shono
Advertisement

‘শেড নেট’ পদ্ধতিতে পান চাষে ভরতুকি, বিঘা প্রতি লাখ টাকা আয়ের সুযোগ

সরকারি ভরতুকি পেয়ে উৎসাহের সঙ্গে পান চাষ করছেন চাষিরা৷ The post ‘শেড নেট’ পদ্ধতিতে পান চাষে ভরতুকি, বিঘা প্রতি লাখ টাকা আয়ের সুযোগ appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 01:46 PM Jul 22, 2019Updated: 01:59 PM Jul 24, 2019

কল্যাণ চন্দ্র, বহরমপুর: বাঙালির যে কোনও শুভ সূচনা মানেই পান। ঐতিহ্যগতভাবে সম্মান প্রদর্শনের আর এক নাম পান। নববর্ষ থেকে বিবাহ, পূজা-পার্বণে পান আবশ্যিক। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা থেকে জ্যোতিষ শাস্ত্রে পানের ব্যবহার। সামাজিক জীবন ছাড়াও চর্বিত উদ্দীপক খাদ্য দ্রব্য হিসেবেও পান ব্যবহার হয়। হজম শক্তি বাড়ানো, কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়, ক্যানসার প্রতিষেধক, ব্রঙ্কাইটিস থেকে মুখের দুর্গন্ধ দূর করে এই ঘন সবুজ পাতাটি। পানে রয়েছে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এবং ভিটামিন ডি। বহুল প্রচলিত পান আদতে বহুবর্ষজীবী চিরহরিৎ লতা জাতীয় গাছ। নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ায় উৎপন্ন হয় পান।

Advertisement

[আরও পড়ুন: বৃষ্টির আকাল, গোলাপ-চন্দ্রমল্লিকার বাগানে থমকে চারা তৈরির কাজ]

মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙায় গত কয়েক বছর ধরে বিঘার পর বিঘা জমিতে পানের চাষ করা হচ্ছে। কৃষকরা বাংলা পান, মিঠা পান, কালী বাংলা পান, সিমুরালি পান উৎপন্ন করে থাকেন। ছায়াবৃত পরিবেশ, কম তাপমাত্রা এবং আদর্শ শর্ত অধিক আদ্রতায় এঁটেলমাটি থেকে বেলে-দোআঁশ মাটিতে পান চাষ করা হয়। ঈষৎ ঢালু জমিতে ঢাল বরাবর দড়ির সাহায্যে বাঁশের খুঁটি বেঁধে কৃত্রিম আয়তাকার কাঠামো তৈরি করা হয়। যাকে বলা হয় বরজ। এর ভিতরই উৎপন্ন হয় পান। কেঁচো সার, খামার সার-সহ বিভিন্ন সার ব্যবহার করছেন পান চাষিরা। ৩-৬ মাস বয়সী লতার উচ্চতা ২৫০-২৮০ সেন্টিমিটার হলেই পাতা তোলা শুরু করেন চাষিরা। অনেক ক্ষেত্রে বেশি তাপমাত্রায় ৬-৭ ঘণ্টা রেখে নীরোগকরণ করলে ভাল দাম পাওয়া যায় বাজারে।
প্রতি বছর একর প্রতি ৩০-৪০ লাখ পাতা পাওয়া যায়। উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে পান চাষ করে ভাল ফলন হলে বিঘা প্রতি ৮০ থেকে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত লাভ করতে পারেন চাষিরা। বেলডাঙা-২ নম্বর ব্লকের সোমপাড়া-১ ও রামনগর বাছরা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাছরায় ২০ বিঘা, নারিকেলবাড়িতে ১৫০ বিঘা, মহম্মদপুরে ১০০ বিঘা, গড়দুয়ারায় ৪০ বিঘা-সহ মোট ৩১০ বিঘা জমিতে পান চাষ করা হয়। সারা বছরই প্রায় পান বাজারজাত করা যায়, তবে ফ্রেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত দাম সবথেকে বেশি পাওয়া যায়। এ সময় সাধারণত বাজারে দর থাকে ১৫০ টাকা প্রতি পণ অথাৎ ৮০টি পানের। এছাড়া, বছরের অন্যান্য সময় ৪০-৮০ টাকা প্রতি পণ দাম পাওয়া যায়। চাষিরা স্থানীয় হাটে বিভিন্ন বড় আড়তদার ও ব্যবসায়ীদের কাছে পান বিক্রি করেন। তাদের মাধ্যমে ওই পান পৌঁছে যায় শিলিগুড়ি, বর্ধমান, কলকাতা হয়ে বাংলাদেশ পর্যন্ত।

[আরও পড়ুন: খেজুরিতে বিজেপি কর্মীর বাড়িতে বিস্ফোরণ, জখম শিশু-সহ ২]

বেলডাঙা-২ ব্লকে উদ্যানপালন ও কৃষি দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে প্রশিক্ষণ, উপকরণ বিলি ও শেড নেটে পান চাষের জন্য কৃষকদের ৫০ শতংশ সরকারি ভরতুকি দেওয়া হয়েছে। তবে ঝড় বা শিলাবৃষ্টির সময় পানচাষিরা সবচেয়ে বড় সমস্যার মুখে পড়েন। বেলডাঙার পান চাষি অরিজিৎ মান্না রামনগর বাছরা পঞ্চায়েতের বাছরা গ্রামে এক বিঘা জমিতে পান চাষ করেন তিনি। এখন গোটা দেশে পানের তেমন বাজার নেই। তবে সামনেই পানের দাম বাড়তে চলেছে বলে জানান অরিজিৎবাবু। অন্যদিকে, রাজ্যের উদ্যানপালন দপ্তরের সহযোগিতায় শেড নেট পদ্ধতিতে পানচাষ করে সরকারি ভরতুকি পেয়েছেন মহম্মদপুরের বীথিকা দত্ত, নারিকেলবাড়ির দিবাকর কুণ্ডু, নজর আলি মণ্ডল প্রমুখ। প্রতি ক্ষেত্রে তাঁরা সাড়ে তিন লাখ টাকা প্রকল্প ব্যয়ের জন্য ৫০ শতাংশ হারে অর্থাৎ এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা ভরতুকি পেয়েছেন।

The post ‘শেড নেট’ পদ্ধতিতে পান চাষে ভরতুকি, বিঘা প্রতি লাখ টাকা আয়ের সুযোগ appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement