অর্ণব দাস, বারাকপুর: ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে দিন কয়েক ধরেই প্রতিবাদে শামিল হয়েছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একটা বড় অংশ। আইনটি প্রত্যাহারের দাবিতে জেলায় জেলায় চলছে কেন্দ্র বিরোধী বিক্ষোভ। কিন্তু তার আড়ালেই রাজ্যের স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে সাম্প্রদায়িক অশান্তির গুজব ছড়াচ্ছে। তা থেকে রাজ্যবাসীকে সতর্ক করতে পুলিশের শীর্ষ কর্তা থেকে মুখ্যমন্ত্রী, শাসকদলের নেতারা বারবার শান্তির বার্তা দিয়েছেন। শনিবার মুখ্যমন্ত্রী নিজে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানিয়েছেন, নয়া আইন এরাজ্যে লাগু হচ্ছে না। তাই উত্তেজনা কারণ নেই, সকলে শান্তি বজায় রাখুন। এবার একই বার্তা দিলেন শাসকদলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নিশানায় অবশ্য কেন্দ্র।

শনিবার সোদপুরে এক বেসরকারি হাসপাতালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বললেন, ''বাংলার উন্নয়ন, সাফল্যের খতিয়ান না দেখে কেউ বা কারা আগুন জ্বালাতে চাইছে। ধর্মে ধর্মে ভাগাভাগি করে অশান্তি করতে চাইছে। কেন্দ্র বকেয়া টাকা না দিয়ে ভাতে মারতে চায়। কিন্তু পারবে না। আমি এই মঞ্চ থেকে দাঁড়িয়ে বলে যাচ্ছি, যেখানে যাঁরা আমার কথা শুনছেন, আপনারা বাংলার কৃষ্টি-সংস্কৃতি ভুলে যাবেন না। সবাই নিজের নিজের এলাকায় শান্তি, সম্প্রীতি বজায় রাখুন। কোথাও কোনও অন্যায় হতে দেবেন না। যারা অশান্তি করার চেষ্টা করছে, তাদের থেকে সতর্ক থাকুন।''
মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা-সহ একাধিক জেলার স্পর্শকাতর এলাকায় অশান্তি ছড়িয়েছে। চলেছে গোলাগুলি। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ২ জনের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে। এসবের জেরে ভুগতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা অশান্তি দমনে সক্রিয়। রাজ্য পুলিশের তরফে ডিজি রাজীব কুমার, এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) বারবার রাজ্যবাসীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন, শান্তি বজায় রাখুন, গুজব ছড়াবেন না। সোশাল মিডিয়ায় একই বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও শান্তির বার্তা দিলেন। কেন্দ্রকে নিশানা করে তাঁর পরোক্ষ বার্তা, বাংলায় ইচ্ছে করে অশান্তি বাঁধানোর চেষ্টা চলছে। সকলকে সংযত থাকতে হবে, সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বাংলার ২৬ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীর চাকরি বাতিল নিয়েও প্রতিক্রিয়া দেন অভিষেক। তাঁর মন্তব্য, "এই রায়ে ওরা ৫৯ লক্ষ জব কার্ডধারীর মনরেগা প্রকল্পের অর্থ আটকে দিয়েছে। কিছু অসঙ্গতির কারণে 'আবাস' প্রকল্পের টাকাও ছাড়া হচ্ছে না। যারা প্রকৃতপক্ষে অনুপযুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কিন্তু কয়েকজনের জন্য হাজার হাজার প্রাপ্য চাকরি কেড়ে নেওয়া যায় না। এটা ন্যায়সঙ্গত নয়।"