নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: প্রশ্নটা সবার মনেই উঁকি দিচ্ছিল। শেষপর্যন্ত সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভারচুয়াল বৈঠকে উত্তরটা চেয়ে ফেললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৩ কোটি কোভিডযোদ্ধাকে না হয় বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়া হল, বাকিদের কী হবে? কোভিডযোদ্ধা ছাড়া বাকিদের টিকাকরণের খরচ রাজ্যকে দিতে হবে কি? প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে অবশ্য এ প্রশ্নের জবাব মেলেনি। বরং পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য দ্বিতীয় দফায় বৈঠক করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi)।
শুধু টিকারণের খরচ নয়, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তুলেছেন টিকার (COVID Vaccine) কার্যকারিতা সংক্রান্ত বৈজ্ঞানিক নথিপ্রমাণ ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়েও। এদিনের ভারচুয়াল বৈঠকে মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, “কোন দুটো টিকা দেশবাসীকে দেওয়া হবে, তা কেন্দ্রই ঠিক করে দিয়েছে। রাজ্যকে সিদ্ধান্ত নিতে দেওয়া হয়নি। ভ্যাকসিনকে চূড়ান্ত ছাড়পত্র দেওয়ার আগে বিজ্ঞানসম্মত মতামত নেওয়া দরকার।” এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, “দুটি ভ্যাকসিনের কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কি? তাহলে কেন্দ্র আগেভাগেই তা জানিয়ে দিক।” তাঁর আরও প্রশ্ন, “টিকা দু’টি- কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিনের কার্যকারিতা নিয়ে যথাযথ বৈজ্ঞানিক নথিপ্রমাণ আছে তো? ” ভ্যাকসিনকে ছাড়পত্র দেওয়ার আগে কী কী পরীক্ষায় তাকে পাস করতে হয়, তারও একটি নথি বৈঠকে তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন টিকাকরণের খরচ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
[আরও পড়ুন : রাজ্য নয়, ৩ কোটি কোভিডযোদ্ধার টিকাকরণের খরচ দেবে কেন্দ্রই, ঘোষণা মোদির]
১৬ জানুয়ারি থেকে দেশজুড়ে শুরু হচ্ছে কোভিড টিকাকরণ। তার আগে প্রস্তুতি ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা সারতে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানে তিনি জানান, ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতেই পারে। সেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও করা হয়েছে। আবার কোভিড টিকার কার্যকারিতা নিয়ে নিশ্চিন্ত করেছেন নীতি আয়োগের সদস্য অধ্যাপক বিনোদ কে পাল। তিনি জানিয়েছেন, দুটি কোভিড প্রতিষেধকই ১০০ শতাংশ কার্যকর ও নিরাপদ।
সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে দুজন মুখ্যমন্ত্রীকে বক্তব্য পেশের সুযোগ দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অন্যজন পুদুচেরির মুখ্যমন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামী। এদিনের বৈঠকে চিকিৎসক, নার্স, পুলিশ, সাফাই কর্মীদের পাশাপাশি পরিবহণ কর্মীদেরও কোভিডযোদ্ধার তালিকায় আনার আবেদন জানান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়ে দেন কোভিডযোদ্ধাদের নাম নথিভুক্তিকরণ থেকে টিকা পৌঁছে দেওয়ার সমস্ত প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে রাজ্য সরকার। তবে কোভিডযোদ্ধা ছাড়া বাকিদের বিনামূল্য টিকাকরণ কি সম্ভব? এদিনের বৈঠকেও অধরা সেই উত্তর।