স্টাফ রিপোর্টার: বাংলা থেকে অলিম্পিকে কেউ সোনা জিতে ফিরতে পারেননি। এশিয়াডে সোনা পেয়ে অলিম্পিক থেকে সোনা আনার শপথ কার্যত নিয়েই ফেললেন প্রণব-শিবনাথ জুটি। রবিবার দমদম বিমানবন্দরে তাঁদের স্বাগত জানাতে হাজির ছিলেন হাজার হাজার মানুষ। তাঁদেরকেই এই অঙ্গীকারের কথা জানান রুইতন, ইস্কাবনের রাজারা। তাঁদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কৃতীদের বাড়িতে গিয়ে রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার তাঁদের পাশে রয়েছে।
[এশিয়াডে একাই এতগুলি দেশকে হারিয়ে দিলেন হিমা দাস!]
রবিবার রাতে বাড়ি ফিরেছেন এশিয়াডে ব্রিজের পেয়ার্স ইভেন্টে সোনাজয়ী দুই বঙ্গসন্তান। রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ব্যবস্থাপনায় এয়ারপোর্টে তাঁদের স্বাগত জানাতে গিয়েছিলেন কাউন্সিলররা। তারকেশ্বর চক্রবর্তী, অরূপ চক্রবর্তী, মিতালী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন যুব নেতারা। যাদবপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে সোনাজয়ীদের স্বাগত জানাতে গাড়ির কনভয় পৌঁছায় বিমানবন্দর চত্বরে। ছিলেন একাধিক ক্লাবের সদস্য, সমর্থকরা। দেশের সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যের মুখও যে তাঁরা উজ্জ্বল করেছেন তা জানিয়েছেন ক্রীড়ামন্ত্রী। বলেছেন, “আজ আবার প্রমাণিত হল বাংলাই সারা দেশকে পথ দেখায়। ব্রিজ খেলা এশিয়াডে প্রথম নথিভুক্ত হওয়ার পরেই সোনা নিয়ে এসেছে দুই বাঙালি।” জাকার্তা থেকে চলে এসেছেন। এবার সামুরাইয়ের দেশ থেকে পদক আনার স্বপ্ন তাঁদের। তাসের সর্বনাশা বদনাম মুছে দিয়েছেন দুই কৃতী। সালকিয়ার কৈবর্তপাড়া, যাদবপুরের রাসমণিবাগানে তাসা পার্টি, ভেঁপু, বিউগলের আওয়াজে কান পাতা দায়। মুহুর্মহু চিৎকার উঠল “থ্রি চিয়ার্স ফর প্রণব বর্ধন..”। “সালকিয়ার সোনার ছেলে শিবনাথ সরকার জিন্দাবাদ।” যেন পুজোর আগেই শুরু হয়ে গিয়েছে উৎসব। রবিবার রাতে সোনাজয়ীদের স্বাগত জানাতে তৈরি ছিল কয়েক হাজার মানুষ। রীতিমতো বাইক মিছিল করে বাংলার গবর্কে আনতে হাজির ছিলেন ক্রীড়াপ্রেমীরা।
[বাংলাদেশি ক্রিকেটারের হাতে হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন সানিয়া মির্জা!]
আর তাঁর ব্রিজ খেলার সোনালি সঙ্গী শিবনাথ সরকার বলেছেন, “ব্রিজ খেলা দাবার থেকেও কঠিন। এতে অনেক বেশি বুদ্ধির দরকার হয়। মানুষ এতদিন তাস খেলাকে জুয়া বলে ভাবত। ব্রিজ খেলা মোটেও জুয়া নয়। এই খেলায় সবাই একরকম তাস পায়। তাই ভাগ্যের কোনও ব্যাপার নেই। অলিম্পিকের জন্য পরের সপ্তাহ থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দেব।” উৎসবে উদ্বেল হাওড়ার সালকিয়ার কৈবর্তপাড়া। সকলের প্রিয় ‘কাচ্ছুদা’ ওরফে শিবনাথ সরকার এসেছেন সোনার মেডেল নিয়ে। এদিন পাড়ায় তাঁকে কাঁধে করে নিয়ে মিছিলে বেরোন এলাকার মানুষ। যে বটগাছ তলার রকে বসে তাস খেলা শুরু করেছিলেন শিবনাথ, সেই গাছতলায় ধুপধুনো দিয়ে পুজোয় মেতে ওঠেন পাড়ার লোকেরা। তাঁরা জানিয়েছেন, এই গাছতলাতে বসেই খেলা শুরু করেছিল শিবনাথ। একসময় পাড়ার লোকেরা এই গাছতলাকে বেকার পার্লামেন্ট বলত। আজ তার নতুন নাম তাস পার্লামেন্ট।