সুব্রত বিশ্বাস: দীর্ঘ জটিলতা কাটিয়ে অবশেষে সারদা মায়ের পবিত্র জন্মস্থান জয়রামবাটি পর্যন্ত গড়াল রেলের চাকা। ফলে পঁচিশ বছর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিকল্পিত প্রকল্প বাস্তবায়িত হওয়ার পথে এগিয়ে গেল অনেকটাই। বৃহস্পতিবার কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি শুভময় মিত্র রেল চলচলের ব্যবস্থা পরীক্ষামূলকভাবে খতিয়ে দেখেন নতুন এই শাখায়। প্রথম চলা বিশেষ ট্রেনে ছিলেন হাওড়ার ডিআরএম সঞ্জীবকুমার ও কনস্ট্রাকশনের ইঞ্জিনিয়াররা। জয়রামবাটি ট্রেন পৌঁছতেই উপচে পড়ল ভিড়।

বড় গোপীনাথপুর থেকে জয়রামবাটি ৭.১ কিলোমিটার নতুন এই রেলপথ পরীক্ষামূলকভাবে সফল হলেই মিলবে সবুজ সংকেত। এরপরই বিষ্ণুপুর থেকে সরাসরি জয়রামবাটি ট্রেন পথে যাত্রা করা যাবে। লোকাল এক্সপ্রেস সবই চলবে ওই লাইনে। বিষ্ণুপুরের সঙ্গে সারদা মায়ের জন্মস্থান জয়রামবাটি সহ ঠাকুর রামকৃষ্ণের জন্মস্থান কামারপুকুর জুড়ে দেওয়ার উদ্যোগ শুরু হয় ২০০০ সালের গোড়ায়। তৎকালীন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন বিষ্ণুপুর থেকে জয়রামবাটি হয়ে তারকেশ্বর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ করা হবে। ধাপে ধাপে প্রকল্পের কাজ শেষ করে কখনও বিষ্ণুপুর থেকে গোকুলনগর পর্যন্ত আবার কখনও সেই রেলপথ সম্প্রসারিত করে বিষ্ণুপুর থেকে ময়নাপুর পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু করেছে রেল।
কিন্তু তারপর থেকেই ভাবাদিঘি সমস্যার কারণে শ্লথ হয়ে যায় প্রকল্পের কাজ। শেষ পর্যন্ত অত্যন্ত ধীর গতিতে হলেও চলতি বছরের গোড়াতেই ময়নাপুর থেকে জয়রামবাটি পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের কাজ শেষ হয়। নতুন পথে বড় গোপীনাথপুর ও জয়রামবাটি দু'টি স্টেশন তৈরি করা হয়। তারপরেই রেলের তরফে ঘোষণা করা হয় মা সারদার পবিত্র জন্মস্থান জয়রামবাটি পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু করা হবে।
এদিন কমিশন অফ রেলওয়ে সেফটির বিশেষ ট্রেন চালানো হয় সম্প্রসারিত ওই রেলপথে। জয়রামবাটি থেকে কামারপুকুর দূরত্ব ৫.১৯ কিলোমিটার। আর কামারপুকুর থেকে গোঘাট ৫.১ কিলোমিটার। এই রেলপথে ভাবাদিঘির জন্য আটকে থাকা কাজ বাকি। যা এক বছরের মধ্যেই শেষ করা সম্ভব হবে বলে আজ ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। আগামী মার্চেই হাওড়া থেকে সরাসরি বিষ্ণুপুর পৌঁছে যাওয়া যাবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন রেলের আধিকারিকরা। এই রেলপথ তৈরি হলে সরাসরি বিবেকানন্দের বেলুড়মঠ, রামকৃষ্ণের জন্মভূমি কামারপুকুর ও মা সারদার জন্মভূমি জয়রামবাটি ও মল্লভূমের রাজধানী বিষ্ণুপুরকে একই সূত্রে গাঁথা হবে রেলপথে।