শুভঙ্কর বসু: চেষ্টা করা হয়েছিল। একবার নয় দু-দু’বার। তবু হল না। কবি শঙ্খ ঘোষের (Shankha Ghosh) প্রয়াণের খবর শুনে এই আক্ষেপই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) অন্দরে। বুধবার কোভিডের (COVID-19) ছোবলে বাংলার সাংস্কৃতিক জগতে ইন্দ্রপতন ঘটেছে। চলে গিয়েছেন শঙ্খ ঘোষ। করোনা (Corona Virus) আক্রান্ত হওয়ার আগে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। সেই মতো সমস্ত আয়োজন হয়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী তাঁর বাড়ি গিয়ে ভোট নিয়ে আসার কথা ছিল কমিশনের কর্মীদের। কিন্তু তা হল না। ১৪ এপ্রিল জানা যায়, কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন কবি। তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ছিল। শোনা গিয়েছে, হাসপাতালে যেতে চাননি বর্ষীয়ান কবি। তাই বাড়িতেই চিকিৎসা চলছিল।
গত বছর ফেব্রুয়ারিতে অবশ্য বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন শঙ্খবাবু। তারপর সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরলেও নিয়মিত চিকিৎসা চলছিল। শঙ্খ ঘোষ কোভিড আক্রান্ত হওয়ার খবর পৌঁছায় রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তরেও। এরপরই তাঁর বাড়ির লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে কমিশন। ঠিক হয়, পিপিই কিট পরে যাবতীয় ব্যবস্থা নিয়ে একটি বিশেষ দল পাঠানো হবে কবির বাড়িতে। তাঁর মেয়েকে সেকথা জানানোও হয়েছিল। সেই মতো দিন কয়েক আগে ভোটগ্রহণের জন্য শঙ্খ ঘোষের বাড়িতে একটি টিম পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু কবি এতটাই অসুস্থ ছিলেন যে ভোট না নিয়েই ওই বিশেষ দলকে ফিরে আসতে হয়।
[আরও পড়ুন: রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্পন্ন হবে শঙ্খ ঘোষের শেষকৃত্য, শোকপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর]
এরপর আবারও চেষ্টা করা হয়। শেষবার মঙ্গলবার দুপুরে ফের একটি বিশেষ দল পাঠানো হয় তাঁর বাড়িতে। কিন্তু এবারও জানিয়ে দেওয়া হয়, শারীরিক পরিস্থিতি বেশ খারাপ। ফলে ফের ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসতে হয় ওই বিশেষ দলকে। রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক দপ্তরের এক কর্তার কথায়, “শঙ্খবাবুর পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই ওই বিশেষ দল গড়া হয়েছিল। ভোটগ্রহণের আপ্রাণ চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি এতটাই অসুস্থ ছিলেন যে দু’বারই ওই বিশেষ দলকে ফিরে আসতে হয়। এটাই আক্ষেপ।” মঙ্গলবার রাত থেকে শঙ্খ ঘোষের শারীরিক অবস্থা ক্রমশ খারাপ হয়। শেষপর্যন্ত বুধবার সকালে তাঁকে ভেন্টিলেটরে দেওয়া হয় কিন্তু যাবতীয় চেষ্টা ব্যর্থ হয়। সাড়ে এগারোটায় ভেন্টিলেটর খুলে নেওয়া হয়। বহু চেষ্টা সত্ত্বেও প্রবাদপ্রতিম এই ব্যক্তিত্বের ভোট না নিতে পারার আক্ষেপ দিনভর ঘুরপাক খাচ্ছে কমিশনের অন্দরে।