স্টাফ রিপোর্টার: ওমিক্রন ঝড় চলছে রাজ্যে। দু’টি সংক্রমণে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের হামলা দেখেছে দেশ—সহ পশ্চিমবঙ্গ। রোজ নিয়ম করে আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে। এবার এখনও করোনায় মৃত্যু কিছুটা কম। কিন্তু যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে জানুয়ারির শেষে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যাটা ৩০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে স্বাস্থ্য ভবনের আশঙ্কা। আর এর নেপথ্যে খলনায়ক ওমিক্রন।
বিদেশ-ফেরত তো বটেই, পাড়া বা বাড়িতে থেকেও ওমিক্রন (Omicron) ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমিত পাচ্ছে স্বাস্থ্য ভবন। এমনই তথ্য হাতে এসেছে স্বাস্থ্যকর্তাদের। ফলে চিন্তা আরও কয়েকগুণ বেড়েছে। অবস্থা এমন জায়গায় গিয়েছে যে কোথাও কোথাও তো ডেল্টা বা ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্টের থেকেও ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। কীভাবে ফুলকির মতো ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ছড়াচ্ছে তা অস্পষ্ট। কন্ট্যাক্ট ট্রেসিংও কার্যত অসম্ভব এই অবস্থায়। কারণ, প্রতি দশ জনের মধ্যে আট জনের করোনা (Corona Virus) উপসর্গের লক্ষণ স্পষ্ট এমনটাই ব্যাখ্যা স্বাস্থ্যকর্তাদের।
[আরও পড়ুন: Dilip Ghosh: ‘বিজেপি শাসিত রাজ্যে করোনা কম, বাড়ছে অবিজেপি রাজ্যে’, আজব দাবি দিলীপের]
স্বাস্থ্য ভবনের শনিবারের বুলেটিন অনুযায়ী রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ২৭। তবে এদিনই কল্যাণীর জিনোম সিকোয়েন্স ল্যাবরেটরি থেকে যে তথ্য এসেছে তাতে নড়েচড়ে বসেছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। ৩১ ডিসেম্বর থেকে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত যত নমুনা পাঠানো হয়েছিল তার মধ্যে সিংহভাগ অর্থাৎ ৭১.৩ শতাংশেরই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট। তুলনায় ডেল্টা অর্থাৎ গত দু’টি ঝড়ে যে ভ্যারিয়েন্ট পশ্চিমবঙ্গ—সহ গোটা দেশকে টালমাটাল করেছিল, সেই ডেল্টা মাত্র ৩.৭ শতাংশ নমুনায় পাওয়া গিয়েছে। উদ্বেগের আরও একটি কারণ রয়েছে। প্রায় ৬.৭ শতাংশ নমুনা করোনা পজিটিভ যেগুলির ভাইরাস ঠিক কোন ভ্যারিয়েন্টের তা ল্যাবরেটরি পরীক্ষায় চিহ্নিত করা যায়নি। ফলে এমন চিহ্নিত না হওয়া করোনা একটা বড় দুর্ভাবনার জায়গা বলেই মনে করছেন মাইক্রো বায়োলজিস্টরা।
করোনার দু’টি ডোজকেও গুরুত্ব দেয় না ওমিক্রন। অর্থাৎ এই ভ্যারিয়েন্ট এতটাই মারমুখী এবং এত দ্রুত সংক্রমিত হয় যে ভ্যাকসিনের কাছেও হার মানে না। পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ৮১ শতাংশ ওমিক্রন আক্রান্তের ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজ নেওয়া রয়েছে। আবার শিশুদের মধ্যে মোট আক্রান্তের ৬৯ শতাংশই ওমিক্রন পজিটিভ। পরীক্ষায় আরও জোর দিতে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় চারটি পৃথক দল গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি দলে ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান ও চিকিৎসক রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, রাজ্যে চুক্তিভিত্তিতে ১,২৪৮ জন ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান নিয়োগ করা হবে।