সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ঝাড়খণ্ড লাগোয়া কোটশিলা বনাঞ্চলের সেই সিমনি বিট যে চিতা-ভাল্লুকের সহাবস্থান। এবার তা হাতেনাতে প্রমাণ পেল পুরুলিয়া বনবিভাগ। ওই সিমনি বিটের হরতান জঙ্গলে এবার ট্র্যাপ ক্যামেরায় ধরা পড়ল ভাল্লুকের (Bear) ছবি। পুরুলিয়ায় (Purulia) যা প্রথম।
চলতি মাসের ৬ নভেম্বর সকাল ১০.১০ মিনিটে পুরুলিয়া বনবিভাগের (Purulia Forest Department) ট্র্যাপ ক্যামেরায় ধরা পড়ে ভাল্লুকের ছবি। ছবিতে দেখা যায়, ঘন জঙ্গলে ভিতরে শীতের রোদ পোহাচ্ছে ভাল্লুকটি। বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ শ্রেণিতে ভাল্লুক এক নম্বরে রয়েছে। পুরুলিয়ার ডিএফও দেবাশিস শর্মা বলেন, “কোটশিলা ও ঝালদা বনাঞ্চলে গ্রামবাসীদের কাছ থেকে বারে বারে ভাল্লুকের খবর পাওয়া যায়। বিশেষ করে কোটশিলা বনাঞ্চলে সাম্প্রতিক কালে ভাল্লুকের একাধিকবার খবর আমরা পেয়েছি। গ্রামবাসীদের সঙ্গে সংঘাত পর্যন্ত বেঁধেছে। কিন্তু কখনই বনদপ্তরের রেকর্ডভুক্ত হয়নি। এই প্রথম পুরুলিয়ার জঙ্গলে আমাদের ট্র্যাপ ক্যামেরায় ভাল্লুক ধরা পড়ল।”
[আরও পড়ুন: সেদিনের হার্মাদরা শুভেন্দুর সঙ্গে ঘুরছে, ‘হার্মাদ মুক্তি দিবসে’ তোপ তৃণমূলের]
পুরুলিয়ার জঙ্গল যে ক্রমশ বাড়ছে। তা বেশ কয়েক বছর ধরে বোঝা যাচ্ছিল। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে কোটশিলা বনাঞ্চলের এই সিমনি বিটে বনদপ্তরের ট্র্যাপ ক্যামেরায় একাধিকবার একাধিক চিতাবাঘের ছবি দেখা যায়। বিশেষ করে কোটশিলা বনাঞ্চলে একাধিক চিতাবাঘের স্থায়ীভাবে বসবাস করে তা প্রমাণিত সত্য। এবার ট্র্যাপ ক্যামেরায় ভাল্লুক ধরা পড়ায় প্রমাণ হয়ে গেল জঙ্গল যেমন ঘন হয়েছে, তেমনই এই এলাকায় বন্যপ্রাণীরা স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করেছে।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে ডিএফও বলেন, “কোটশিলা ও ঝালদা বনাঞ্চলে একাধিক ভাল্লুক রয়েছে। আগামী দিনে আমরা দপ্তরের অনুমতি নিয়ে গণনা করা যায় কিনা সেই বিষয়টিও ভাবনা চিন্তা করছি।” বছর খানেক আগে বিষ্ঠা সংগ্রহের মাধ্যমে ভাল্লুকের অবস্থান জানার কাজ শুরু করেছিল পুরুলিয়া বনবিভাগ। বনদপ্তর জানিয়েছে, ভাল্লুকের অবস্থান জানতে গত একমাস ধরে ট্র্যাপ ক্যামেরা ওই জঙ্গলে রাখা ছিল। ভাল্লুকের বিচরণ এত দ্রুতগতিতে হয় যে ট্র্যাপ ক্যামেরায় ধরা ভীষণই সমস্যার। কিন্তু এক্ষেত্রে ওই তা ধরা দেওয়ায় পুরুলিয়া বনবিভাগ ভীষণই উল্লসিত।