রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: ভ্রমণপিপাসু বাঙালির কাছে টানা তিনদিনের ছুটি মানেই ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে পড়া। বেহালার বাসিন্দা বছর বাইশের সৌম্যদীপ শিকদারও ব্যতিক্রম নন। পরিজনদের সঙ্গে সময় কাটাতে তিনিও বাক্সপ্যাঁটরা গুছিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন। গন্তব্য দিঘা (Digha)। শুক্রবারই পৌঁছে গিয়েছিলেন। শনিবার দুপুরে সমুদ্রসৈকতে বেড়াচ্ছিলেন। আর ঠিক সেই সময় রসনাতৃপ্তির জন্য খেয়েছিলেন কাঁকড়া। তাতেই বিপত্তি। শনিবার ওল্ড দিঘার এই ঘটনায় প্রাণ গেল বেহালার বাসিন্দা এক পর্যটকের। মুহূর্তের ভুলেই বেড়ানোর আনন্দ পরিণত হল বিষাদে।
শুক্রবার সন্ধেয় পরিজনদের নিয়ে দিঘায় বেড়াতে গিয়েছিলেন বছর বাইশের সৌম্যদীপ শিকদার। শনিবার সমুদ্রে স্নানের পর কাঁকড়া খান তিনি। এরপরেই অসুস্থ বোধ করতে থাকেন। হোটেলে ফিরে যান। তবে হোটেলে ফেরার পর থেকে তাঁর শরীর আরও খারাপ হতে থাকে। তড়িঘড়ি তাঁকে দিঘা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে শেষরক্ষা হয়নি। কিছুক্ষণের মধ্যেই ছটফট করতে করতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন সৌম্যদীপ।
[আরও পড়ুন: আন্দোলনে মৃত ৭৫০ কৃষকের পরিবারকে ৩ লক্ষ টাকা করে অনুদান তেলেঙ্গানা সরকারের, চাপে কেন্দ্র]
নিহত যুবকের পরিবার সূত্রে খবর, সৌম্যদীপের কাঁকড়ায় অ্যালার্জি ছিল। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যাও ছিল তাঁর। হোটেলে ডিমের তরকারি দিয়ে ভাত খেয়েছিলেন সৌম্যদীপ। তবে সৈকতে গিয়ে কাঁকড়া ভাজা খান। তারপরই অস্বস্তি হয়। এবং শেষ পর্যন্ত মৃত্যুও হয় সৌম্যদীপের।
মার্কেটিংয়ে অনার্স নিয়ে স্নাতক সৌম্যদীপ। বর্তমানে বেসরকারি একটি সংস্থায় কাজ করতেন তিনি। টানা তিনদিনের ছুটি পেয়েছিলেন অফিস থেকে। ভেবেছিলেন এই তিনদিন পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাবেন। সে কারণেই সপরিবারে দিঘায় বেড়াতে গিয়েছিলেন সৌম্যদীপ। তবে সামান্য কাঁকড়া ভাজা খেয়ে যে এত বড় বিপত্তি ঘটবে, তা ভাবতে পারেননি কেউই। অল্প বয়সেই সৌম্যদীপের আকস্মিক মৃত্যু মানতে পারছেন না তাঁর পরিজনেরা। শোকস্তব্ধ প্রায় সকলেই। এদিকে, সৌম্যদীপের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। রবিবার পরিজনদের হাতে দেহ তুলে দেওয়া হয়েছে। অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে দিঘা থানার পুলিশ।