সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘সেকুলার’ (Secular) তথা ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দটাকে যদি সংবিধান থেকে সরিয়েও ফেলে শাসকদল, তাহলেও এদেশের ধর্মনিরপেক্ষ চেহারাটা বদলানো যাবে না। তাঁর নতুন বই ‘দ্য ব্যাটেল অফ বিলঙ্গিং’ প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এমনই দাবি করলেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা শশী থারুর (Shashi Tharoor)। পাশাপাশি তিনি সতর্ক করলেন ‘বিজেপি লাইট’ বা বিজেপির নরম সংস্করণ হওয়ার চেষ্টা করলে তাঁর দল কংগ্রেস ‘জিরো’ হয়ে যাবে।
কংগ্রেস (Congress) কি ‘নরম হিন্দুত্বে’র (Hindutwa) পথে হাঁটছে না? এই প্রশ্নের জবাবে সংবাদসংস্থা পিটিআইকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে থারুর বলেন, ‘‘আমি বহুদিন ধরেই বলে এসেছি ‘পেপসি লাইট’-এর নকল করে ‘’বিজেপি লাইট’ হতে গেলে শেষ পর্যন্ত ‘কোক জিরো’ অর্থাৎ ‘কংগ্রেস জিরো’ হয়ে শেষ করতে হবে।’’ কংগ্রেস নেতার সাফ কথা, ‘‘কংগ্রেস কোনও দিক থেকেই বিজেপি নয়। কাজেই আমাদের তাদের ‘লাইট’ সংস্করণ হওয়ার চেষ্টা করে কোনও লাভ নেই। আমার মতে আমরা তা করছিও না।’’
[আরও পড়ুন: চুলোয় যাক বিহারের ভোট! প্রচারে না গিয়ে শিমলায় ছুটি কাটাচ্ছেন রাহুল, কটাক্ষ বিজেপির]
কংগ্রেস যে হিন্দু ধর্ম ও হিন্দুত্ববাদকে আলাদা করে দেখে সেকথা আরও একবার মনে করিয়ে দেন তিনি। প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর উদাহরণ দিয়ে থারুর বলেন, রাহুল নিজেই বিষয়টি পরিষ্কার করে দিয়ে জানিয়েছেন, তিনি মন্দিরে যান। কারণ তিনি হিন্দু ধর্মে বিশ্বাস করেন। কিন্তু কোনও ধরনের হিন্দুত্বে তাঁর সমর্থন নেই। সে নরম হোক বা কড়া। তাঁর মতে, কংগ্রেস হিন্দু ধর্মকে সম্মান করে। কিন্তু হিন্দুত্ব হল এক ধরনের রাজনৈতিক মতবাদ।
ভারতে ধর্মনিরপেক্ষতা যে নীতিগত ও ব্যবহারিক দুই থেকেই সংকটের মুখে, সেকথা স্বীকার করে শশী থারুর বলেন, উপাসনার স্বাধীনতা, ধর্মীয় আচরণের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সংখ্যালঘুর অধিকার ও সকলের জন্য সমানাধিকার দেশের সাংবিধানিক পরিকাঠামোরই অন্তর্গত। ফলে একে কোনওভাবেই বদলে ফেলা যাবে না।
[আরও পড়ুন : এবার ত্রিপুরায় গণধর্ষণের শিকার ৯০ বছরের বৃদ্ধা, মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন নির্যাতিতা]
সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষকে ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইনের দানবের সঙ্গে তুলনা করে শশীর বক্তব্য, ‘‘যারা হিন্দু-মুসলিম ঐক্য নিয়ে এত ভয় পাচ্ছে, তারা কেন বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের প্রতীককে ত্যাগ করছে না?’’ কী সেই প্রতীক? থারুরের সপাট উত্তর, ‘‘সেই প্রতীক হল ভারত নিজেই।’’