সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: চাকরিহারা শিক্ষকদের সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপের কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রসঙ্গে রায়ের বেশ কয়েকটি অংশ তুলে ধরেছেন তিনি। সেইসঙ্গে শীর্ষ আদালতের কাছে কিছু প্রশ্নও তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। সেসব মন্তব্য, প্রশ্নে বিচারব্যবস্থাকেই অপমান করা হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে এবার দেশের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখলেন বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদের আবেদন, বিচারব্যবস্থা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের জন্য স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করা হোক। এছাড়া রাজ্যের তহবিলে আর্থিক সূত্র নিয়েও তদন্ত হোক।
প্রধান বিচারপতিকে চিঠি জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর।
সোমবার নেতাজি ইন্ডোরের এই সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ''আমি কেস স্টাডি (চাকরিহারা শিক্ষকদের পরিসংখ্যান) করে দেখছিলাম। এখনও সুপ্রিম কোর্ট যোগ্য ও অযোগ্য বলতে পারেনি। চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা নেই। চাকরি কেড়ে নেবেন না। মুখ ও মুখোশের তফাৎ বুঝতে হবে।'' এরপর মুখ্যমন্ত্রীর আরও বক্তব্য, ''২০২৪ সালে নির্বাচনের সময় দুর্গাপুরে মিছিল করছিলাম। সুপ্রিম কোর্টে আমরা আপিল করেছিলাম, হাই কোর্টের রায়টাকে স্থগিতাদেশ দিতে। বিচারপতি চন্দ্রচূড় তা করে দেন। আরেকজন প্রধান বিচারপতি এলেন। যোগ্য, অযোগ্য না দেখে প্যানেল বাতিল করে দিলেন! এই রায়ের পিছনে কোনও খেলা নেই তো?'' যতদিন না নতুন নিয়োগ সম্পন্ন হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত চাকরিহারা 'যোগ্য' শিক্ষকরা কাজ করুক, এই আবেদন নিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
মুখ্যমন্ত্রীর এসব মন্তব্যের পরই দেশের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নাকে চিঠি লেখেন পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ। চিঠিতে তাঁর অভিযোগ, শিক্ষা দুর্নীতি ঢাকতে, 'অযোগ্য'দের বাঁচাতে মুখ্যমন্ত্রী বিচারব্যবস্থাকে কাঠগড়ায় তুলছেন, যা মোটেই কাম্য নয়। সুপ্রিম কোর্টের কাছে সাংসদের তিনদফা আবেদন, এনিয়ে শীর্ষ আদালত স্বতঃপ্রণোদিত মামলা হোক। এছাড়া রাজ্যের কোষাগারে কোথা থেকে অর্থ আসছে, তা নিয়ে তদন্ত করুক সুপ্রিম কোর্ট। তাঁরও আরও দাবি, যে বা যাঁরা বিচারব্যবস্থাকে টানা আক্রমণ করে চলেছেন, তাঁদের যথাযথ সাজার ব্যবস্থা করা হোক। সেইসঙ্গে জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর আরও অভিযোগ, তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা প্রায়শয়ই বিচারপতি ও বিচারব্যবস্থা নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করে থাকেন। তাঁদের যথাযোগ্য শাস্তি যাতে হয়, সেদিক শীর্ষ আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন পুরুলিয়ার সাংসদ।