শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: নভেম্বর পড়লেই নেমে আসছে আসছে ওরা। গত দু’বছর ধরে কার্যত নিয়ম করে পাহাড় থেকে ডুয়ার্সের সমতলে নেমে আসছে ভল্লুকের (Bear) দল। কারণ খুঁজতে ভল্লুক গণনার পাশাপাশি এবার ভল্লুকের গলায় রেডিও কলার পরানোর পরিকল্পনা নিল বনদপ্তর। পাশাপাশি ডুয়ার্সের জঙ্গলের বাইসনের গলাতেও পরানো হবে রেডিও কলার। পাহাড় ও সমতলের এই দুই প্রাণীর গতিবিধির উপর নজর রাখতেই এই সিদ্ধান্ত। যা কার্যকর করতে জার্মানির একটি সংস্থার প্রযুক্তিগত সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
ডুয়ার্সের জঙ্গলে রেডিও কলার প্রযুক্তির ব্যবহার নতুন নয়। এর আগে একাধিক সংখ্যায় হাতি এবং চিতাবাঘের গলায় পরানো হয়েছে রেডিও কলার। তাতে হাতি ও চিতাবাঘের গতিবিধি বুঝতে অনেকটাই সুবিধা হয়েছে বলে দাবি বনদপ্তরের। এবার ভল্লুক এবং বাইসনের গতিবিধির উপর নজর রাখতে নতুন করে এই দুই প্রাণীর গলায় রেডিও কলার পরানোর পরিকল্পনা। জানা গিয়েছে, রেডিও কলার পরানোর পর প্রাণীটি কোথায় রয়েছে। কোথায় যাচ্ছে। গতিবিধির সমস্ত তথ্য স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সংকেত আকারে পৌঁছে যাবে বনদপ্তরের কন্ট্রোল রুমে। তাতে প্রাণীটি যদি জন্য জঙ্গল থেকে বেরিয়ে লোকালয়ের দিকে পা বাড়ায় সে তথ্যও পৌঁছে যাবে। আগাম পদক্ষেপ নিতে সুবিধা হবে।
[আরও পড়ুন: মরিচঝাঁপি কাণ্ড নিয়ে মাঠে বিজেপি, পঞ্চায়েতের আগে উদ্বাস্তু দরদী গেরুয়া শিবির?]
২০২১ সালের নভেম্বর মাসে ডুয়ার্সের সমতলে আচমকা আগমন ঘটে ভল্লুকের। ভল্লুকের হামলায় চা বাগানের একজন বাসিন্দার মৃত্যু হয়। জনরোষে প্রাণ যায় হিমালয়ান ব্ল্যাক বিয়ার প্রজাতির একটি ভল্লুকের। পাশাপাশি সেই বছর ১৩টি ভল্লুককে উদ্ধার করে জঙ্গলে ছেড়ে দেন বনকর্মীরা। এই বছরও একই সময়ে সমতল থেকে ৮টি ভল্লুক উদ্ধার হয়। ভল্লুকের আচমকা আগমনের কারণ খুঁজতে এই বছর “বিয়ার কোরাল” পদ্ধতির মাধ্যমে ভল্লুক গণনা চালায় বনদপ্তর। পাশাপাশি ভল্লুকের গতিবিধির উপর নজর রাখতে রেডিও কলার পড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়।
গরুমারা বন্যপ্রাণী বিভাগের সহকারী বনাধিকারিক জন্মেজয় পাল জানান, ভল্লুকের পাশাপাশি বাইসনের গলাতেও রেডিও কলার পড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে জার্মানির একটি সংস্থার সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। কীভাবে ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু করে ভল্লুক ও বাইসনের গলায় রেডিও কলার পড়ানো হবে এই নিয়ে সোম ও মঙ্গল দু’দিন গরুমারা জাতীয় উদ্যানের মূর্তি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বনকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ শিবিরে গরুমারা ও কার্শিয়াং বনবিভাগের কর্মী এবং আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন জার্মান সংস্থার প্রতিনিধিরাও। পরীক্ষামূলক ভাবে আগামী মার্চ মাসে তিনটি ভল্লুক ও তিনটি বাইসনের গলায় রেডিও কলার পড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।