সৈকত মাইতি, তমলুক: ভিড়েঠাসা বাজারের মধ্যেই হঠাৎই চিৎকার, ‘ধর ধর ধর’। কিছু বুঝে ওঠার আগেই এগলি ওগলি ঘুরে চোখের পলকে হাওয়া মাদক মামলার অভিযুক্ত দুই আসামী। বেশ কিছুটা ধাওয়া করেও তাদের নাগাল পায়নি দুই পুলিশকর্মী। মঙ্গলবার ভরদুপুরে তমলুকের এমন ঘটনায় তাজ্জব পুলিশ থেকে সাধারণ মানুষ সকলে। এদিন মেদিনীপুর সেন্ট্রাল জেল থেকে তমলুক (Tamluk Police) আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল আসামীদের। সেই সময় জেলখানা মোড়ের কাছে পুলিশ ভ্যানের জানলার রড বেঁকিয়ে চম্পট দেয় দুই আসামী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক মাস আগেই মাদক পাচারের অভিযোগে দুই অভিযুক্তকে (Prisoners) গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এদিন অন্যান্য আসামীদের সঙ্গে তাদের প্রিজন ভ্যানে চাপিয়ে আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তখন জেলখানা মোড় চত্বরে যানজটে আটকে যায় প্রিজন ভ্যানটি। সেই সুযোগ কাজে লাগায় অভিযুক্তরা। সেই সময় প্রিজন ভ্যানের ডানদিকের জানালার রড বাঁকিয়ে এক অভিযুক্ত আচমকা রাস্তার উপর ঝাঁপ দেয়। দৌড়তে শুরু করে শহরের অলি-গলি ধরে। পুলিশকর্মীরা পিছু ধাওয়া করতে গেলে আরেক আসামী পালিয়ে যায়।
[আরও পড়ুন: কাটোয়ায় মিলল অস্ত্র কারখানার হদিশ, ডেকরেটর্সের ব্যবসার আড়ালেই তৈরি হত বন্দুক-গুলি]
প্রায় সঙ্গে সঙ্গে তমলুকের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অতীশ বিশ্বাসের নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী তল্লাশি অভিযান শুরু করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা তাদের জানায়, ভ্যান থেকে লাফ মেরে নেমে প্রাণপণে দৌড়তে শুরু করে। জেলখানা মোড় থেকে মালি জঙ্গলপাড়া হয়ে আনন্দমোহন গেস্ট হাউস, ধোপাপাড়া, মীর বসতি হয়ে একেবারে জনসমুদ্রে মিলিয়ে যায়। জেলখানা মোড় এলাকার চা ব্যবসায়ী সহদেব সাউ বলেন, “আমরা বাজারের মধ্যে রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে ছিলাম। পুলিশের আওয়াজে কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুই আসামী আমার পিছন দিয়ে দৌড়ে পালায়। পরে বুঝতে পারি আসামীরা পালিয়েছে।”
এদিকে দুই আসামীকে ধরতে জেলার সীমানা জুড়ে তল্লাশি চালাচ্ছে জেলা পুলিশ। খবর দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন থানায়। যদিও এদিন সন্ধে পর্যন্ত তাদের ধরা যায়নি। এ বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ সুপার অমরনাথ কে জানিয়েছেন, “মেদিনীপুর সেন্ট্রাল জেল থেকে আদালতে তোলার উদ্দেশে তমলুকে নিয়ে আসা হচ্ছিল আসামীদের। সে সময়ই কোনওরকম ভাবে দুই আসামী পালিয়ে যায়। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”