নিজস্ব সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি: তেইশের পুনরাবৃত্তি নয়। চব্বিশের পথেই মাধ্যমিকের প্রস্তুতি শুরু করে দিল বনদপ্তর। ফেব্রুয়ারির ১০ তারিখ থেকে শুরু হচ্ছে এই বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা। জলপাইগুড়ি জেলার ১০০টি পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষায় বসবে মোট ৩৬ হাজার ৬৮৮ জন ছাত্রছাত্রী।

২০২৩ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক পরীক্ষার শুরুর দিনই হাতির হামলায় মৃত্যু হয় জলপাইগুড়ির বৈকুন্ঠপুরের জঙ্গল সংলগ্ন টাকিমারির বাসিন্দা অর্জুন দাসের। ঘটনার পুনরাবৃত্তি আটকাতে জঙ্গল পথে আঁটোসাঁটো হয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা। দুর্ঘটনা এড়িয়ে নির্বিঘ্নেই শেষ হয় গত বারের মাধ্যমিক। এবারও একইভাবে যাতে জঙ্গল সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা ছাত্রছাত্রীরা নিরাপদে পরীক্ষা দিতে পারে তার প্রস্তুতি শুরু করে দিল বনদপ্তর।
উত্তরবঙ্গ বন বিভাগের মুখ্য বনপাল এসকে মোলে জানান, জঙ্গল সংলগ্ন স্পর্শকাতর ও অতি স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিতকরণের কাজ হয়েছে। জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় যে সকল বনবস্তি এবং গ্রাম রয়েছে সেখানে কত পরীক্ষার্থী রয়েছে তার তালিকাও তৈরি করা হচ্ছে। এই তালিকায় যুক্ত করা হচ্ছে চা বাগান এলাকাকেও।
বনপাল জানান, জঙ্গল সংলগ্ন বেশ কিছু চা বাগান রয়েছে যেখানে হাতি, চিতাবাঘের আনাগোনা রয়েছে। মাঝে মধ্যে বাইসন ও ঢুকে পড়ে চা বাগানে। ভোরের দিকে এদের গতিবিধি লক্ষ্য করা যায়। পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে ছাত্রছাত্রীদের যাতে কোনও ভাবেই হামলার মুখে না পড়ে তার জন্য বাড়তি নজরদারির ব্যবস্থা থাকবে। জানা গিয়েছে, বৈকণ্ঠপুরের জঙ্গলের যে এলাকায় মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিন দুর্ঘটনা ঘটেছিল সেই এলাকাকে অতি স্পর্শকাতর হিসাবে আগেই চিহ্নিত করছে বনদপ্তর।
১ ফেব্রুয়ারি থেকে জঙ্গলের বন্যপ্রাণী বিশেষ করে হাতিদের গতিবিধির উপর নজরদারি শুরু
হবে। মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত লোকালয় সংলগ্ন জঙ্গলে হাতিদের গতিবিধির উপর নজরদারি চালাবেন বনকর্মীরা। বিপদ বুঝলে পরীক্ষার্থীদের সেফ রুট হিসেবে অন্য রাস্তাও ব্যবহার করা হতে পারে। কোথায় কী গাড়ির ব্যবস্থা থাকবে তা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বসে রুট ম্যাপ তৈরি করে নেবে বনদপ্তর। চা বাগানে কোথাও চিতাবাঘ কিংবা হাতি-সহ অন্য কোনও বন্যপ্রাণীর উপস্থিতি নজরে এলে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে। ইতিমধ্যেই প্রতিটি রেঞ্জ, স্কোয়াড, বিটকে সতর্ক করে দিয়েছে বনদপ্তর।
বনপাল এস কে মোলে বলেন, "পরীক্ষার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে পরীক্ষা দিতে পারে তার জন্য আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। মাধ্যমিকের পাশাপাশি জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় এই ব্যবস্থা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য ও কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।