স্টাফ রিপোর্টার: নবান্ন অভিযান কর্মসূচি আপাতত স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ঘরে-বাইরে চাপের মুখে বিজেপি (BJP)। প্রকাশ্যে ঘোষণা না করলেও রাজ্য বিজেপির অভ্যন্তরের খবর, ৭ সেপ্টেম্বর পূর্বঘোষিত নবান্ন অভিযান কর্মসূচি হচ্ছে না। ওইদিন করম-পরব থাকায় কর্মসূচি পিছিয়ে ১৩ সেপ্টেম্বর করার কথা ভাবা হচ্ছে। ৭ সেপ্টেম্বর কর্মসূচি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত দলীয় স্তরে নেওয়ার পরই সংবাদ মাধ্যমে সেই খবর প্রকাশিত হয়। কর্মসূচি স্থগিত করে দেওয়া নিয়ে দলের একাংশ ক্ষুব্ধ রাজ্য বিজেপির ক্ষমতাসীন শিবিরের উপর। হাঁকডাক করে ঘোষণার পরও এতবড় কর্মসূচি স্থগিত করে দেওয়ায় দলের কাছেই ধাক্কা বলে মত বিজেপির ওই একাংশের।
বিজেপির বিক্ষুব্ধ শিবির মনে করছে, এতে দলেরই মুখ পুড়ল। আবার শাসকদলের কটাক্ষ, আসলে বিজেপির জমায়েতের ক্ষমতা নেই বলে করম-পরব এর অজুহাত দিচ্ছে। কর্মসূচিতে দিল্লির সিগন্যাল নেই বলে বিজেপিকে কটাক্ষ করেছে সিপিএমও (CPM)। এই পরিস্থিতিতে ঘরে-বাইরে চাপের মুখে পড়ে এখন কার্যত অভিযান কর্মসূচি স্থগিতের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি বলে দাবি করছেন রাজ্য বিজেপি নেতারা। রবিবার দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumder) দাবি, আজ সোমবার দলীয় বৈঠকে আলোচনার পরই সঠিক সময় জানিয়ে দেওয়া হবে। যদি কোনও পরিবর্তন হয় তাহলে জানানো হবে।
[আরও পড়ুন: ‘ইডিই সবচেয়ে বিশ্বস্ত এজেন্সি’, সিবিআইয়ের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে নিজের বক্তব্যে অনড় দিলীপ]
বিজেপির একাংশের প্রশ্ন, দিন তো আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল। তাহলে সেটা নিয়ে আবার বৈঠকে আলোচনার বিষয় আসছে কেন? শনিবার অফিসিয়ালি ঘোষণা না করা হলেও রাজ্য বিজেপির এক শীর্ষ নেতা জানিয়ে দিয়েছিলেন, ৭ সেপ্টেম্বর নবান্ন (Nabanna) অভিযান হচ্ছে না। ১৩ সেপ্টেম্বর করার কথা ভাবা হচ্ছে। তারপরও কেন রবিবার সুকান্ত মজুমদার আগের সিদ্ধান্ত বহাল আছে বললেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলেও। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এতবড় কর্মসূচি হঠাৎ করে স্থগিত করে দিয়ে দলের মধ্যেই চাপের মুখে পড়েছে রাজ্য বিজেপির ক্ষমতাসীন শিবির। কারণ, দলের একটা অংশের বক্তব্য ছিল, পুরো প্রস্তুতি না নিয়েই এই কর্মসূচি ঘোষণা করে দেওয়া হয়। এদিকে, আজ হেস্টিংস কার্যালয়ে বঙ্গ বিজেপির বৈঠক। সেখানে অমিত মালব্য (Amit Malabya) ছাড়াও থাকবেন সুকান্ত মজুমদার। উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও আসছেন না রাজ্য বিজেপির নয়া কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল।
[আরও পড়ুন: পঁচিশেই বাঁধা পড়ুক কলেজ রাজনীতির বয়স, TMCP’র প্রতিষ্ঠা দিবসের আগে চর্চা তৃণমূলে]
এদিকে, হাওড়ার শ্যামপুরে বিজেপি বাঁচাও মঞ্চের একটি আলোচনা সভা হয়। সেখানে বিক্ষুব্ধ ও পুরনো বিজেপির শতাধিক নেতা-কর্মী হাজির ছিলেন। রাজ্য বিজেপির বর্তমান ক্ষমতাসীন শিবিরের হাতে বাংলা বিজেপির ভবিষ্যৎ অন্ধকারে। বঙ্গ বিজেপিকে বাঁচাতে কী করা দরকার তা নিয়ে আলোচনা হয়। বিজেপি বাঁচাও মঞ্চের তরফে সামসুর রহমান, দীপক সরকার, আশিস সাউ প্রমুখ। এদিকে, সুকান্ত মজুমদারের একটি মন্তব্য নিয়ে তৃণমূল (TMC) সাংসদ সৌগত রায় সুকান্তর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা বা বিক্ষোভ কর্মসূচি নেওয়ার কথা বলেছিলেন। এদিন সুকান্ত পাল্টা সৌগত রায়কে (Saugata Roy) আক্রমণ করে বলেন, ‘‘উনি (সৌগত) মামলা করুন বা হামলা, দুটোই সামলানোর ক্ষমতা আমার আছে।’’