রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার: গর্ভবতী মহিলাদের জীবনযাপন, চিকিৎসা-সহ একাধিক জরুরি বিষয়ে নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন জেলাশাসক। আর সেই নির্দেশ মেনেই কাজ শুরু করলেন আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) কালচিনির বিডিও প্রশান্ত বর্মন। আশা কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে এলাকার গর্ভবতী মহিলাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাঁদের খোঁজ নিলেন। মাতৃত্বকালীন চিকিৎসা নিয়ে সতর্ক করলেন তাঁদের। আর বিডিওর এই উদ্যোগে মুগ্ধ এলাকাবাসী। এভাবে আগে প্রশাসনের তরফে কখনও তাঁদের কাছে কেউ আসেনি, বলছেন গর্ভবতী মায়েরা।
দুয়ারে বিডিও (BDO)। জেলাশাসকের নির্দেশ মেনে মাতৃত্বকালীন মৃত্যু ঠেকাতে গর্ভবতী মায়েদের দুয়ারে যাচ্ছেন কালচিনির বিডিও প্রশান্ত বর্মন। নিজেই বাইক চালিয়ে পিছনে আশা কর্মীকে বসিয়ে গর্ভবতী মায়েদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন বিডিও। চা বাগান অধ্যুষিত কালচিনি (Kalchini) ব্লকে এমন উদ্যোগে খুশি বিভিন্ন মহল। উল্লেখ্য, মূলত চা বাগানের আদিবাসী অধ্যুষিত ব্লক জেলার কালচিনি ব্লক। চা বাগান (Tea Garden), বনাঞ্চল আর দুর্গম বক্সা পাহাড়ে তৈরি এই ব্লকে স্বাভাবিক ভাবেই মাতৃত্বকালীন চিকিৎসা বিষয়ে সচেতনতা অন্যান্য ব্লকের তুলনায় অনেক কম। আর সেই অসচেতনতার বলিও হন মায়েরা। তা ঠেকাতেই এমন উদ্যোগ বিডিও প্রশান্ত বর্মনের।
[আরও পড়ুন: DA ধর্মঘটে শামিল হওয়ার জের, রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষকদের ঢুকতেই দিলেন না অভিভাবকরা!]
জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই ব্লকের ২০০ জন গর্ভবতী মায়েদের তালিকা তৈরি করেছে কালচিনি ব্লক প্রশাসন। সেই তালিকা অনুযায়ী, গর্ভবতী মায়েদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন বিডিও। শনিবার কালচিনি চা বাগানের দুই গর্ভবতী মায়েদের বাড়ি যান বিডিও প্রশান্ত বর্মন। তাঁদের দাওয়ায় বসে সমস্ত মেডিক্যাল রিপোর্টও (Medical Report) দেখেন। তাঁর কথায়, “জেলা প্রশাসনের নির্দেশেই আমি গর্ভবতী মায়েদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছি। বাড়িতে গিয়ে সেই মায়ের প্রসবের দিন কবে, সেদিন কীভাবে তিনি হাসপাতালে আসবেন বা বাড়িতে হাতুড়ে চিকিৎসক যেন না দেখান, আয়রন ট্যাবলেট খাচ্ছেন কিনা এসব নানান জিনিস খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য মাতৃত্বকালীন মৃত্যু ঠেকানো। চা বলয়ে মায়েদের সচেতনতা একটু কম থাকে। সেই কারণে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
[আরও পড়ুন: ফিল্ম ফেয়ারে সেরা মিঠুন চক্রবর্তী, নজর কাড়ল ‘দোস্তজী’, ‘বল্লভপুরের রূপকথা’, দেখে নিন পুরো তালিকা]
আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক (DM) সুরেন্দ্র কুমার মীনা জানিয়েছেন, প্রতি শনিবার প্রত্যেক ব্লকে ব্লকের গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্য নিয়ে বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে ‘হাই রিস্ক’ মায়েদের শনাক্ত করা হয়। অর্থাৎ যাদের হিমোগ্লোবিন কম বা অন্য কোনও সমস্যা রয়েছে, তাঁদের চিহ্নিত করা হয়। আর তারপর সেই সব মায়েদের বিশেষ নজর দেওয়া হয়। প্রত্যেক ব্লকেই বিডিওদের এই নির্দেশ দেওয়া রয়েছে। এদিন জেলাশাসক সুরেন্দ্র কুমার মীনা বলেন, “নির্দেশমতো কালচিনির বিডিও গর্ভবতী মায়েদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। খুব ভাল করছেন উনি। আমরা মাতৃ মৃত্যু ঠেকাতে বিভিন্ন ব্যবস্থা নিচ্ছি।”