রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে আগামিকাল অর্থাৎ বুধবারই দিঘার কনভেনশন সেন্টারে শুরু হচ্ছে বিশ্ববাংলা বাণিজ্য সম্মেলন। যেখানে উপস্থিত থাকবেন দেশ-বিদেশের শিল্পপতিরা। সেই কারণে ইতিমধ্যেই সাজিয়ে তোলা হয়েছে কনভেনশন সেন্টার। ইতিমধ্যেই সম্মেলনে যোগ দিতে দিঘায় পৌঁছেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাণিজ্য সম্মেলনকে কেন্দ্র সৈকত শহর দিঘায় বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। দিঘায় ওয়েলকাম গেট এবং ওড়িশা বর্ডারের কাছে নিরাপত্তার জন্যে পর্যটক এবং সাধারণ গাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। এদিকে নিউ দিঘার কনভেনশন সেন্টার ও যাত্রানালার আশপাশেও সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সোমবার জেলা প্রশাসনের আধিকারিক ও পুলিশ আধিকারিকরা কনভেনশন সেন্টারে চূড়ান্ত প্রস্তুতির কাজ ঘুরে দেখেন। যাত্রানালা ঘাটে যেখানে সন্ধে বেলা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হওয়ার কথা, সেই জায়গাও ঘুরে দেখেন তাঁরা। সেখানে সর্বক্ষণের জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আগামিকাল থেকে দু’দিন ‘বিজনেস কনক্লেভ’ হবে কনভেনশন সেন্টারে। তাঁর আগেই সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিঘায় উপস্থিত হয়েছেন। সঙ্গে ছিলেন কাঁথির সাংসদ তথা দিঘা-শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান শিশির অধিকারী, তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী, সভাধিপতি দেবব্রত দাস, জেলা শাসক পার্থ ঘোষ, পুলিশ সুপার ভি সোলেমন নিশাকুমার প্রমুখ। কাঁথি মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অভিষেক চক্রবর্তী বলেন, “সপ্তাহ শেষে দিঘায় পর্যটকদের ভিড় বেড়ে যায়। তাই শিল্প সম্মেলনের আগে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য দিঘা শহর সহ সৈকতজুড়ে কড়া পুলিশি নজরদারি শুরু হয়েছে।” রাজ্যে শিল্পে বিনিয়োগের পরিস্থিতি যে রয়েছে, তা তুলে ধরতেই ২০১৫ সাল থেকে বাণিজ্য সম্মেলন শুরু করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
গত বছর পাহাড়ে হয়েছিল ‘হিল বিজনেস সামিট’। এবার দিঘার সমুদ্র সৈকতে নতুন তৈরি হওয়া কনভেনশন সেন্টারে হতে চলেছে ‘বিজনেস কনক্লেভ’। এবার ১৮টি দেশের রাষ্ট্রদূত, শিল্পোদ্যোগী এবং বণিকসভার প্রতিনিধিরা হাজির হচ্ছেন বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর। তাঁদের আপ্যায়নের জন্য আয়োজনের কোনও ত্রুটি রাখা হচ্ছে না। শুধু বিদেশি প্রতিনিধিরা নন, দেশের বিভিন্ন শিল্পসংস্থার প্রতিনিধিরাও হাজির হবেন ওই কনক্লেভে। তাঁদের সামনে বদলে যাওয়া বাংলার অর্থনীতি এবং শিল্পে বিনিয়োগের পক্ষে সুস্থ পরিবেশের কথা তুলে ধরা হবে। দিঘায় অত্যাধুনিক কনভেনশন সেন্টার তৈরি করেছে কেএমডিএ। আগষ্ট মাসে যার উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী । এই সেন্টারে ৯৭০ জন বসতে পারবেন। কনভেনশন সেন্টার লাগোয়া হোটেলও আছে। সেখানে ৬৫টি ঘর রয়েছে। এটি চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হবে ফোর বা ফাইভ স্টার সুবিধাসম্পন্ন হোটেল সংস্থাকে। এ জন্য ইতিমধ্যে কেএমডিএ’র পক্ষ থেকে বিশিষ্ট হোটেল সংস্থাগুলির সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। এই কনভেনশন সেন্টার এবং হোটেলকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে চাইছে রাজ্য সরকার। এর অন্যতম উদ্দেশ্য,বাংলার পর্যটন শিল্পকে আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছে দেওয়া। দেশ-বিদেশের শিল্প প্রতিনিধিদের দিঘায় নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়ি, ভলভো বাস এবং ট্রেনের বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। তৈরি হয়েছে হেলিপ্যাডও।
১১ ডিসেম্বর, বুধবার বেলা ১২টায় লাঞ্চের পর আড়াইটে থেকে শুরু হবে বাণিজ্য সম্মেলন। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও বিশিষ্ট শিল্পপতি ও শিল্প সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। বিকেল পাঁচটায় যাত্রানালার মাঠে তৈরি হওয়া সাংস্কৃতিক মঞ্চে হবে সঙ্গীতানুষ্ঠান। পরের দিন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বি টু বি, জি টু বিতে অংশ নেবেন শিল্পসংস্থাগুলির প্রতিনিধিরা। পরিকাঠামো, আইটি, পর্যটন, নগরায়ন সেক্টর নিয়ে কনক্লেভে আলোচনা হবে। কয়েকটি মউ-ও স্বাক্ষরিত হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। বেলা দু’টোয় হবে সমাপ্তি অনুষ্ঠান।
দেখুন ভিডিও:
[আরও পড়ুন: বেহাল জাতীয় সড়ক, প্রতিবাদে দুর্গাপুরের রাস্তায় পাইপ ফেলে অবরোধ]
The post প্রথমবার সৈকত শহরে বাণিজ্য সম্মেলন, সেজে উঠছে দিঘার কনভেনশন সেন্টার appeared first on Sangbad Pratidin.
