বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: পড়াশোনা করতে দিতে রাজি নন স্বামী। কিন্তু লেখাপাড়া করবেন বলে নাছোড়বান্দা স্ত্রী। তা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি লেগেই ছিল। যার পরিণতি হল মর্মান্তিক। মানসিক অবসাদে আত্মঘাতী স্ত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার (Nadia) হাঁসখালি থানার গয়েশ এলাকায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গৃহবধূর নাম শম্পা দাস (২২)। শম্পার বাপের বাড়ি হাঁসখালি থানার গয়েশ এলাকায়। সাত মাস আগে কৃষ্ণগঞ্জ থানার জয়ঘাটা মাজদিয়া এলাকায় গোপাল বিশ্বাসের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তাঁর। গোপাল বিশ্বাস কলকাতার একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করেন। কর্মসূত্রে বেশিরভাগ সময় কলকাতাতেই থাকেন। সপ্তাহে একদিন যেতেন বাড়িতে। শম্পা দাস বগুলা শ্রীকৃষ্ণ কলেজের বি এ তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। গত ৩ ফেব্রুয়ারি তার তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা শেষ হয়। এরমধ্যেই গোপালের স্ত্রীকে শ্বশুরবাড়ি থেকে আনতে যাওয়ার কথা ছিল। এর মাঝেই ঘটে গেল অঘটন। গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হলেন ছাত্রী।
[আরও পড়ুন: জমি নিয়ে অর্মত্য সেনকে ফের নোটিস দিয়েও ফিরিয়ে নিল বিশ্বভারতী, কারণ ঘিরে ধন্দ]
শম্পা দাসের কাকা প্রসেনজিৎ দাসের কথায়, “জামাই কিছুতেই ভাইঝিকে পড়াশুনা করতে দিতে রাজি ছিল না। রান্নাবান্না-সহ সংসারের কাজ করুক স্ত্রী, এটাই চাইত।” মৃতার কাকার অভিযোগ, বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে যে সোনার জিনিস দেওয়া হয়েছিল, তা বিক্রি করে মাঝেমধ্যেই মদ্যপান করত জামাই। তা নিয়েও অশান্তি হত। সব কিছু নিয়েই মৃতার সঙ্গে তাঁর স্বামীর অশান্তি চলছিল। জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে ফোনে দম্পতির মধ্যে ঝামেলা হয়। এরপরই নাকি গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন শম্পা।
জানা গিয়েছে, স্ত্রীর মৃত্যুর খবর পেয়েও শ্বশুরবাড়ি যায়নি গোপাল। উলটে ঘরে তালা দিয়ে পরিবারের লোকজন নিয়ে পালিয়ে গিয়েছে। মৃতার কাকার অভিযোগ, “জামাইয়ের জন্যই আমার ভাইঝি আত্মহত্যা করেছে। আমরা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। জামাইয়ের কঠোর শাস্তি হোক।” পুলিশের একজন আধিকারিক জানিয়েছেন, মৃত ওই গৃহবধুর বাপের বাড়ির লোকজনের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।