সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যপথ পানামা ক্যানেলে বাড়ছে চিনা আধিপত্য! এই খাল ব্যবহারকারী মার্কিন জাহাজগুলি থেকে অন্যায়ভাবে বাড়তি কর আদায় করা হচ্ছে। প্রশান্ত এবং অতলান্তিক মহাসাগরকে যুক্ত করা এই খাল পরিচালনায় চিনের খবরদারি বরদাস্ত করা হবে না বলে বার্তা দিলেন আমেরিকার হবু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জানিয়ে দিলেন, যদি পানামা প্রশাসন সঠিকভাবে এই খাল পরিচালনা করতে না পারে সেক্ষেত্রে আমেরিকা সেটি ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি জানাবে।
উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার মধ্য দিয়ে নির্মিত দুই মহাসাগরের সংযোগ পথ পানামা খাল বিশ্ব বাণিজ্যের এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। ৮০ কিমি দীর্ঘ এই খাল নির্মাণের ফলে দক্ষিণ আমেরিকার দক্ষিণ উপকূল আর ঘুরতে হয় না জাহাজগুলিকে। ফলে সময়ের পাশাপাশি জ্বালানিও বাঁচে। ১৯১৪ সালে আমেরিকা এই খাল নির্মাণের পর দীর্ঘ বছর পানামা ও আমেরিকা যৌথভাবে খালটি পরিচালনা করে পরে ১৯৯৯ সালে খালটি পুরোপুরি পানামা সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বর্তমানে বিশ্বের ৫ শতাংশ পণ্যে পরিবহণ করা হয় এই খাল পথে। তবে অভিযোগ, সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ব বাণিজ্যের লক্ষ্যে চিনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ-এর (বিআরআই) মাধ্যমে এই খাল পরিচালনায় প্রভাব বাড়াতে শুরু করেছে চিন। তাতেই ক্ষুব্ধ আমেরিকা।
চিনের প্রভাবের জেরেই পানামা খাল ফেরত নেওয়ার বার্তা দিয়ে সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, এই খালপথ ব্যবহারে আমেরিকার থেকে অতিরিক্ত কর আদায় করছে পানামা। তাঁর কথায়, "আমাদের নৌবাহিনী এবং বাণিজ্যের প্রতি অত্যন্ত অন্যায় এবং অবিবেচক আচরণ করা হচ্ছে। পানামা যে ফি নিচ্ছে, তা হাস্যকর। আমাদের দেশকে নিয়ে এ ভাবে ছিনিমিনি খেলা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া দরকার।" পানামা সরকারকে স্পষ্ট বার্তা দিয়ে ট্রাম্প বলেন, "এই খাল পরিচালনার অধিকার শুধুমাত্র পানামা সরকারের। চিন বা অন্য কার নয়। পানামা যদি খাল পরিচালনা সঠিকভাবে করতে না পারে সেক্ষেত্রে তার অধিকার জানাব আমরা। আমরা দাবি জানাব, বিনা প্রশ্নের পানামা খাল আমাদের হাতে তুলে দেওয়া হোক।"
যদিও ডোনাল্ড ট্রাম্পের এহেন বার্তাকে কার্যত ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছেন পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনো। আমেরিকার নাম না করেই রবিবার এক ভিডিও বার্তায় তিনি জানান, "পানামা খাল ও এর-সংলগ্ন এলাকার প্রতি বর্গমিটার পানামার স্বত্বাধীন। ভবিষ্যতেও এই অঞ্চল পানামার স্বত্বাধীনই থাকবে।"