রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: ডুয়ার্সের তো বটেই, এ রাজ্যে পর্যটন মানচিত্রে বক্সা ব্র্যাঘ্র প্রকল্পের গুরত্ব অপরিসীম। বিস্তীর্ণ বনাঞ্চলের মাঝে আবার স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মৃতি বিজরিত বক্সা দূর্গ। ফলে বছরভর পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই থাকে। বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারের রাজাভাতখাওয়ায় বক্সা ব্র্যাঘ্র প্রকল্পের গেটে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন শাসকদলের কর্মী-সমর্থকরা। তাঁদের অভিযোগ, স্বাধীনতা দিবসেও টিকিট কেটে ভিতরে ঢুকতে হয়েছে দর্শকদের। তাই বক্সা দুর্গে গিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের শ্রদ্ধা জানাতে পারেননি বহু বেকার যুবক-যুবতী। স্বাধীনতা দিবসে টাকা নেওয়া যাবে না, এমন কোনও নির্দেশিকা আসেনি। পালটা দাবি কর্তৃপক্ষের।
[ মাছের ভেড়ির দখল ঘিরে রণক্ষেত্র হাড়োয়া, গুলিবিদ্ধ দুই]
বক্সা ব্র্যাঘ্র প্রকল্পের বেশিরভাগটাই আলিপুরদুয়ার জেলার কালচিনি ব্লকে। বাকিটা কুমারগঞ্জে। এই ব্র্যাঘ্র প্রকল্পের অন্তগর্ত ৭৬৪ বর্গকিমি এলাকা জুডে় গভীর জঙ্গল। এই জঙ্গলে ভিতরে পাহাড়ের মাথায় ঐতিহাসিক বক্সা দূর্গ বা বক্সা ফোর্ট। পরাধীন ভারতে এই দূর্গটিকে জেলখানা হিসেবে ব্যবহার করত ব্রিটিশ সরকার। বহু বিপ্লবীকে বন্দী করে রাখা হয়েছিল বক্সা ফোর্টে। বস্তুত, ভারতে এসে এই নির্জন দূর্গে আশ্রয় নিয়েছিলেন দলাই লামা ও তাঁর অনুগামীরাও। এখন অবশ্য দুর্গটির ভগ্নপ্রায় দশা। কিন্তু, তাতে কী! বক্সা দুর্গের ঐতিহাসিক গুরুত্ব তো আর কমে যায়নি। স্রেফ এই দূর্গটিকে দেখার জন্যই এখনও পর্যটকরা আসেন আলিপুরদুয়ারের বক্সা ব্র্যাঘ্র প্রকল্পে।
আলিপুরদুয়ারের রাজভাতখাওয়া এলাকায় একটি গেট বসিয়েছে বনদপ্তর। পাশে টিকিট কাউন্টার। টিকিট কেটে জঙ্গলের ভিতরে ঢুকতে হয় পর্যটকদের। বৃহস্পতিবার সকালে সেই গেটেই তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন শাসকদলের প্রায় একশোজন কর্মী-সমর্থক। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজভাতখাওয়া আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক গৌরাঙ্গ ভট্টাচার্যর দাবি, বছরের অন্য সময়ে টিকিট কাটতে হয় ঠিকই। কিন্তু, স্বাধীনতা দিবসে গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকতে পারেন সকলেই। টিকিট লাগে না। সেদিন এলাকার বহু যুবক-যুবতী বক্সা দুর্গে গিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের শ্রদ্ধা জানিয়ে আসেন। কিন্তু, এবছর স্বাধীনতা দিবসে, অর্থাৎ বুধবার পর্যটকদের কাছ থেকে বেআইনিভাবে টাকা নিয়েছে বনদপ্তর। ফলে রাজাভাতখাওয়ার বহু বেকার-বেকার যুবতী বক্সা ফোর্টে গিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের শ্রদ্ধা জানাতে পারেননি। বস্তুত, বনদপ্তরের ওই গেটটিকেই বেআইনি বলে দাবি করেছেন শাসকদলের স্থানীয় নেতারা। যদিও বেআইনিভাবে টাকা আদায়ের অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন বক্সা ব্র্যাঘ্র প্রকল্পের অধিকর্তা শুভঙ্কর সেনগুপ্ত। তিনি জানিয়েছেন, সরকারি নির্দেশে পর্যটকদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়। স্বাধীনতা দিবসে টাকা নেওয়া যাবে না, এমন কোনও নির্দেশিকা আসেনি। যাঁরা বনদপ্তরের অফিসে তালা ঝুলিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
[অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে এবার প্রসূতি ও শিশুদের জন্য ছ’দিনই গোটা ডিম]
The post স্বাধীনতা দিবসে কীসের টিকিট? বক্সা ব্র্যাঘ্র প্রকল্পের গেটে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ appeared first on Sangbad Pratidin.
