও উত্তর না মেলায় সমৃদ্ধর শোওয়ার ঘরে ধাক্কাধাক্কি করেন। শেষমেশ দরজার ছিটকিনি ভেঙে ঢুকে মুখে প্লাস্টিক জড়ানো অবস্থায় হিলিয়াম গ্যাসের সিলিন্ডার পাশে রেখে অচৈতন্য হয়ে পড়ে থাকা সমৃদ্ধকে দেখতে পান তিনি। খবর দেন প্রতিবেশীদের। তারপর বিধাননগর উত্তর থানায় খবর দেওয়া হয়। সমৃদ্ধর আত্মীয়-স্বজনকে খবর পাঠানো হয়েছে। এই যুবক সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বলে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে পরিচয় লিখেছিলেন। সম্ভবত বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করার সুবাদে হিলিয়াম গ্যাস দিয়ে আত্মহত্যা সম্পর্কে সম্যক ধারণা ছিল তাঁর। সেই সূত্রেই তিনি অপেক্ষাকৃত কম যন্ত্রণাদায়ক এই মৃত্যুর পথ থেকে বেছে নিয়েছিলেন কিনা তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। তদন্তকারীদের একটি অংশের বক্তব্য, হিলিয়াম গ্যাস দিয়ে আত্মহত্যা করার ঘটনা বিরল নয়। এই গ্যাস দ্রুত শ্বাসরোধ করে মৃত্যুকে ত্বরান্বিত করে। সেই অর্থে কম যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু ঘটায় বলে হিলিয়াম গ্যাস দিয়ে আত্মহত্যা করার প্রবণতা রয়েছে সমাজে। আত্মহত্যার এমন উদাহরণ মাঝেমাঝেই চোখে পড়ে। এক্ষেত্রে সমৃদ্ধও ওই পথই অনুসরণ করেছিলেন বলে অনুমান।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement