shono
Advertisement
Siliguri

ভবানী পাঠক-দেবী চৌধুরানির গোপন আস্তানায় বনদুর্গার পুজো, বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গলে ভক্ত সমাগম

শিলিগুড়ি সংলগ্ন বৈকুণ্ঠপুর অভয়ারণ্যের ভিতরে এই মন্দির।
Published By: Suhrid DasPosted: 06:10 PM Jan 15, 2025Updated: 08:21 PM Jan 15, 2025

অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: সবুজে মোড়া ঘন জঙ্গল। মধ্যে মাটির এবড়োখেবড়ো পথ। সেই পথ ধরেই গভীর জঙ্গলে পূজিত হন মা বনদুর্গা। দুর্গাপুজোর মতো চারদিন পুজো হয় না। একদিনের পুজোতেই মেতে ওঠেন বাসিন্দারা। রাতভর পুজোয় থাকেন ভক্তরা। আবার মেলাও বসে সেখানে। এই পুজোর সঙ্গে জড়িত রয়েছে ইতিহাসও। শিলিগুড়ি সংলগ্ন বৈকুণ্ঠপুর অভয়ারণ্যে গভীর জঙ্গলের ভিতরে অবস্থিত এই মন্দির।

Advertisement

একসময় ভবানী পাঠক ও দেবী চৌধুরানির গোপন আস্তানা ছিল এই মন্দির। ডাকাতির আগে ওই মন্দিরে পুজো দিয়েই বেরোতেন দেবী চৌধুরানি। আর সেই থেকেই প্রতি বছর পৌষ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পুজো হয় মন্দিরে। এবার মকর সংক্রান্তির ঠিক আগের দিনে পূজিতা হলেন মা বনদূর্গা। শিলিগুড়ি শহর লাগোয়া ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি বিধানসভার অন্তর্গত বৈকুণ্ঠপুর গভীর জঙ্গলের প্রায় আড়াই কিলোমিটার ভিতরে গেলে দেখা মিলবে ওই বনদূর্গা মন্দিরের।

বছরের অন্যান্য সময় সেখানে জনমানবশূন্য থাকলেও এই পুজোর দিন লোক সমাগমে ভরে যায়। তবে এই মন্দির তৈরি হওয়ার নেপথ্যে রয়েছে ইতিহাস। কথিত আছে, এখনকার বনদুর্গা মন্দির সেসময় ডাকাত সর্দার ভবানী পাঠক ও দেবী চৌধুরানী গোপন আস্তানা ছিল। ইতিহাসে থেকে শোনা গিয়েছে দেবী চৌধুরানি নাকি নৌকা করে করতোয়া নদী হয়ে সেখানে গিয়ে পুজো করতেন। তখন থেকেই শুরু হয় এই পুজোর। প্রথমদিকে অবশ্য ওই এলাকা ঠুনঠুনিয়া গ্রাম নামে পরিচিত ছিল। আর ঠুনঠুনি মা বলে এখানে দেবী পুজিতা হতেন। তবে জানা গিয়েছে, বর্তমানে এই মন্দির বনদুর্গা বলেই সকলের কাছে পরিচিত হয়েছে। জানা গিয়েছে, প্রথমে স্থানীয় রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষরা ঠুনঠুনির পুজো নামে মন্দিরে পুজোর শুরু করেন।

পরবর্তীতে ৪৪ বছর ধরে একটি নতুন কমিটি গঠন করে মা বনদুর্গা পুজোর আয়োজন করে আসছেন। এখন বনদপ্তর, প্রশাসন ও পুলিশ ওই পুজোর আয়োজনে সহযোগিতা করে। এই বনদুর্গা পুজো দেখতে জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, কোচবিহার এমনকি পার্শ্ববর্তী রাজ্য অসম থেকেও প্রচুর ভক্ত ভিড় জমান। শুধু এই দুই দিন নয়, সারা বছর পূর্ণিমাতে ছোট করে পুজো হয় মন্দিরে।

পুজো কমিটির সম্পাদক রাজু সাহা বলেন, "প্রতি বছর রাতে প্রচুর পূণ‌্যার্থীর সমাগম হয়। তবে ভক্তবৃন্দদের নিরাপত্তার জন্য সোম ও মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত পুজো চলবে।" মেলায় আগত মিঠুন রায় বলেন, "দূরদূরান্ত থেকে বহু সন্ন্যাসী এই পুজোয় অংশ নেন। আমরাও দল বেঁধে পুজো দিতে এসেছি।" মৌমিতা মৈত্র নামে এক ভক্ত বলেন, "শুনেছি মা খুব জাগ্রত। সমস্ত মনস্কামনা পূরণ হয়। সেজন্য এখানে আসা।" প্রসঙ্গত, এই মন্দিরে হাতিরাও ঢুকে পড়ে। তাই পুজোর সময় জঙ্গল পাহারা দেন বনকর্মীরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • গভীর জঙ্গলে পূজিত হন মা বনদুর্গা।
  • একদিনের পুজোতেই মেতে ওঠেন বাসিন্দারা।
  • রাতভর পুজোয় থাকেন ভক্তরা।
Advertisement