সৌরভ মাজি, বর্ধমান: কলেজের হস্টেলে মানসিক এবং শারীরিকভাবে হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন। পুলিশ এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগও জানিয়েছিলেন। আর সেটাই হল কাল। প্রতিবাদ করায় আবারও আক্রান্ত হলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তরের উইমেন্স স্টাডিজ বিভাগের এক ছাত্র। বৃহস্পতিবার রাতে একদল পড়ুয়া ও বহিরাগতরা তাঁকে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। সুবিচারের আশায় বাধ্য হয়ে ই-মেলের মাধ্যমে রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ জানালেন নির্যাতিত।
স্নাতকোত্তর উইমেন্স স্টাডিজ বিভাগের ওই ছাত্র রবীন্দ্র হস্টেলে থাকেন। গত ২৭ অক্টোবর বর্ধমান থানায় শারীরিক ও মানসিক অত্যাচারের অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি জানান, বেশ কয়েকদিন ধরেই হস্টেলে তাঁর উপর নির্যাতন করা হচ্ছে। ২৬ অক্টোবর মধ্যরাতে তাঁকে হস্টেল থেকে বের করে দেয় কয়েকজন প্রাক্তনী। তারা অনৈতিকভাবে হস্টেলে থাকে বলেও অভিযোগ। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে। সেই সময় দুর্গাপুজোর ছুটি ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে। পুলিশের তরফে অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে জানানো হয়। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্লেসমেন্ট অফিসার প্রদীপকুমার রায় নির্যাতিত ওই ছাত্রকে হস্টেলে পৌঁছে দিতে যান। নির্যাতিতকে সমর্থনকারী বেশ কয়েকজন ছাত্রও সেই সময় যায়। সূর্যেন্দু নামে আইন বিভাগের এক ছাত্র রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ জানান, তাঁদের সামনেই ব়্যাগিংয়ের শিকার হওয়া ওই ছাত্রকে আবারও হেনস্তা করা হয়। গালিগালাজ ও ভয় দেখানো হয়। তাদের অত্যাচারে আতঙ্কিত ওই ছাত্র হস্টেলেও ঢুকতে পারেনি। কিছু ছাত্র ও বেশ কিছু বহিরাগত এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলেও অভিযোগ সূর্যেন্দুর।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও বিষয়টিকে হালকাভাবে নিচ্ছে না। ইতিমধ্যেই উপাচার্য নিমাইচন্দ্র সাহা অ্যান্টি র্যাগিং কমিটিকে ঘটনার তদন্তে করে রিপোর্ট দিতে বলেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার তাফাজল হোসেন বলেন, “ঘটনার বিষয়ে আমরা আগেই তদন্ত শুরু করেছি। বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে সেটিও তার মধ্যে সংযুক্ত করা হয়েছে। তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তবে সুজাউদ্দিন ঘটনার বিষয়ে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউকে কিছই না জানিয়ে সরাসরি থানায় চলে যাওয়ায় অনেকেই বিস্মিত। আধিকারিকদের কেউ কেউ জানাচ্ছেন, প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নজরে আনলে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারত।
[আরও পড়ুন: শ্রীনগরে সেনা ক্যাম্পে আটক ৯ বাঙালি শ্রমিক, উদ্বিগ্ন পরিবার]
এসএফআই-এর জেলা সম্পাদক অনির্বাণ রায়চৌধুরি বলেন, “অবিলম্বে এই ঘটনায় দোষীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি আমরা।”শুক্রবার দুপুরে ই-মেল করে রাজ্যপালের কাছে নালিশ জানিয়েছেন সূর্যেন্দু বসু নামে এক ছাত্র। রাজ্যপালের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ারও আরজি জানানো হয়েছে। এসএফআই-এর তরফে উপাচার্য নিমাইচন্দ্র সাহার কাছে ঘটনার বিষয়ে স্মারকলিপিও জমা দেওয়া হয়েছে।
The post র্যাগিংয়ের প্রতিবাদ করায় ফের মারধর, রাজ্যপালের দ্বারস্থ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র appeared first on Sangbad Pratidin.
