স্টাফ রিপোর্টার: বাংলা ছেড়ে যাওয়া তাঁর নিশ্চিত। সিএবি তাঁকে এনওসি-ও (NOC) দিয়ে দিয়েছে। আগামী ক্রিকেট মরশুমে অশোক দিন্দা কোথায় খেলবেন, সেটা সাতদিনের মধ্যে পরিষ্কার হয়ে যাবে। কিন্তু যেখানেই যান, বাংলার জার্সিতে যে আর কখনও বোলিং করবেন না, সেটা পরিষ্কার করে দিলেন দিন্দা। বলে দিলেন, সিএবি তাঁকে প্রস্তাব দিলে তিনি টিমের বোলিং কোচ হয়ে ফিরে আসতে রাজি। কিন্তু বাংলার হয়ে বোলিং আর নয়।
“আমি ঠাট্টা করছি না,” বৃহস্পতিবার বলে দেন দিন্দা (Ashok Dinda)। “যদি আমাকে ভবিষ্যতে বাংলার বোলিং কোচ হওয়ার প্রস্তাব দেয় সিএবি, অবশ্যই নেব। আমি বারবার বলে এসেছি, বাংলা আমাকে সব দিয়েছে। যতটুকু যা হয়েছি, বাংলা খেলে হয়েছি। জিজ্ঞাসা করে দেখতে পারেন, এবার যখন টিমে ছিলাম না, তখনও ঈশান পোড়েল, আকাশদীপদের বোলিং টিপস ফোন করে দিয়েছি কি না? আমার সমস্যাটা টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে। আরে, দাদিকে (সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়) যখন ছাড়া হয়নি, আমি কে? আর বাংলার হয়ে বল করব না,” যোগ করেছেন বঙ্গ পেসার।
[আরও পড়ুন: অবসর নিলেও এখনই ICC’র ‘হল অফ ফেমে’ জায়গা হচ্ছে না ধোনির, কিন্তু কেন?]
দিন্দা কোথায় যাচ্ছেন, এখনও খোলসা করে কিছু বলছেন না। তবে সম্ভাবনা বেশি নাকি গোয়ায় খেলার। কিন্তু কেন যাচ্ছেন, সেটা খোলাখুলি বলছেন। “দেখুন পারফরম্যান্স বা স্কিল দেখিয়ে কেউ আমাকে টিম থেকে বার করতে পারত না। গত ছ’বছর ধরে রনজি ট্রফিতে বাংলার সেরা উইকেটশিকারি ছিলাম আমি। গত ১৫ বছর ধরে ক্রিকেটে তিনটে ফর্ম্যাটে টানা উইকেট নিয়ে গিয়েছি। কিন্তু অরুণলাল কোচ হয়ে আসার পরই সব পালটে গেল। উনি আসার পর থেকে বলতে শুরু করলেন, আমি ফিট নই। আমি সুইং, পেস, সব হারিয়েছি। যথেষ্ট বোলিংও করছি না। উনি বললেন, আমাকে ইয়ো ইয়ো টেস্ট পাশ করতে হবে। দিলাম পরীক্ষা। ১৬-র বদলে ১৬.২ পেলাম। তারপর বলা হল, আমাকে লং ডিসট্যান্স দৌড়তে হবে। ফিটনেসের প্রমাণ দিতে। গত বেশ কয়েক বছর ধরে আমি সেটা করিনি। পাওয়ার ট্রেনিং করতাম শুধু। কারণ আমি তাতেই অভ্যস্ত ছিলাম। বলে দিয়েছিলাম, ও রকম লম্বা দৌড়নো আমার পক্ষে সম্ভব নয়,” টানা বলে যান দিন্দা।
সঙ্গে যোগ করেন, “উনি আর একদিন বললেন, রাস্তায় দৌড়তে হবে। আরে, আমাকে অ্যান্ড্রু লিপাস বলেছিলেন যে রাস্তায় কখনও দৌড়বে না। তাতে মাসল শক্ত হয়ে যায়। কিন্তু লালজি বললেন, গোটা টিম যখন সেটা করছে, আমাকেও করতে হবে। আমি পরিষ্কার না করে দিয়েছিলাম। তাতে উনি রেগে যান।”
[আরও পড়ুন: বার্সেলোনা ছাড়লেই বিপদ, মেসির উপর নিষেধাজ্ঞা চাপাতে পারে FIFA!]
বাংলার বোলিং কোচ রণদেব বসুকে নিয়েও বিষোদ্গার করেন দিন্দা। যাঁর সঙ্গে প্রকাশ্য ঝামেলার জেরে গত রনজি চলাকালীন টিম থেকে বাদ পড়তে হয় দিন্দাকে। “রণদেবের সঙ্গে কোনও কালেই বনিবনা ছিল না আমার। কোচ হিসেবে ওকে সম্মান করলেও মানুষ হিসেবে করি না। ও আমার অনেক ক্ষতি করার চেষ্টা করেছে। প্রথম প্রথম গুরুত্ব দিতাম না। কিন্তু গত রনজিতে অন্ধ্রপ্রদেশ ম্যাচের আগে টিম মিটিংয়ে দেখলাম, রণদেব স্ট্র্যাটেজি নিয়ে ফিসফিস করছে অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরণের সঙ্গে। আমি প্রথমে বারণ করি। বলি, যা বলার জোরে বলো। প্ল্যানিংয়ের আমিও অংশ হতে চাই। কিন্তু ও আবার ফিসফিস করতে শুরু করে। যার পর থাকতে না পেরে আমি ফেটে পড়়ি। তারপর মাঠেও ওকে একদিন গালিগালাজ করি আমি, মানছি। কিন্তু ও কখনওই আমার সঙ্গে সম্পর্কটা ঠিক রাখার চেষ্টা করেনি। আর লালজি? উনি বললেন, রণদেবের কাছে ক্ষমা চাইতে। বললাম, আগে বিচার তো করুন, কে ঠিক, কে ভুল। উনি শুনলেন না। আমিও বলে দিলাম, বাংলায় আর আমি নেই।”
The post বিদায়বেলায় বাংলার কোচেদের একহাত নিলেন দিন্দা, কোথায় খেলবেন পরের মরশুমে? appeared first on Sangbad Pratidin.