দীপঙ্কর মণ্ডল: সরকারি পলিটেকনিক কলেজে ছাত্রীকে যৌন হেনস্তার অভিযোগ সত্য, তেমনটাই জানালো আইসিসির (ইন্টার্নাল কমপ্লেন কমিটি) রিপোর্ট। ৮ অক্টোবর নিগৃহীতা ছাত্রী কলেজ ও কারিগরি শিক্ষা দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জানান। তদন্ত করে পশ্চিম বর্ধমানের নজরুল সেন্টেনারি পলিটেকনিক কলেজের (Nazrul Centenary Polytechnic) ছাত্রীকে যৌন হেনস্তার প্রমাণ পেয়েছেন বলেই জানিয়েছেন কমিটির সদস্যরা। অভিযুক্ত শিক্ষক অভিষেক বেরার শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে রিপোর্টে।
২০১৮ সালে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভরতি হন ওই ছাত্রী। অভিযোগ শুরু থেকেই তাঁকে ‘টার্গেট’ করেন শিক্ষক অভিষেক বেরা। ছাত্রীর কথায়, “কলেজে নানা অছিলায় আমাকে স্পর্শ করেন স্যর। খুব খারাপ ভাবে তাকান। যৌনতার কথা বলেন। শুরুতে আমি হস্টেলে থাকতাম। রাতে একদিন ফোন করে প্রেমের প্রস্তাব দেন। দিদিদের পরামর্শে স্যারের নম্বর আমি ব্লক করে দিই। ভয়ে আমি হস্টেল ছেড়ে মেসে থাকতে শুরু করি।” কিন্তু যৌন হেনস্তা বন্ধ হয়নি। সেমিস্টার পরীক্ষায় শিক্ষক অভিষেক বেরা অসভ্যতা করতে থাকেন। নিজের ক্ষমতা জাহির করে ওই ছাত্রীকে লাস্ট বেঞ্চে বসতে বাধ্য করতেন। পরীক্ষা চলাকালীন চটুল কথা বলতেন। এমনকি তৃতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষা চলাকালীন ছাত্রীর পাশে বসে নানা অ্যাঙ্গেলে মোবাইলে ছবিও তোলেন ওই শিক্ষক। এরপর এক পর্যায়ে বিষয়টি সবাইকে জানাতে বাধ্য হন ওই পড়ুয়া। কলেজের পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষা দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জানান। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে শুরু হয় তদন্ত। সত্য প্রমাণিত হয় ছাত্রীর অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: পুজোর আগে লোকাল ট্রেন চলা কার্যত অসম্ভব! রেলের চিঠিতে এখনও সাড়া দেয়নি রাজ্য]
ছাত্রীর বাবার কথায়, “আমরা দোষী শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। উনি আর কখনও এমন অসভ্যতা করার সাহস না পান তা নিশ্চিত করুক দপ্তর।” ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রীর যৌন হেনস্তায় কড়া নিন্দা করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। দোষী শিক্ষকের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে রাজ্যের শাসক দলের ছাত্র সংগঠন। পলিটেকনিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত টিএমসিপির রাজ্য কমিটির সদস্য তন্ময় ঘোষ বলেন, “ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। একইসঙ্গে দোষী শিক্ষকের কঠোর শাস্তি দাবি করছি।” পলিটেকনিকের এক মহিলা অধ্যাপক জানিয়েছেন, “আমি নিজে এমন জঘন্য ঘটনার ভুক্তভোগী। বারুইপুর এবং জলপাইগুড়ি পলিটেকনিকে একই কাণ্ড হয়েছে। দোষী প্রমাণিত হওয়ার পর বারুইপুরে দোষী ব্যক্তিকে শুধু বদলি করা হয়। জলপাইগুড়িতে তাও হয়নি। উলটে পরে ওই শিক্ষকের পদোন্নতি হয়েছে।”