shono
Advertisement

Breaking News

বারো দিনে ৬০০ কিলোমিটার ট্রেল-রানিং, বাঙালি পর্বতারোহীকে কুর্নিশ জানাচ্ছে গোটা দেশ

এই বছর ‘মোস্ট প্রমিসিং মাউন্টেনিয়ার’-এর সম্মান পেয়েছেন তিনি। The post বারো দিনে ৬০০ কিলোমিটার ট্রেল-রানিং, বাঙালি পর্বতারোহীকে কুর্নিশ জানাচ্ছে গোটা দেশ appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 07:49 PM Jan 03, 2020Updated: 07:54 PM Jan 03, 2020

শুভময় মণ্ডল: বাস্তব আর স্বপ্নের মধ্যে সখ্যতা বড় একটা দেখা যায় না। বিশেষ করে আমআদমির জীবন মানেই রঙিন স্বপ্ন বছর পেরোনোর সঙ্গে সঙ্গেই ধুয়ে মুছে সাফ। ছোটবেলায় যেসব রঙিন স্বপ্ন মানুষ দেখে, বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা সাদাকালোর পরিণত হয়। কিন্তু সেই স্বপ্ন কি মরে যায়? সুপ্ত বাসনাকে টেন হিঁচড়ে বাস্তবের মাটিতে ফেলার আকাঙ্ক্ষা কি জাগে না? তা বোধহয় নয়। অনেক সময়ই রুক্ষ বাস্তবের পাশাপাশি নিজের স্বপ্নরাজ্যেও সন্ধান পায় মানুষ। অভিষেক তুঙ্গ তেমনই একজন। কিন্তু কে এই অভিষেক তুঙ্গ?

Advertisement

নামে এই ব্যক্তিকে চেনা যাবে না। বিখ্যাত কোনও সেলিব্রিটি তিনি নন। ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামে লক্ষ লক্ষ ফলোয়ার্সও তাঁর নেই। কিন্তু অখ্যাত এই ব্যক্তি নিজের স্বপ্নের উড়ান সফলভাবে উড়িয়েছেন। মাত্র ১২ দিনে ৬০০ কিলোমিটার ট্রেল-রানিং করে ইতিমধ্যেই পর্বতপ্রেমী ও ক্রীড়াপ্রেমীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি। পেয়েছেন এই বছরের ‘মোস্ট প্রমিসিং মাউন্টেনিয়ার’-এর পদক।

[ আরও পড়ুন: ‘বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অনুভূতিই আলাদা’, ইতিহাস গড়ে উচ্ছ্বসিত ভারতীয় গ্র্যান্ডমাস্টার ]

বছর উনত্রিশের এই যুবক আদতে একজন অধ্যাপক। মেঘনাদ সাহা ইনস্টিটিউটে মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ার পড়ান তিনি। এমন এক মাস্টারমশাইয়ের চোখে যে দিনের পর দিন ট্রেল-রানিংয়ের স্বপ্ন বুনে চলেছেন, তা কে জানত? কিন্তু পড়ানোর ফাঁকে নিজেকে গড়াপেটার কাজ করে গিয়েছেন অভিষেক। ট্রেল-রানিংয়ের জন্য সবার আগে দরকার শারীরিক সক্ষমতার। সেদিকেই মন দিয়েছিলেন তিনি। আর তার ফলও পান হাতেনাতে। পান ‘মোস্ট প্রমিসিং মাউন্টেনিয়ার’-এর সম্মান। অতীতে যে অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন বসন্ত সিংহরায়, দেবাশিস বিশ্বাস, দেবরাজ দত্ত ও মলয় মুখার্জির মতো পর্বতারোহীরা।

কী এই ট্রেল-রানিং?
অনেকে একে স্কাই-রানিংও বলে থাকেন। আসলে রক ক্লাইম্বিং বা ট্রেকিংয়ের মতো এটিও পর্বতারোহণের একটি স্পোর্টস। সাধারণত গরম আবহাওয়াসম্পন্ন অঞ্চলে এই দৌড় হয়ে থাকে। পর্বোতারোহীদের পাহাড়ের চড়াই-উতরাইকে তোয়াক্কা না করে মাইলের পর মাইল দৌড়ে যেতে হয়। পাহাড়, পর্বতারোহণ আর খেলা যারা ভালবাসে, ট্রেল-রানিং তাদের অনেকের কাছেই নেশার মতো। অভিষের তেমনই একজন।

[ আরও পড়ুন: জারিনকে হারিয়ে টোকিও অলিম্পিক কোয়ালিফায়ারে মেরি কম, ম্যাচ শেষে মেজাজ হারালেন বক্সার ]

অভিষেক তুঙ্গ সম্প্রতি সহ্যাদ্রি পর্বতমালায় ট্রেল-রানিং করেছেন। মাত্র ১২ দিনে ৬০০ কিলোমিটার দৌড়েছেন তিনি। তাঁর স্বপ্নের উড়ান শুরু হয়েছিল ২৩ ডিসেম্বর। সেদিন গুজরাটের নবগ্রাম থেকে দৌড় শুরু করেন তিনি। শেষ করেন ৩ জানুয়ারি মহারাষ্ট্রের লোনাভালায়। তবে তাঁকে যদি শুধু ট্রেল-রানিংয়ের জন্য বাহবা দেওয়া হয়, তবে তাঁর কৃতীত্বকে ছোট করা হবে। কারণ দৌড়ের সময় তিনি নিজের জিনিসপত্র নিজেই বহন করেছেন। সাধারণত এসব ক্ষেত্রে কেউ নিজের জিনিস নিজে বহন করে না। এতে দৌড়ে অসুবিধা হয়। কিন্তু অভিষেক ব্যতিক্রম। ৫ কেজি ওজনের ব্যাগ নিয়ে প্রতিদিন তিনি ৫০ কিলোমিটার দৌড়তেন। শেষ দু’দিনের রাস্তা ছিল বেশ দুর্গম। প্রায় পুরোটাই পাহাড়, জঙ্গলে পরিপূর্ণ। ভাঁড়ারও নিঃশেষ। এনার্জি বারের ভরসায় পাড়ি দিয়েছেন প্রায় ৪৮ ঘণ্টার পথ। সম্ভবত এই রুটে আগে কেউ এতটা দৌড়াননি। সেই হিসেবে এটা কিন্তু একটা রেকর্ডও।

অভিষেকের এই যুদ্ধজয়ে গর্বিত গোটা বাংলা। ফেসবুকে পোস্ট হয়েছে তাঁর ছবি। আর সেখানে একের পর এক আসছে শুভেচ্ছাবার্তা। অনুরাগীদের শুভেচ্ছাবার্তায় তিনি আপ্লুত। তাদের ধন্যবাদও দিয়েছেন তিনি। কীভাবে তিনি জার্নি শেষ করেছেন, অনুরাগীদের জন্য তার কোলাজ তিনি রেখে দিয়েছেন তাঁর ফেসবুকের ছবিতে। তাতে যেমন রয়েছে পশ্চিমঘাট পর্বতমালার সৌন্দর্যগাথা, তেমনই রয়েছে তাঁর যাত্রাসঙ্গী ট্রেকিং ব্যাগ আর জুতোর কথা। অভিষেকের এই জেদ আশা জাগিয়েছে অনেকের মনে। হয়তো বাংলা আরও এক পর্বতারোহীকে পেতে চলেছে যার ইতিবৃত্ত ধ্বনিত হবে বিশ্বজুড়ে। ভবিষ্যৎ তো এভাবেই গড়ে ওঠে।

The post বারো দিনে ৬০০ কিলোমিটার ট্রেল-রানিং, বাঙালি পর্বতারোহীকে কুর্নিশ জানাচ্ছে গোটা দেশ appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup ছাঁদনাতলা toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার